• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

স্ত্রীকে পতিতা পল্লীতে বিক্রির টাকায় বিদেশ যাত্রা!

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৫৫, ৫ জানুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
স্ত্রীকে পতিতা পল্লীতে বিক্রির টাকায় বিদেশ যাত্রা!

পটুয়াখালী পতিতা পল্লীতে বিক্রি হওয়া এক নারী তার স্বামীর কাছে স্ত্রীর অধিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে পটুয়াখালী জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ভুক্তভোগী নারী সাহিনুর বেগম সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

ভুক্তভোগী নারী সাহিনুর বেগম তার লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, ‘বরিশাল সদর উপজেলার ১০নং চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ভেদুরিয়া গ্রামের মৃত্যু জালাল খান এর পুত্র মো. জাহিদ খানের সঙ্গে ১৪ বছর আগে কিশোরী বয়সে তার বিয়ে হয়। সে সময় ইসলামী শরীয়া মোতাবেক তার নিজ বাড়িতে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ভাই আলমগীর, ইসমাইল, বোন মিতু ও বকুল এবং তার মায়ের উস্থিতিতে সাহিনুর বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের প্রায় দুই বছর পর জাহিদ বিদেশ যাওয়ার কথা বলে সাহিনুরের কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৗতুকের টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। একদিন নির্যাতনের পরে চিকিৎসার নাম করে সাহিনুরকে বরিশাল শহরে নিয়ে আসে এবং কিছু ওষুধ খাওয়ায়। সে সময় সাহিনুর বেগম ৮ মাসের অন্তঃসত্তা ছিলেন। সেখান থেকে তাকে পটুয়াখালীতে নিয়ে আসে এবং জাহিদের বোন পরিচয় দিয়ে এক বাসায় রেখে জাহিদ চলে যায়। পরে সাহিনুর জানতে পারেন তাকে পটুয়াখালী পতিতালয়ের দালালের কাছে বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা নেওয়া হয়েছে। আর সেই টাকা দিয়েই বিদেশ পারি দেন স্বামী জাহিদ খান। এদিকে ওষুধ খাওয়ার ২০ দিন পরে একটি মৃত সন্তান প্রসব করে সাহিনুর। এদিকে দীর্ঘ ১০ বছর পতিতাবৃত্তি করার পর মুক্তি মেলে সাহিনুরের। এখন নিজে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন। তবে সাম্প্রতি তিনি  জানতে পারেন তার স্বামী মো. জাহিদ খান দেশে ফিরেছেন। এমন খবর পেয়ে ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর সহিনুর তার এক পরিচিত জনকে নিয়ে জাহিদের বাড়ি যাওয়ায়। এ সময় পথে চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন পরিষদের সামনে জাহিদকে দেখতে পায়। পরিষদের পথেই জাহিদের বাড়ি। সাহিনুরকে দেখে জাহিদ একটি দোকানে নিয়ে বসায় এবং তিনি কেন সেখানে গেছেন সে জন্য তাকে গালমন্দ করতে থাকে।’

সাহিনুর বলেন ‘আমি স্ত্রী বলে দাবি করলে আমার উপর চড়াও হয়। এক পর্যায় ৬নং ওয়ার্ডের ভেদুরিয়ার ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন সুজন ও স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার লিটনের সহযোগিতায় পরিষদের এক রুমে আটকিয়ে আমাদেরকে মারধর করে। ওই সময় আমাদের সঙ্গে থাকা টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় জাহিদের লোকজন। খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, বন্দর থানা পুলিশের মাধ্যমে আমাদেরকে উদ্ধার করে পটুয়াখালীতে পাঠিয়ে দেয়। সাহিনুর বর্তমানে পটুয়াখালী শহরে বসবাস করলেও তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের চর খাগকাটা গ্রামে।

সাহিনুর সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজরিত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি কী অপরাধ করেছি, আমার জীবনটা কেন এমনভাবে চলবে। আমিতো স্বামীর সংশার করতে চাই। আমাকে যখন বিয়ে করা হয়েছে তখন আমি সবে মাত্র সবাল্যক হয়েছিলাম। সেই থেকে আমাকে নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে। আমি আমার স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে চাই। আর না হলে আমি বিচার চাই।’ 

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2