রেস্টুরেন্টে পঁচা মাংস সরবরাহ করতে গিয়ে ধরা, জরিমানা ও কারাদণ্ড
সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টে পঁচা মাংস সরবরাহের সময় ৩০ কেজি মাংসসহ আব্দুল কাদের নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
রবিবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তাজুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাকে এই দণ্ড দেন। এর আগে সকালে শহরের লাবণী মোড় থেকে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সহায়তায় পঁচা মাংসসহ আব্দুল কাদেরকে আটক করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে এসময় সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা দীপঙ্কর দত্ত, সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেনারি অফিসার ডাঃ বিপ্লব জিৎ মন্ডল প্রমুখ।
জানা গেছে, সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি অলিউর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হোটেল রেস্তোরাঁ মালিকদের বিরুদ্ধে শহরের দোকানগুলো থেকে টাটকা মাংস না কিনে শহরের বাইরে থেকে আনা নিম্নমানের মাংস ক্রয় ও হোটেল রেস্তোরাঁ পরিবেশনের অভিযোগ করেন।
তার এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির ওই বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। এরপর থেকে মাংস ব্যবসায়ীরা বাইরে থেকে আনা নিম্নমানের মাংস শহরে যেন ঢুকতে না পারে সেজন্য গোপনে বিভিন্ন জায়গায় পাহারা দিতে থাকে। একপর্যায়ে রোববার সকালে তারা শহরের প্রাণকেন্দ্র লাবণী মোড় থেকে খাওয়ার অনুপযোগী পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত ৩০ কেজি মাংসসহ বাহক আব্দুল কাদেরকে আটক করতে সক্ষম হন।
আটক মোঃ আব্দুল কাদের জানান, তিনি দেবহাটার কুলিয়া বাজারে ছাগল জবাই করে সেই মাংস শহরের কাচ্চি ডাইনসহ কয়েকটি হোটেলে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছিলেন। কবির মিট নামে শহরের কামালনগর বউ বাজারে তার একটি মাংসের দোকান রয়েছে।
এ ব্যাপারে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের ও সেক্রেটারি অলিউর রহমান জানান, অভিযুক্ত মাংস ব্যবসায়ী আমাদের সমিতি ভুক্ত নয়। শহরের বাইরের থেকে কোন মাংস শহরে বিক্রি করা যাবে না। আমরা বেশ কয়েকদিন ধরে শহরের বিভিন্ন স্থানে পাহারা দিচ্ছিলাম, যেন কোন ধরনের নিম্নমানের মাংস শহরে প্রবেশ করতে না পারে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তাজুল ইসলাম জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি অবৈধভাবে পঁচা মাংস এনে শহরের বিভিন্ন হোটেলে সরবরাহ করছিলেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরীক্ষায় ওই মাংস পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত প্রমাণিত হওয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা আইনের ৪৫ ধারায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। অনাদায়ে তাকে আরও ২০ দিনের কারাদ্বন্ড প্রদান করা হয়। এ সময় জব্দকৃত প্রায় ৩০ কেজি পঁচা মাংস জনসমক্ষে ধ্বংস করা হয়। তিনি আরো জানান, কোন কোন হোটেলে এ মাংস সরবরাহ করা হতো তা জানার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে এবং বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
বিভি/এজেড




মন্তব্য করুন: