• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ও দুদকে আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রকাশিত: ১৫:০১, ২৬ জুন ২০২৫

আপডেট: ১৫:০৩, ২৬ জুন ২০২৫

ফন্ট সাইজ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ও দুদকে আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ

সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে আইন ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দিয়েছেন ব্যাংকের একজন গ্রাহক। বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে, বুধবার (২৫ জুন) দুদকে আবেদনটি দেন ব্যাংকটির গ্রাহক শিমুল সর্দার। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং প্রধান উপদেষ্টার কাছেও অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, সাউথইস্ট ব্যাংকের একটানা ২০ বছরের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের ঋণ কেলেঙ্কারি, নারী কেলেঙ্কারি ও শেয়ার কারসাজিতে পথে বসতে চলেছে সাউথইস্ট ব্যাংক। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ২০ বছর চেয়ারম্যান থেকে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ লুটপাট করেছেন। এ সময়ে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঋণ কেলেঙ্কারি, শেয়ার কারসাজিসহ নানাভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থপাচারের মাধ্যমে ব্যাংকটির হাজার হাজার গ্রাহকের আমানতকে হুমকির মুখে ফেলেছেন। তার বেশ কয়েকটি যৌন হয়রানির ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে ব্যাংকটিতে।

এরই মধ্যে নির্যাতিত একাধিক নারী এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ বেশ কয়েকজনের কাছে তার পরিচালক পদ বাতিলের জন্যও আবেদন করবেন বলে জানা গেছে।

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, টানা ২০ বছর অনিয়ম-লুটপাট ও অর্থপাচারের রাজত্ব কায়েম করেছেন তিনি। আধিপত্য দেখিয়ে নিজস্ব লোকদের ঋণ দেওয়া, চলতি ঋণের সুদ মওকুফ করে দেওয়া এবং নামে-বেনামে ঋণ দিয়েছেন। এমনকি বিভিন্ন সময়ে অন্যান্য পরিচালক আপত্তি করলেও বিশেষ সুবিধা নিয়ে একক ক্ষমতায় অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে ঋণ অনুমোদন করেছেন।

শুধু ঋণ নয়; ব্যাংকের সরঞ্জামাদি ক্রয়, শাখা সম্প্রসারণ, শাখার ইন্টেরিয়র, ব্যাংকের বুথ বসানো থেকে শুরু করে সফটওয়্যার সরবরাহসহ সব ক্ষেত্রেই ছিল কর্তৃত্ব। এভাবেই ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। যা দিয়ে দেশে-বিদেশে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। অর্থ পাচারের মাধ্যমে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় বিলাসবহুল বাড়ি, হোটেল গড়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। 

এদিকে, শেয়ার কারসাজিতে জড়িত অভিযুক্ত আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে অভিযোগও দিয়েছেন। যার ফলে কমিশন গত ১৯ নভেম্বর ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির দায়ে আলমগীর কবিরকে ১২ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। 

এছাড়া আলমগীর কবিরের সময়ে অনিয়ম করে দেওয়া ব্যাংকটির ২৩২ কোটি টাকা ফেরত দিচ্ছে না আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। ব্যাংকের মূল কার্যক্রমের পাশাপাশি ব্যাংকটির ফাউন্ডেশন ও গ্রিন স্কুলের তহবিলও প্রতিষ্ঠানটিতে আটকা পড়েছে। মেয়াদি আমানত ও কলমানি হিসেবে এ অর্থ ধার দিয়েছিল ব্যাংকটি। টাকা ফেরত চেয়ে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি থেকে কোনও সাড়া মিলছে না। জানানো হয়েছে, মূল অর্থের পাশাপাশি সুদও পরিশোধ করছে না বলে সাউথইস্ট ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-৪-এর এক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, এ মুহূর্তে সাউথইস্ট ব্যাংকের পাওনা টাকা পরিশোধ করার সক্ষমতা বে লিজিংয়ের নেই। প্রতিষ্ঠানটিকে টাকা ধার দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৭ (১-খ) ধারা লঙ্ঘন করেছে সাউথইস্ট ব্যাংক। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রুগ্ন এ প্রতিষ্ঠানের পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ছিল ১৭২ কোটি টাকা। 

আলমগীর কবিরের ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান সুরাইয়া বেগম তার স্ত্রী। সে হিসাবে ব্যাংকের সঙ্গে বে লিজিংয়ের লেনদেন ‘ব্যাংকসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে লেনদেন’ বলে গণ্য হবে। 

সাউথইস্ট ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছেন, গত দুই দশক ধরে সাউথইস্ট ব্যাংকের সব কিছুই আলমগীর কবিরের ইশারায় পরিচালিত হয়েছে। ব্যাংকের টাকা তিনি কখনও পারিবারিক প্রতিষ্ঠান, কখনও বিশেষ সুবিধা নিয়ে নামে-বেনামে ঋণ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছেন ব্যাংকের পরিষদে থাকা তার বন্ধুরা। আর অনিয়ম-দুর্নীতিতে দুর্বল হয়ে পড়া ওসব প্রতিষ্ঠান এখন আর টাকা ফেরত দিতে পারছে না। যার ফলে বিপাকে পড়েছে ব্যাংকটি। যদিও কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা বর্তমান পরিচালনা পরিষদের যোগ্য নেতৃত্বে আবারও ঘুড়ে দাঁড়াবে এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2