• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

ধর্ষণের কথা বাবা-মাকে জানিয়ে দেওয়ার ভয়ে স্কুলছাত্রীকে খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ১৮:২১, ১৬ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
ধর্ষণের কথা বাবা-মাকে জানিয়ে দেওয়ার ভয়ে স্কুলছাত্রীকে খুন

চট্টগ্রামের হালিশহরে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে আলমগীর মিয়া (৪৯) নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু ধর্ষণের কথা বাবা-মাকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে ওই ছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে খাটের নিচে ফেলে পালিয়ে যায় আলমগীর। পরে এই ঘটনা প্রকাশ পেলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭। 

র‌্যাব জানায়, গত ১৩ মার্চ দুপুরে ধর্ষণের পর ওই ছাত্রীকে হত্যার করে আলমগীর নিজের স্ত্রীকে নিয়ে মানিকগঞ্জে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে গতকাল ১৫ মার্চ সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ১৩ মার্চ চট্টগ্রামের হালিশহরে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরদিন এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা (নং ১৬) করেন। পরে র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৭ এর অভিযানে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) রাতে মানিকগঞ্জ থেকে আলমগীর মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ি নারায়ণঞ্জ জেলার আড়াইহাজারে।

কমান্ডার খন্দকার মঈন বলেন, নিহত স্কুলছাত্রীরা তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। তার বাবা পেশায় রিকশাচালক। মা পোশাক কারখানার শ্রমিক। বড় ভাই একটি ডেকোরেটরের দোকানে এবং ছোট ভাই ফার্নিচারের দোকানে কাজ করেন। মেধাবী ছাত্রী হওয়ায় পরিবারের আর্থিক সংকটের মধ্যেও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল। ঘটনার দিন নিহতের মা কাজে চলে যান। তার বাবাও রিকশা নিয়ে কাজে যান। দুপুরে মা বাসায় খাবার খেতে আসেন। তখন মেয়ের দুই সহপাঠী তাকে জানায়, তার মেয়ে প্রাইভেট পড়া শেষ করে স্কুলে যায়নি। পরে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন, আলমগীর ওই ছাত্রীদের প্রতিবেশী। ঘটনার পর অন্যান্য দিনের মতো আসামির স্ত্রী দুপুরে খাবার খেতে বাসায় আসে না, বাসাও তালাবদ্ধ দেখা যায়। তার ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। আলমগীরের তালাবদ্ধ বাসার লাইট ও ফ্যান চালু দেখে নিহতের বড় ভাইয়ের সন্দেহ হয়। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে এসে রাত ৯টার দিকে দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। খাটের নিচে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ওই ছাত্রীকে পড়ে থাকতে দেখেন। নিহত ছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও ধর্ষণের আলামত দেখতে পেয়েছিল বলে জানিয়েছে নিহত ছাত্রীর পরিবার।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে আলমগীর জানিয়েছে, ঘটনার দিন সকালে নিহত ছাত্রী প্রাইভেট শেষে বাসায় আসে। তখন আলমগীর কৌশলে ছাত্রীকে তার বাসায় ডেকে নেয়। এরপর জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। ওই ছাত্রী তার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে ধর্ষণকারীকে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে ধর্ষকের হাতের আঙুলে কামড় দেয় এবং তার বাবা-মাকে জানিয়ে দেবে বলে জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আলমগীর তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে বাসায় খাটের নিচে রেখে পালিয় যায়। বাসা থেকে বেড়িয়ে আলমগীর তার স্ত্রী যে গার্মেন্টসে কাজ করে সেখানে যায়। এলাকায় একজনের সঙ্গে মারামারি হয়েছে- এমন তথ্য স্ত্রীকে জানিয়ে শহর ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায় আলমগীর।

গ্রেফতার ধর্ষকের বরাত দিয়ে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, আলমগীর আগে গার্মেন্টসে কাজ করতো। সে দুটি বিয়ে করেছে। পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে তিন মাস আগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে চট্টগ্রামের হালিশহরে বসবাস শুরু করে। তার স্ত্রীও একজন পোশাক কারখানার শ্রমিক। বর্তমানে আলমগীর বেকার। তাই কাজ না থাকায় বাসায় অবস্থান করতো। আগেও তার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার পর সে পালিয়ে প্রথমে ধামরাই, পরে সাভার, রাজবাড়ী ও সর্বশেষ মানিকগঞ্জ এলাকায় আত্মগোপন করে।

বিভি/এসএইচ/এইচএস

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2