• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চোরাচালানের মাধ্যমে বছরে দেশে আসছে ৭৩ হাজার কোটি টাকার স্বর্ণ 

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:৫৮, ১৩ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ১২:৩৭, ১৩ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
চোরাচালানের মাধ্যমে বছরে দেশে আসছে ৭৩ হাজার কোটি টাকার স্বর্ণ 

চোরাচালানের মাধ্যমে বছরে দেশে ৭৩ হাজার কোটি টাকার স্বর্ণ এবং স্বর্ণালঙ্কার আসছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)। 

শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স ‘জুয়েলারি শিল্পের বাজারে চলমান অস্থিরতা, সঙ্কট ও সমস্যা সমাধান’ দাবিতে বাজুস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা এই তথ্য জানান। 

বাজুস নেতারা বলেন, সারাদেশের জল, স্থল ও আকাশ পথে কমপক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে। যা ৩৬৫ দিন বা একবছর শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা। দেশে চলমান ডলার সঙ্কটে এই ৭৩ হাজার কোটি টাকার অর্থপাচার ও চোরাচালান বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।

চোরাচালান প্রতিরোধে প্রস্তাব জানিয়ে বাজুস নেতারা বলেন, চোরাকারবারিদের দমনে বাজুসকে সম্পৃক্ত করে পৃথক ভাবে সরকারি মনিটরিং সেল ও প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে আরও কঠোর আইন করতে হবে। এছাড়াও ব্যাগেজ রুলের আওতায় সোনার বার ও অলঙ্কার আনার সুবিধা অপব্যবহারের কারণে ডলার সঙ্কট ও চোরাচালানে কী প্রভাব পড়ছে, তা জানতে বাজুসকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে সমীক্ষা করতে হবে। 

চোরাচালানে প্রতিরোধে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিয়মিত কড়া নজরদারি প্রয়োজন জানিয়ে সংগঠনটির নেতা আরো বলেন, চোরাচালান প্রতিরোধ করতে গিয়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সমূহের সদস্যদের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ সংস্থা সমূহের সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদানের অনুরোধ করছি। মূলত চোরাচালান প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারি সংস্থা সমূহের সদস্যদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বাজুসের এই প্রস্তাবনা। বাজুসের এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে সোনা চোরাচালান প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অপচয় কমবে। 

দেশে অবৈধ ভাবে আসা সোনারসিকিভাগও আইন প্রয়োগকারি সংস্থা সমূহের নজরে আসছেনা। ফলে নিরাপদে দেশে আসছে চোরাচালানের বিপুল পরিমাণ সোনার চালান। আবার একই ভাবে পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশ যে সোনা চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, এটা কথার কথা নয়। এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। এই পরিস্থিতি উত্তোরণে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিয়মিত কড়া নজরদারি প্রয়োজন। পাশাপাশি বাজুসকে সম্পৃক্ত করে আইনপ্রয়োগকারী সকল দপ্তরের সমন্বয়ে সোনা চোরাচালান বিরোধী সেল গঠন করতে হবে। 

গহনারমান উন্নয়নে হলমার্ক নীতিমালা ও ডায়মন্ডনীতি মালা প্রণয়নে সরকারের কাছে জোড়ালো দাবি জানাচ্ছে বাজুস। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং এন্ড ল এনফোর্সমেন্ট। 

বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং এন্ড ল এনফোর্সমেন্টের পক্ষ থেকে সোনা ও ডায়মন্ডের অবৈধ এবং অসাধু জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই- হলমার্ক ব্যতীত কোন অলংকার বিক্রয় করা যাবেনা। যদি কোন জুয়েলারী প্রতিষ্ঠানে হলমার্ককৃত অলংকার নিম্নমানের পাওয়া যায় তাহলে যে প্রতিষ্ঠান উক্ত অলংকার হলমার্ক করেছে সে প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করে আইনপ্রয়োগকারি সংস্থাগুলোকে অবহিত করবে বাজুস। 

সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশে স্বর্ণের ৪টি মান রয়েছে, যথাক্রমে ১৮, ২১, ২২ ও ২৪ (৯৯ দশমিক ৫)। এই মানের নীচে কোন স্বর্ণ বা স্বর্ণালংকার বিক্রি করা যাবে না। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে তেজাবী (পাকা সোনা বা পিউর গোল্ড) স্বর্ণের ক্ষেত্রে কোন অবস্থাতেই ৯৯ দশমিক৫ এর নীচে মান গ্রহণযোগ্য না। এক্ষেত্রে সকল হলমাকিং কোম্পানীকে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী স্বর্ণ পরীক্ষা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে বাজুস। 

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন: