মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন গৃহকর্মী আয়েশা
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে লায়লা আফরোজ ও তার কিশোরী মেয়ে নাফিসাকে হত্যার ঘটনায় পলাতক গৃহকর্মী আয়েশা অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় স্বামীর বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ায় বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে আটক করে পুলিশ।
মোহাম্মদপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সহিদুল ওসমান মাসুম জানিয়েছেন, সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্য মিলিয়ে আয়েশার অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর তেজগাঁও বিভাগের ডিসির তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ টিম অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
এর আগে সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের একটি ১৪তলা ভবনের সপ্তম তলার ফ্ল্যাটে লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন। নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। ঘটনাটি পুরো এলাকা ও দেশজুড়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার দাবি, ঘটনার দিন বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মালিকপক্ষ চুরির সন্দেহে তাকে আটকায় ও তল্লাশি করতে চায়। এ নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে তিনি কাছে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে লায়লাকে আঘাত করেন। চিৎকার শুনে নাফিসা এগিয়ে এলে তাকেও কোপাতে থাকেন। এমনকি এ সময় তার হাতেও আঘাত লাগে বলে তিনি দাবি করেছেন।
তবে পুলিশ আয়েশার বর্ণনাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করছে না। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন, তার বক্তব্যে অসঙ্গতি রয়েছে এবং আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে, এ বিষয়গুলো যাচাই করা হবে। হত্যাকাণ্ড পূর্ব পরিকল্পিত ছিল কি না, তা-ও তদন্ত করা হচ্ছে।
এদিকে আয়েশার স্বামী রাব্বীকেও আটক করেছে পুলিশ। রাব্বীর দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরেই আয়েশাকে নলছিটি থেকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। পুলিশ বলছে, মাত্র ছয় মাস আগে মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় আরেকটি বাসায় চুরির ঘটনার সঙ্গেও তার নাম যুক্ত ছিল।
নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পুলিশ এখন নানা দিক খতিয়ে দেখছে, আর এলাকাবাসী এখনও শঙ্কা কাটিয়ে উঠতে পারছে না।
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: