• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ০৫ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

দেশে আরও এক নতুন মাদকের সন্ধান, ৩ কোটি টাকাসহ মূল হোতা আটক

প্রকাশিত: ১১:৫২, ২ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ১৩:০৬, ২ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
দেশে আরও এক নতুন মাদকের সন্ধান, ৩ কোটি টাকাসহ মূল হোতা আটক

নতুন মাদক কুশ, বিদেশি মদ ও নগদ তিন কোটি টাকা

এলএসডি, ক্রিস্টাল মেথ, ডিএমটিসহ দেশে নতুন ধরনের নানা মাদক জব্দ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযানের ধারাবাহিকতায় মিলেছে আরও একটি নতুন মাদকের সন্ধান। অপ্রচলিত ও নতুন মাদকটির নাম ‘কুশ’।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) ভোরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর গুলশান থেকে এ মাদক জব্দ করে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এসময় মাদক ‘কুশ’ তৈরির মূল হোতা ওনাইসি সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদকে আটক করা হয়।

No description available.

বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‍্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি ইমরান খান।

তিনি বলেন, দেশে এবারই প্রথম অপ্রচলিত মাদক আফ্রিকান কুশ, হেম্প, এক্সট্যাসি, মলি, এডারল, ফেন্টানিল ও অন্যান্য মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় এ মাদক তৈরির মূল হোতা ওনাইসি সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া অভিযানে প্রায় ৩ কোটি টাকার দেশি ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের দাবি, কুশ মাদক এই প্রথম দেশে জব্দ করা হয়েছে। এটির উৎপত্তি পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনে। সেখান থেকেই এ মাদক বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে।

গত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এর আভিযানিক দল রাজধানীর গুলশান এলাকা হতে ওনাইসী সাঈদও রেয়ার সাঈদকে (৩৮) গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সাঈদ ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার কে এম এস সেলিমের পুত্র।

এসময় উদ্ধার করা হয় ১০১ গ্রাম কুশ, ০৬ গ্রাম হেম্প, ০.০৫ গ্রাম মলি, ০১ গ্রাম ফেন্টানল, ১৮ গ্রাম কোকেন, ১২৩ পিচ এক্সট্যাসি, ২৮ পিচ এডারল ট্যাবলেট এবং ০২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা ও অর্ধলক্ষাধিক মার্কিন ডলার। 

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতের তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে তাপ নিয়ন্ত্রণ প্রো-টেন্ট এর মাধ্যমে অভিনব পন্থায় বিদেশি প্রজাতির কুশ তৈরির প্লান্ট ও সেটআপ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ওনাইসী সাঈদ তার মাদক কারবার সংশ্লিষ্টতার উপর তথ্য প্রদান করে।

গ্রেফতারকৃত ওনাইসী সাঈদ বাংলাদেশে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল/কলেজ হতে পড়াশুনা শেষ করে বিদেশ থেকে বিবিএ এবং এমবিএ সম্পন্ন করে। বিদেশে অধ্যায়ন শেষে ২০১৪ সাল হতে বাংলাদেশে অবস্থান করে। প্রাথমিক পর্যায়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশে অবস্থানকারী পূর্বপরিচিত একজন গ্রেফতারকৃত ওনাইসীকে বিভিন্ন ধরণের অপ্রচলিত মাদক সরবরাহ করত। পরবর্তীতে উক্ত সরবরাহকারী উত্তর আমেরিকার একটি দেশে স্থানান্তরিত হলে, সেখান থেকে এ জাতীয় মাদক সাপ্লাই করতে থাকে। এভাবে সে আন্তর্জাতিক মাদক সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, বাংলাদেশে নতুন মাদক এক্সট্যাসি এর অন্যতম মূলহোতা গ্রেফতারকৃত ওনাইসী সাঈদ। সে প্রায় ৪ বছর যাবত এক্সট্যাসিসহ অন্যান্য উচ্চমূল্যের মাদকের কারবারের সাথে জড়িত। সে বর্ণিত সিন্ডিকেটটির মূলহোতা; এছাড়া বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে থাকে। বর্ণিত মাদক সে পার্সেল এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ হতে সংগ্রহ করে থাকে। মাঝে মধ্যে সে নিজেও বিদেশে গমন করে মাদক সমূহ লাগেজে বহন করে দেশে নিয়ে এসে থাকে। সে পার্সেলে মাদক আনয়নের ক্ষেত্রে নিকটাত্মীয়/বন্ধু-বান্ধব ইত্যাদি নামে নিয়ে এসে থাকে। সে হুন্ডির মাধ্যমে সরবরাকৃত মাদকের অর্থ পরিশোধ করা হয় বলে জানায়। দেশে তার ক্রেতাদের সম্পর্কে জানা যায় যে, অধিকাংশ ধণাঢ্য পরিবারের সদস্য; এছাড়া অভিজাত এলকায় বিভিন্ন পার্টিতে চাহিদার ভিত্তিতে সরবরাহ করে থাকে। সে মাদক পরিবহনের ক্ষেত্রে বিশ্বস্তদের নিয়োগ করে থাকে; এই বিশ্বস্তজনেরা মাদক বিক্রিলব্ধ টাকা তার নিকট পূনরায় বহন করে নিয়ে আসে।

গ্রেফতারকৃত জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানায় যে, নতুন বিভিন্ন মাদকের প্রতি তার আগ্রহ সৃষ্টির ফলে সে এ নিয়ে অধ্যায়ন এবং গবেষণা শুরু করে। তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নত দেশে সরবরাহের নিমিত্তে সে কুশ প্ল্যান্ট এর ফার্ম তৈরি করে। টেস্ট এন্ড ট্রায়াল হিসেবে সে ঢাকার মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাটের ভিতর তাপ নিয়ন্ত্রণ প্রো-টেন্ট পদ্ধতিতে চাষ করে। ইতিমধ্যে সে উক্ত ফার্ম হতে একবার হারভেস্ট ও পরবর্তীতে প্রসেস করে কুশ মাদক প্রস্তুত করে। যা বাংলাদেশের বিভিন্ন মাদকাসক্তের নিকট বিক্রি করে।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বিভি/এসএইচ/এজেড

মন্তব্য করুন: