জুয়ার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে ব্যবসায়ী হত্যা, গ্রেফতার ২

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লী সংলগ্ন ব্যবসায়ি নজরুল বেপারী (৩২) কে হত্যা মামলায় জড়িত ২ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৮ জুন) পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মোঃ শরীফ আল রাজীব।
গ্রেফতারকৃত দুই আসামি হলেন গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সোহরাব মন্ডল পাড়া গ্রামের মৃত আতর আলী মোল্লার ছেলে মোঃ ইসমাইল মোল্লা ওরফে ঝড়ু (২০) ও হোসেন মন্ডল পাড়া গ্রামের মোঃ সুলতানা মিয়ার ছেলে রনি মিয়া ওরফে আরমান হোসেন (২২)।
নিহত নজরুল বেপারী ছিলেন দৌলতদিয়া ঈমানখা পাড়ার মৃত শাহাজউদ্দিন বেপারীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও জুয়া আইনে দুটি মামলা ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরীফ আল রাজীব জানান, গত ২৩ জুন রাত ১২ টার পর নজরুল বাড়ী থেকে দোকানের চাবি নিয়ে দোকান খোলার জন্য দৌলতদিয়া পূর্বপাড়া পতিতাপল্লির উদ্দেশ্য যায়। পরবর্তীতে ওই রাতে নজরুল বাড়ীতে ফিরে না। পরদিন (২৩ জুন) সকাল পৌনে ৭টায় ঈমানখা পাড়ার রেলওয়ে সীমানা পিলারের পাশে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মরদেহের মাথা, ঘাড়, পিঠ, হাত ও পায়ে ধারালো অস্ত্রের জখমের চিহ্ন ছিল। এ ঘটনায় নিহতের ভাই এরশাদ বেপারী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে গোয়ালন্দঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৬ জুন দিবাগত রাত ২ টার দিকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা এলাকা থেকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত রনি মিয়া ওরফে আরমান হোসেনকে ও একই তারিখ ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে ঢাকা জেলার সাভার থানার রেডিও কোলনি থেকে মোঃ ইসমাইল মোল্লা ওরফে ঝড়ুকে গ্রেফতার করা হয়।
আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম নজরুলের সাথে পূর্ব শত্রুতা ও জুয়া খেলার টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।তখন আসামী রনি মিয়া ওরফে আরমান হোসেন ও মোঃ ইসমাইল মোল্লা ওরফে ঝড়ু সহ আরো অজ্ঞাতনামা আসামিরা নজরুলকে হত্যা করে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামি রনি মিয়া ওরফে আরমান হোসেনের দেখানো মতে হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো ছোল/দা, আসামি মোঃ ইসমাইল মোল্লা ওরফে ঝড়ুর দেখানো মতে একটি স্টিলের ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব আরও বলেন, গ্রেফতার রনির নামে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দঘাট থানায় ডাকাতি, ছিনতাই, অস্ত্র, মাদক, ডাকাতি প্রস্তুতি, নারী নির্যাতন, মারামারিসহ ১৪ টি মামলা ও ঝরু'র নামে চুরি-ডাকাতির ২টি মামলা আছে।
গ্রেফতারকৃত দুই আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একজনের রিমান্ড চাইবো আমরা। এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্যন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে, সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মাহমুদুর রহমান, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোঃ রাকিবুল ইসলাম, ডিবির ওসি মফিজুল ইসলাম, জেলা পুলিশের পরিদর্শক(ক্রাইম) মোঃ জিন্নাহ সহ জেলা পুলিশের অন্যন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: