• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ব্যাটারি চালিত অবৈধ অটোরিকশা আটকের পর ছেড়ে দিলেন মেয়র

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ২১:০৭, ৪ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
ব্যাটারি চালিত অবৈধ অটোরিকশা আটকের পর ছেড়ে দিলেন মেয়র

রিকশা শ্রমিকদের বিক্ষোভে এক মাসে পেছালো টাঙ্গাইলে ব্যাটারি চালিত অবৈধ রিকশা জব্দের অভিযান। ব্যাটারি চালিত রিকশার বেপরোয়া চলাচলে নাকাল টাঙ্গাইল পৌরবাসী। এসব রিকশার দাপটে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজটের। অনেকটা বাধ্য হয়েই ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা জব্দের অভিযোগ শুরু করে পৌর কৃর্তপক্ষ। তবে সেই অভিযান ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করতে বাধ্য হয় পৌরসভা মেয়র।   

সম্প্রতি টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা ও জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় সকলের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয় শহরে যানজট নিরসনে অবৈধ যেসকল ব্যাটারি চালিত রিকশা রয়েছে তা জব্দ করা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকে শহরে যানজট নিরসনে পৌরসভা কর্তৃক অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা আটক করে। তবে রিকশা শ্রমিকরা এনিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষোভ করেছে। পরে জেলা রিকশা শ্রমিক ও ইজিবাইক সমিতির নেতাকর্মীরা টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়রের সাথে আলোচনায় বসেন। আলোচনা শেষে মানবিক দিক বিবেচনায় ঈদের আগ পর্যন্ত শহরে অবৈধ অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেন এবং ঈদের পরে সকল অবৈধ অটোরিকশার বৈধ কাগজপত্র না করা হলে পুনরায় রিকশাগুলো জব্দ করা হবে বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর।

জানা যায়, সম্প্রতি টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা ও জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় সকলের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয় শহরে যানজট নিরসনে অবৈধ যেসকল ব্যাটারি চালিত রিকশা রয়েছে তা জব্দ করা। এছাড়াও কয়েকদিন আগে শহরের বিভিন্ন এলাকায় টানা তিনদিন অবৈধ রিকশা বন্ধে মাইকিং করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন পৌর কর্তৃপক্ষ। সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মেয়রের নির্দেশনায় প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা আটক করে টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে রাখা হয়। এসময় রিকশা চালকরা ক্ষুব্ধ হয়ে শহরের নিরালা মোড়, শহীদ মিনার ও পৌসভার সামনে বিক্ষোভ করে। পরে এ নিয়ে জেলা রিকশা শ্রমিক ও ইজিবাইক সমিতির নেতাকর্মীরা মেয়রের সাথে বিষয়টি সমাধানের জন্য আলোচনায় বসেন।

বিক্ষুদ্ধ কয়েকজনর রিকশা চালক বলেন, পৌরসভার মেয়র ও অন্যান্য কর্মকর্তারা মিলে আমাদের কাছ থেকে জন প্রতি ২০ হাজার টাকা রিকশার বৈধতা এবং লাইসেন্স বাবদ ৭ হাজার টাকা দাবি করেছে। আমরা গরিব মানুষ দিন আনি দিন খাই। আমাদের পক্ষে এতো টাকা দেওয়া সম্ভব না। আমরা দিনে কাজ করে যা পাই তাই দিয়ে বাড়িতে খাবার নিয়ে যাই। এভাবে যদি আমাদের উপর অমানুসিক নির্যাতন করে তাহলে আমার কোথায় যাবো। 

এমপি ছোট মনিসহ আরো অনেকেই বলেছিল আমরা গরীব মানুষ। আমাদের যতটুকু কম খরচে কাগজপত্র ও লাইসেন্স দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করা। কিন্তু মেয়র ও তার লোকজন তা শুনছে না। আমরা টাকা দিতে পারি নাই বলে আজ আমাদের গাড়ি আটক করেছে। আর অন্য যারা অবৈধভাবে অটোরিকশা চালাচ্ছে তাদের কেন আটক করছে না। তারা পৌরসভার লোকজনকে টাকা দেয় বলে তাদের গাড়ি ধরবে না। এটা আমরা মেনে নেবো না। প্রয়োজনে আন্দোলন করবো। এভাবে আমরা আর চলতে পারছি না।

এছাড়াও কয়েকজন রিকশা চালক অভিযোগ করে বলেন, আমরা সকালে গাড়ি নিয়ে বের হই। আর রাস্তায় বের হলেই চিহ্নিত কিছু লোক জেলা রিকশা শ্রমিক ও ইজিবাইক সমিতির কল্যাণ তহবিল নামে ২০ টাকা করে চাঁদা তুলেন। কিন্তু আমরা তো এ সমিতির অন্তর্ভুক্ত না। তাহলে তারা কিভাবে আমাদের কাছ থেকে টাকা নেয়। 

এবিষয়ে জেলা রিকশা শ্রমিক ও ইজিবাইক সমিতির উপদেষ্টা এডভোকেট আলী ইমাম তপন তেমন কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

রিকশা আটকের ঘটনায় জেলা রিকশা শ্রমিক ও ইজিবাইক সমিতির উপদেষ্টা এডভোকেট আলী ইমাম তপন বলেন, সোমবার সকালে রিকশা শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আমাদের সংগঠনের কার্যালয়ে গিয়ে জানায় তাদের রিকশাগুলো আটক করা হয়েছে। পৌরসভার মেয়রের নির্দেশনায় রিকশাগুলো আটক করা হয়েছে। পরে আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে মেয়রের সাথে এ সমস্যার সমাধানের জন্য আলোচনা করি। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, মানবিক দিক বিবেচনায় এই গরীব মানুষদের পরিবারের কথা চিন্তা করে ঈদ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। ঈদের পরে যদি কোন রিকশা অবৈধ থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর বলেন, শহরের যানজট প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। আমি সর্বদা চেষ্টা করে যাচ্ছি শহরের যানজট নিরসন কিভাবে করা যায়। এ নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা ও সমন্বয় কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে সকল অবৈধ যানবাহন গুলো আছে তা জব্দ করা। পরবর্তীতে আমরা মাইকিং করেছি যাতে অবৈধ রিকশাগুলো বৈধ করতে পারে। কিন্তু এতোকিছুর পরও তারা আমাদের কথা শুনেননি। তাই বাধ্য হয়ে এবং যানজট নিরসনে সকাল থেকে কিছু অটোরিকশা আটক করা হয়। তবে তারা আমাদের নামে যে সকল অভিযোগ করেছেন তা সঠিক না। গত কয়েকদিনে অনেক অবৈধ অটোরিকশা তাদের বৈধ কাগজপত্র করেছে। তারা যে টাকায় করেছে বাকিদেরও সেই পরিমাণ টাকায় করতে হবে। এখানে বাড়তি টাকা নেওয়ার কোন প্রশ্ন আসে না। তবে আমরা একটি একটি করে কাজ শুরু করেছি। সকলের সহযোগিতা পেলে অবৈধ যানবাহন গুলো জব্দ করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে যানজটমুক্ত একটি পৌর শহর উপহার দিতে পারবো। 

সামনে ঈদ, ঈদে গরীব মানুষরা যাতে চলতে পারে মানবিক দিক বিবেচনায় জেলা রিকশা শ্রমিক ও ইজিবাইক সমিতির নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনা করেছি। যদি তারা আমাদের কথা শুনেন এবং নিয়মনীতি রক্ষা করেন তাহলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের কাগজপত্র ও লাইসেন্স করে ফেলবে। তা না হলে ঈদের পর পুনরায় ব্যাটারি চালাতি অটোরিকশা জব্দ করা হবে।

বিভি/এআরএ/এইচএস

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2