কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা: আসামিরপক্ষে পিপি’র সংবাদ সম্মেলন

কাউন্সিলর রনির পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সরকারি পাবলিক প্রসিকিউটির (পিপি) এড. একে এম জাহাঙ্গীর হোসেন। এছাড়াও এড জাহাঙ্গীর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি।
বুধবার (১৮ মে) বরিশাল প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে তার পক্ষে সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে এড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘গেল রমজানের মাঝামাঝি সময়ে অপরিচিত একজন নারীর নম্বর থেকে কাউন্সিলরের মোবাইলে কল আসে। কল রিসিভ করলে ওই নারী কাউন্সিলর রনিকে বলেন, তার (ওই নারীর) বান্ধবী কাউন্সিলর রনিকে পছন্দ করেন এবং বিয়ে করতে চান। জবাবে এ বিষয়ে কাউন্সিলর রনি তার মা ও বড় ভাই সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানান। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় একপর্যায়ে ওই মেয়ে আত্মহত্যারও হুমকি দেয়। পরে শুরু হয় হয়রানি। একপর্যায়ে উপায়ন্ত না পেয়ে রনি ঘটনাটি র্যাব-৮ এর অধিনায়ককে বিষয়টি জানান। তার পরামর্শে গত ১২ মে কাউনিয়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন কাউন্সিলর রনি। এতে ওই তরুণী ক্ষীপ্ত হয়ে রনির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি তার মা, ভাই, ভাবিসহ যৌথ পরিবার নিয়ে পলাশপুর বৌ বাজার এলাকায় বসবাস করেন। তার ভবনের প্রবেশ মুখে সিঁড়িসহ চারপাশে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করলে সিসিটিভিতে তাঁর প্রমাণ থাকতো। তিনি সাংবাদকিদের সিটিটিভি ফুটেজ পর্যালচনা করে আসল ঘটনা জানার অনুরোধ করেন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সংবাদিকরা সরকারি প্রসিকিউটর (পিপি) কিভাবে একজন আসামিরপক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন। এমন প্রশ্ন করলে পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি এখানে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে এসেছি। আর আওয়ামী লীগের কোনো নেতা অপরধামূলক কর্মকা-ের প্রশ্রয় দেয় না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে প্রাথমিক তদন্ত করে জেনেছি, এঘটনার কোনো সত্যতা পাই নি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সরকারি এই আইনজীবী বলেন, ‘আদালতে মেয়ের সঙ্গে যে চ্যাটিং স্টোরি (কথোপকথন) এবং অন্যান্য দলিল জমা দেয়া হয়েছে তা কম্পিউটারে তৈরি করা হয়েছে।’
এর আগে গত ১৬ মে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বরিশাল মহানগরীর ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন এক তরুণী। শুনানি শেষে বিচারক ইয়ারব হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ১৬ জুনের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ‘গত ৪/৫ মাস পূর্বে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কেফায়েত হোসেন রনির সঙ্গে তরুণীর পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে রনি বিয়ের প্রস্তাব দিলে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে তারা বরিশালের একাধিক রেস্টুরেন্টে একান্তে সময় কাটান। গত ৭ মে জরুরী কথা আছে বলে ওই তরুণীকে বাসায় ডেকে নিয়ে যায় রনি। এরপর অনেক অনুরোধে বাসায় গেলে কাউন্সিলর রনি তরুণীকে ধর্ষণ করে। এরপর ৮ মে আবারও রনি তরুণীকে বাসায় নিয়ে দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণ করে রনি। কিন্তু ১২ মে তরুণী রনিকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর ও মোবাইল ফোন তোলা তাদের একান্ত মুহূর্তে ছবিগুলো মুছে (ডিলেট) ফেলে।’
বিভি/এইচএস/এইচএস
মন্তব্য করুন: