• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

নরসিংদীতে জেলা ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের মিছিলে গোলাগুলি, নিহত ১

নরসিংদী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৪৫, ২৫ মে ২০২৩

ফন্ট সাইজ
নরসিংদীতে জেলা ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের মিছিলে গোলাগুলি, নিহত ১

আবারও খায়রুল কবীর খোকনের বাসভবনের সামনে গুলাগুলি। আশরাফুল ও ছাদেক নামে দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়। এর তিন ঘণ্টা পর ছাদেকুর রহমান ছাদেক নামে একজন মারা গেছেন। তিনি জেলা ছাত্রদলের সাবেক কমিটির সহসভপতি ছিলেন।

প্রথমে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জেলা হাসপাতালে যায় আশরাফুল। এর আধাঘণ্টা পর হাসপাতালে নেওয়া হয় ছাদেককে। ছাদকের অবস্থা গুরতর হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। 

এদিকে এই মাত্র জানা গেছে ঢাকায় নেওয়ার পথে ছাদেক মারা গেছেন। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মাইন উদ্দিন।
 
নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান চিকিৎসা নেওয়ার জন্য গুলিবিদ্ধ দুইজন আশার কথা স্বীকার করে বলেন। ছাদেক নামে একজনের অবস্থা গুরুতর। তাকে আশঙ্কা জনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

শুধু চলতি সপ্তাহে দু'বার হামলা-ভাংচুর ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটলো বিএনপির এই নেতার বাসায়।
 
স্থানীয় লোকজন জানায়, আজ বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জেলা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতা মাইন উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি পিক আপ ভ্যান, প্রাইভেটকার ও ৮ থেকে ১০টি মোটরসাইকেলযোগে জেলখানা মোড় থেকে গ্যাস অফিসের রাস্তায় ঢুকে অতর্কিত গুলি করতে থাকে। এ সময় ট্রাক থেকে সন্ত্রাসীরা নেমে খায়রুল খোকনের বাসভবনের দিকে যেতে থাকে। তখন খোকনের বাসভবনে কেউ ছিল না। এমনকি প্রধান ফটকে তালা ঝুলছিল। তাদের তাণ্ডবে তখন পুরো এলাকাজুড়ে আতঙ্কা ছড়িয়ে পরে।

এ সময় স্থানীয় জনতার হাতে বাবু নামে এক তরুণ আটকও হয়। আটক বাবু জানায়, তার বাড়ি শিবপুর উপজেলার নোয়াদিয়া গ্রামে। একই উপজেলার ভুরভুরিয়া বাজারের একটি মাইকের দোকানের কর্মচারী তিনি। 

নরসিংদী গানবাজনার অনুষ্ঠান হবে বলে মাইন উদ্দিন ঐ দোকান থেকে মাইক ও স্পিকার নিয়ে আসে। তার মালিকের এসব জিনিসপত্রের দেখবাল করার জন্য পিক আপ ভ্যানে করে সে এখানে আসে। ঘটনাস্থলে আসার পরপরই গুলাগুলি শব্দ হলে সে ট্রাক থেকে নেমে ভয়ে দৌড় দেয়। এসময় স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে।

স্থানীয়দের ধারণা তারা নিজেরাই নিজেদের গুলিতে আহত হয়েছেন। তবে মাইনউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিকদের জানান, তারা ২৭ তারিখের জনসভা সফল করার জন্য নিহত ছাদেকুর রহমান ছাদেকের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে চিনিশপুরে বিএনপি কার্যালয়ে আসার পথে জেল খানা মোড়ে পৌঁছলে খাইরুল কবীর খোকনের লোকজন, ছাত্রদল সভাপতি নাহিদ ও জাইদুল, লাল ভাই, তানভীরের নেতৃত্বে তাদের লক্ষ্য করে গুলি করলে তারা দুই জন গুলিবিদ্ধ হয়।

বার বার হামলার অভিযোগের পর তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর পরও কেনো তিনি খোকনের বাড়ির দিকে যায়, এমন এক প্রশ্নের জবাবে মাইন উদ্দিন বলেন, তিনি কখনো হামলা চালায় না। বারবার তারাই তাদের উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে এ ঘটনার পর জেলা বিএনপির আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন বলেন, তিনি আজ দিনভর ঢাকায় দলীয় সভাসমাবেশে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তার এসকল অনুষ্ঠানের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ হচ্ছে। ঢাকা থেকে তাদের উপর কীভাবে তিনি বা তার লোকেরা হামলা করবেন এমন প্রশ্ন রেখে তিনি আরও বলেন, মাইন উদ্দিন এখন ট্রামকার্ড হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। বার বার পুলিশের সহায়তায় সে আমার বাসায় এবং গাড়ি বহরে হামলা চালাচ্ছে। অথচ পুলিশ আমার অভিযোগ আমলে না নিলেও তাদের অভিযোগ আমলে নিচ্ছে। 

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ জানান, তিনিও দিনভর ঢাকায়। তার বা ছাত্রদলের এ হামলার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। নরসিংদীর ২৭ তারিখের জনসভা ভুণ্ডল করার জন্যই আইন-শৃংখলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যরা সন্ত্রাসী মাইন উদ্দিনকে ট্রামকার্ড হিসেবে ব্যবহার করে এ হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে।

এদিকে খায়রুল কবীর খোকনের বাসভবন ঘিরে রেখেছে পুলিশ। কামাল হোসেন নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।

বিভি/এমপি/টিটি

মন্তব্য করুন: