চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিশু আলহাদের মৃত্যু রহস্যের জট খুলছে পিবিআই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের হরিশপুর গুচ্ছ গ্রামের স্কুল ছাত্র শিশু মো. আলহাদ হত্যা রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। আর এ হত্যা রহস্যের জট শেষপর্যন্ত জেলা গোয়েন্দা শাখা-ডিবি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ব্যর্থতার পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) মাধ্যমে খুলতে শুরু করেছে।
এরই মধ্যে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া তিন আসামির মধ্যে একজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথাস্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আর পুরো ঘটনায় যুক্ত অন্য অপরাধীরা শিগগিরই ধরা পড়বেন বলে আশা করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।
হত্যাকাণ্ডের শিকার শিক্ষার্থী হরিশপুর মহলদারপাড়া গ্রামের মো. বাবলুর ছেলে ও নরেন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
স্কুলছাত্র আলহাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আতাউর আলীর ছেলে মোমিন আলী, মনিরুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন আলী ও মৃত হাসেম উদ্দীনের ছেলে শফিকুল ইসলাম।
নিহত আলহাদের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতে আলহাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের দু’দিন পর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত আলহাদের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে প্রথমে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা-ডিবিতে। তাদের তদন্তে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় পরে মামলাটি স্থানান্তর করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায়। কিন্তু দেড় মাসেও থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ মিলে হত্যাকাণ্ডের কোন কূল-কিনারা না পাওয়ায় পরে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের-পিবিআই এর হাতে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পিবিআই এগিয়ে নেয় তদন্ত। এক সপ্তাহের কম সময়ে তিন আসামিকে গ্রেফতার করে পিবিআই। তাদের মধ্যে গ্রেফতার এক আসামি আলহাদ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের সংশ্লিষ্টরা দাবি করেন, সূত্রহীন এ হত্যা মামলাটি তদন্ত এগিয়ে নিয়েছে পিবিআই। এরই মধ্যে স্কুল ছাত্র আলহাদ হত্যার কারণ সম্পর্কে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য অবস্থানে এসে পৌঁছেছে সংস্থাটি। দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে তারা স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে বাসায় ফেরার পথে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সেপটিক ট্যাকিংর ভেতর ফেলে রেখে যায় আসামিরা। তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হত্যা করা হয় স্কুলছাত্র শিশু আলহাদকে।
এদিকে মামলা তদন্তের অগ্রগতির ব্যাপারে জানতে চাইলে পিবিআই রাজশাহী কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আযাদ বলেন, আমরা এই হত্যার রহস্য উদঘাটনে আন্তরিকভাবে কাজ করছি। তদন্তে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারসহ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। দ্রুত ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে বলে আশা করছি। এরইমধ্যে উল্লেখযোগ্য ও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা এখনই বলা যাবে না।
বিভি/এসজে/এইচএস
মন্তব্য করুন: