• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

হারুনকে ‘জ্বীন’ বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: সাবেক আইজিপি

প্রকাশিত: ২২:৪০, ২৯ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ২২:৪১, ২৯ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
হারুনকে ‘জ্বীন’ বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: সাবেক আইজিপি

ছবি: আসাদুজ্জামান খান কামাল ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে জ্বীন বলে ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। কেননা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কার্যকর মনে করা হতো তাকে।

এমন তথ্য উঠে এসেছে, আদালতে দেওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের জবানবন্দির নথিতে। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) আদালত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই জুলাই আন্দোলন দমনে ব্যবহার হয় মারণাস্ত্র ও হেলিকপ্টার থেকে গুলি। শেখ হাসিনার নির্দেশনার কথা সেসময়ে পুলিশ প্রধানকে সরাসরি জানান তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আন্দোলন দমনের পরিকল্পনা হতো প্রতিরাতের বৈঠকে। 

৫আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২৩ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হন তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক মামলায় ২৪ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি। ৫ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে ২০১৮ এর ভোটের অনিয়ম, গুম, খুন, জুলাই আন্দোলন নিয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন সাবেক এই পুলিশ প্রধান। 

যেখানে তিনি বলেছেন, গত বছরের ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতিরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় বৈঠক হতো তাদের। বৈঠকে দুইজন সচিব, এসবি প্রধান মনিরুল ,ডিবির হারুন, র‌্যাবের মহাপরিচালক, আনসারের ডিজি, এনটিএমসির জিয়াউল আহসানসহ অনেকে উপস্থিত থাকতেন। মূলত এ বৈঠকেই সব পরিকল্পনা হতো।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সাবেক এই আইজিপি আরও বলেন, কোর কমিটির এক বৈঠকে ৬ সমন্বয়ককে আটকের সিদ্ধান্ত হয়। যেখানে পরিকল্পনা করা হয় ভয়ভীতি ও মানসিক নির্যাতন করে কর্মসূচি প্রত্যাহারে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। 

আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার থেকে গুলির বিষয়ে জবানবন্দিতে স্পষ্ট করেছেন মামুন। উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে র‌্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক হারুন অর রশিদের পরিকল্পনায় হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়।

জবানবন্দিতে মামুন বলেছেন, আন্দোলন দমনে মারণাস্ত্র ব্যাবহার এবং আন্দোলন প্রবণ এলাকায় ব্লক রেইডের সিদ্ধান্ত হয় রাজনৈতিকভাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে তাকে লেথাল উইপেন ব্যাবহারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়েছিলেন। মারণাস্ত্র ব্যবহারে অতি উৎসাহি ছিলেন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুনুর রশিদ, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ অনেকে।

সরকার পতনের দিন কী করেছিলেন মামুন সেটিও জবানবন্দিতে জানিয়েছেন তিনি। বলেন, ৫ আগস্ট বিকেলের দিকে একটি হেলিকপ্টারে পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে তেজগাঁও বিমানবন্দরে যান তিনি। এরপর সেখান থেকে সেনানিবাসে আশ্রয় নেন চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

জবানবন্দির শেষাংশে গুলি করে হত্যা, আহতের ঘটনায় সেসময় পুলিশ প্রধান হিসেবে অনুতপ্ত ও ক্ষমা চান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। যদিও ৫ পৃষ্ঠার জবানবন্দিতে শুধু মিটিংয়ে অংশ নেয়া ছাড়া নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়ে কিছুই বলেননি তিনি।

সম্প্রতি আসামি থেকে রাজসাক্ষী হয়েছেন সাবেক এই পুলিশ প্রধান। সম্পূর্ণ সত্য প্রকাশের শর্তে রাজসাক্ষীর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। 

বিভি/এআই

মন্তব্য করুন: