• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

নিজেদের আকুতি বিশ্বকে জানাতে রোহিঙ্গাদের নীরব সমাবেশ

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ১৯ জুন ২০২২

ফন্ট সাইজ
নিজেদের আকুতি বিশ্বকে জানাতে রোহিঙ্গাদের নীরব সমাবেশ

নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আকুতি বিশ্বকে জানাতে নীরব সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গারা। ‘গো হোম ক্যাম্পেইন’-শিরোনামে উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে স্ব-উদ্যোগে এ সমাবেশ করেছে তারা।

রবিবার (১৯ জুন) সকালে উখিয়া-টেকনাফের ১০টি ক্যাম্পের নির্ধারিত স্থানে মিয়ানমারে নিজ বাসস্থানে ফিরে যাওয়ার  দাবি নিয়ে পৃথক সমাবেশ করে রোহিঙ্গারা। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে অনলাইন-অফলাইনে তারা ব্যাপক প্রচারণা চালায়।  সূত্র জানিয়েছে ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা শৃংখলা বাহিনীর সদস্য এবং সংশ্লিষ্টরাও তাদের এ দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা দিচ্ছে।
 
উখিয়ার ৯, ১৪, ১৩, ১৭, ২ ওয়েস্ট, ১ ওয়েস্ট, ৪ ও ১৮নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং টেকনাফের নয়াপাড়া ক্যাম্পের নির্ধারিত স্থানে সকাল ৮টা থেকে সমাবেশে আসা শুরু করে রোহিঙ্গারা। ক্যাম্পগুলোর পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পের সব বয়সী রোহিঙ্গারা এখানে অংশ নিয়েছেন।

একই দাবিতে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর নেতৃত্বে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তের গুলি নিহত হন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন স্বপ্ন দেখানো নেতা মুহিবুল্লাহ।

তবে এবারের সমাবেশে একক কোনো নেতৃত্ব সামনে আসেনি। তবে প্রচারপত্রে আয়োজক হিসেবে ‘নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী’ লেখা হয়েছে।
 
রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা বলেই ডাকা, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে আরাকানের নিজ গ্রামে প্রত্যাবাসন, প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত প্রত্যেক চুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, বাংলাদেশ, এনজিও, সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা, বার্মার ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, সম্পত্তি ফেরত, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারসহ নানা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে সমাবেশে।
 
উখিয়ার ১৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি হোসাইন আহমদ বলেন, ‘সম্মানজনক প্রক্রিয়ায় আমরা নিরাপদ প্রত্যাবাসন চাই। আমাদের আশা সমাবেশে উত্থাপিত রোহিঙ্গাদের যৌক্তিক দাবিগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গুরুত্ব পাবে।’
 
নয়াপাড়া শিবিরের রোহিঙ্গা আমির হোসেন বলেন, ‘সম্মান ও মর্যাদার সাথে নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরতে চাই। বিশ্ববাসীর কাছে এটাই আমাদের মূল দাবী। বাংলাদেশ সরকার আমাদের আশ্র‍য় দিয়ে মানবিক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে, আমরা কৃতজ্ঞ।'

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত বলেন, ‘রোহিঙ্গারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দাঁড়িয়ে নিজ দেশে বাড়ি ফেরার আকুতি জানাচ্ছেন। শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করছে তারা।’
 
তাদের দাবি সম্বলিত প্লেকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন ছাড়া বড় কোনো জমায়েত কিংবা বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
 
ক্যাম্পে আইন শৃঙ্খলায় নিয়োজিত ১৬ এপিবিএন অধিনায়ক (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিক ও ৮ এপিবিএন অধিনায়ক (এসপি) শিহাব কায়সার খান জানান, ‘সমাবেশের তথ্য আমরা আগেই পেয়েছি। ক্যাম্প এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতে সকল প্রস্তুতি ও সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে চারপাশে।’

২০১৭ সালের আগস্টে মায়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে নতুন করে পালিয়ে আসে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা, সরকারি হিসেবে যাদের সংখ্যা এখন প্রায় ১১ লাখেরও বেশি। পরে বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদেরকে উখিয়ার টেকনাফের ৩৪ টি ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়। তাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ বিশাল বনভূমি হারিয়ে ফেলে। কিছু রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের আনাগোনায় উখিয়া-টেকনাফ পরিণত হয়েছে সন্ত্রাসের জনপদে। ফসলের জমি বিনষ্ট, নিরাপত্তাহীনতা, ব্যয়বৃদ্ধিসহ নান কারণে দিনদিন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে রোহিঙ্গাদের সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
 
বিশ্লেষকরা এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় দেখছেন রোহিঙ্গাদের নিজদেশে প্রত্যাবাসন। তাই যে কোনো উপায়ে প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2