• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

দূর্যোগ কবলিত সুন্দরবন এলাকা পরিদর্শনে জার্মানির ক্লাইমেট সেক্রেটারি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৩২, ৭ এপ্রিল ২০২২

আপডেট: ২০:৩২, ৭ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
দূর্যোগ কবলিত সুন্দরবন এলাকা পরিদর্শনে জার্মানির ক্লাইমেট সেক্রেটারি

দূর্যোগ কবলিত বাংলাদেশের সুন্দরবন উপকূলের মানুষ দুই বছর নৌকায় কাটানোর পর অবশেষে ঘরে ফিরলেও আরও বড় ধরনের দূর্যোগের মুখেপড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। এবার কোন দূর্যোগ আঘাত করলে সুন্দরবন ঘেঁষা এই মানুষ কোথায় আশ্রয় নেবে, কিভাবে তারা বেঁচে থাকবে, তাদের জানমাল কিভাবে রক্ষা হবে তার কোন নিশ্চয়তা মিলছে না। এজন্য তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারের জরুরী ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। সেই সাথে জার্মান সরকারও তাদের ভাগ্যের উন্নয়নে সাহায্য করতে প্রস্তুত।

বৃহস্পতিবার জার্মান সরকারের ক্লাইমেট সেক্রেটারি জেনিফার মর্গেন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম থ্রিয়েস্টারসহ ৫ সদস্যের টিম সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা পদ্মপুকুর ও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী দূর্যোগ কবলিত বন্যতলা এলাকা পরিদর্শনকালে সাংবাদিক ও উপস্থিত সুধীজনদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন। পাঁচ সদস্যের এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন জেনিফার মর্গেন। 

বন্যতলা অঞ্চলে ৪০ হাজারেরও বেশী মানুষের বসবাস উল্লেখ করে জেনিফার মর্গেন বলেন, তাদের জন্য রয়েছে একটি মাত্র আশ্রয়কেন্দ্র। অথচ প্রয়োজন কমপক্ষে ৩০টি। এখানে বেড়িবাঁধ ভঙ্গুর অবস্থায়। এই বাঁধ ভাঙে আবার মেরামত হয়। আবার দূর্যোগে জলোচ্ছ্বাসে তা ধ্বংস হয়ে যায়। এভাবেই এখানকার মানুষ বারবার বিপদের মুখে পড়ে স্থান ত্যাগে বাধ্য হয়েছে। কমপক্ষে ২৫ শতাংশ লোক এরই মধ্যে বাস্তুহারা হয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। তারা স্থান নিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা শহর অথবা খুলনা এলাকার বস্তিতে। 

সিডর, আইলা, বুলবুল, আম্পান ও ইয়াশ এর মতো ভয়াবহ দূর্যোগের মুখে বারবার ক্ষতবিক্ষত হওয়া মানুষ হারিয়েছে তাদের কর্মসংস্থান। বসতবাড়ি না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে কেউ গ্রাম ছেড়েছে আবার কেউ কেউ নৌকায় সংসার পেতেছে। এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। লোনা পানির দাপটে তারা খাবার পানির সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়েছে। গবাদিপশু পালনের সুযোগ নেই। বারবারই দূর্যোগ ও জলোচ্ছ্বাসের সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে তাদের। 

জেনিফার মর্গেন আরও বলেন, এখানকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। যোগাযোগ বলতে দুর্গম নদীখাল নৌকায় পারাপার। এমন অবস্থায় ঝড় জলোচ্ছ্বাস তাদের জীবন ও জীবিকাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। 

তিনি আরও বলেন, আমি সাতক্ষীরা শহরের ইটাগাছা কর্মকারপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় গৃহহারা মানুষের কাছে গিয়েছি। তারা বিভিন্ন এনজিও’র কাছ থেকে ঋণ নিয়ে কাজকর্ম করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। এদেরকেও পুনর্বাসন করা দরকার। 

জেনিফার মর্গেন বলেন, জার্মান সরকারের ক্লাইমেট সেক্রেটারি হিসেবে আমি আমার সরকারের মাধ্যমে জলবায়ূ পরিবর্তন জনিত ক্ষয়ক্ষতির শিকার এসব দূর্যোগপীড়িত মানুষের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। একই সাথে বাংলাদেশ সরকারকেও অনুরোধ জানাবো, এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে তাদেরকে বাঁচানোর জন্য সব ব্যবস্থা নিন। কারণ আরও দূর্যোগ ঝুঁকি এলে হয়তো এই এলাকাই মানচিত্র থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।

বিভি/এজেড/এইচএস

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2