• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রাণনাশের আশঙ্কায় রমনা থানায় আ’লীগ নেতার জিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ২১:৩২, ৩১ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
প্রাণনাশের আশঙ্কায় রমনা থানায় আ’লীগ নেতার জিডি

রমনা থানায় রিয়াজের জিডি

প্রাণনাশের হুমকি পাওয়ায় ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দীন রিয়াজ রাজধানীর রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাতে রাজধানীর রমনা থানায় (ডিজি নম্বরঃ ২০৬৩ তারিখ ৩১/০৩/২০২২) এই জিডি করেছেন বলে বাংলাভিশনকে নিশ্চিত করেন রিয়াজ। 

জিডিতে রিয়াজ উল্লেখ করেন, গত ২৭ মার্চ রাত ৮টার দিকে আমি ২/৩জন বঙ্গবন্ধু এভিনিউ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ের কাজ শেষে করে বেইলি রোডে দিকে যাচ্ছিলাম। তখন আজ্ঞাত এক ব্যক্তি +৩০০৩৬৭৪০৬ মোবাইল নাম্বার থেকে আমার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে হুমকি দিয়ে বলে ‘স্যার ভালো আছেন? টিপু কে চেনেন, টিপু? তখন আমি বলি কোন টিপু? তখন ওই ব্যক্তি বলে ওই যে মতিঝিলের টিপু। তখন বলেন, আচ্ছা শরীরিরে প্রতি যত্ন রাখবেন এ বলেই ফোন কল কেটে দেয়।’
  
এর আগে শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুর বন্ধু। ইন্টারনেটের একটি নম্বর থেকে এই হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানান রিয়াজ। রাজধানীর পল্টন থানায় এবিষয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলেও জানান তিনি।

রিয়াজ জানান,‘গত মঙ্গলবার রাতে দিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের প্রোগ্রাম শেষ করে বাসায় যাওয়ার পথে একটি প্রাইভেট নম্বর থেকে তাঁর মোবাইলে কল আসে। কলটি রিসিভ করার পর কোন নাম পরিচয় না দিয়েই শুধু বলেন, ‘আপনি তো টিপুকে চেনেন, তাঁর কি হইছে সেটাও দেখলেন, আপনিওতো রাজনীতি করছেন। সাবধান, শরীরের দিকে খেয়াল রাখবেন।’ এই কথাগুলো বলেই লাইন কেটে দেয় অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি।’ 

ঘটনার পরপরই পল্টন থানায় লিখিত অভিযোগ করেন রিয়াজ। তবে, পুলিশের পক্ষ থেকে রমনা থানায় জিডি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গত ২৪ মার্চ রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে মাইক্রোবাসে করে শাহজাহানপুর আমতলা কাঁচাবাজার হয়ে বাসায় ফেরার পথে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়ে জাহিদুল ইসলাম টিপু। এ সময় জাহিদুলের গাড়ির পাশ দিয়ে রিকশায় যাচ্ছিলেন বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী প্রীতি। তিনিও গুলিবিদ্ধ হন। তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহিদুল ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ গাড়িচালক মুন্না বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

২০১৬ সালে মতিঝিল এলাকার যুবলীগ কর্মী রিজভী হাসান বাবু ওরফে বোছা বাবু খুন হন। ওই মামলার চার্জশীটভুক্ত ৫ আসামির সঙ্গে টিপুর বিরোধ ছিল। এই পাঁচ আসামি মনে করে, খুনের শিকার বাবুর বাবাকে ম্যানেজ করে ওই মামলায় তাদের ফাঁসিয়েছেন টিপু। আসামিরা টিপুর পেছনে ঘুরেও মামলা থেকে রেহাই পায়নি, কোন সুরাহা করতে পারেনি। এই পাঁচ আসামির মধ্যে সুমন ওরফে মুসার নাম বলছে ডিবির হাতে আটক মাসুম। আসামিদের মধ্যে ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ওরফে কানা ফারুক, তার সহযোগী সুমন ওরফে মুসা ও নাসির উদ্দিনকে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কেউ এই হত্যা মিশনে ব্যবহার করছে কিনা, সেটি খতিয়ে দেখছে ডিবি।

মতিঝিল এলাকার ফুটপাত, ঠিকাদারি, গরুর হাট, ক্রীড়া পরিষদের টেন্ডার নিয়ে কয়েকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। কে কাকে পেছনে ফেলে কাজ হাতিয়ে নেবে, সেই প্রতিযোগিতা ছিল দীর্ঘদিনের। এরমধ্যে ক্রীড়া পরিষদের টেন্ডারের কাজ বরাবরের মতো টিপুর কব্জায় ছিল। ক্রীড়া পরিষদের দরপত্র নিয়ে ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে ভারতে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদ পরিচয়ে টিপুর কাছে কলও এসেছিল। হুমকি পাওয়ার ৫-৬ দিনের মাথায় খুন হন টিপু। এছাড়া বর্তমানে কোন পদে না থেকেও মতিঝিল এলাকার ফুটপাথসহ রাজনৈতিক অনেক বিষয় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে টিপুর প্রতি ক্ষোভ ছিল স্থানীয় নেতাদের।

ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে রিমান্ডে শূটার মাসুম বলেন, টিপুকে হত্যা করা হয় পরিকল্পিতভাবে। আলাদা আলাদা গ্রুপ করে হত্যা মিশনের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়। চারটি গ্রুপ পুরো হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করে। মাঠে নামানো হয় ১১ জনকে। একটি গ্রুপের দায়িত্ব ছিল অস্ত্র ও বাইক সরবরাহ করা। আর এই স্তরে ছিল মাসুম ও অজ্ঞাত বাইকার। দ্বিতীয় স্তরে ছিল মাসুমকে অস্ত্র ও বাইকারকে বাইক সরবরাহকারী। তৃতীয় স্তরে রয়েছে সমন্বয়কারী। আর চতুর্থ স্তরে হত্যা মিশনের মাস্টারমাইন্ডরা রয়েছে। তবে গ্রুপের অনেকেই এক সময় দুবাইয়ে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের ভাড়াটে খুনী হিসেবে কাজ করতো। যখন যে ভাড়ায় ঠিক করে, তখন তার হয়ে কাজ করতো তারা।

এদিকে টিপু ও প্রীতি হত্যাকাণ্ড নিয়ে র‌্যাবও ছায়া তদন্ত করছে। ঘটনার পর থেকে কয়েকজনকে হত্যাকাণ্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে র‌্যাব। র‌্যাবের মিডিয়া উইং থেকে বলা হয়, টিপু ও প্রীতি হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের খুঁজে বের করতে র‌্যাব আলোচিত হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে কাজ করছে।

বিভি/এসএম/এইচএস

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2