অনিশ্চিত ইউএসএইড: প্রায় দেড় কোটি মানুষের অকাল মৃত্যুর শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডের তহবিলে ব্যাপক কাটছাঁট এবং সংস্থাটি ভেঙে দেওয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনা চলছে। এতে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটতে পারে বলে উঠে এসেছে গবেষণায়।
বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী দ্য ল্যানসেট-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে বলে মঙ্গলবার (১ জুলাই) এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ২০২৫ সালের শুরু থেকেই ইউএসএইডের বাজেট কমিয়ে দিচ্ছে, যুক্তি হিসেবে দেখানো হচ্ছে 'অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো'।
তবে মানবাধিকারকর্মী এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে বলেছেন, এই তহবিলই বহু দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের দেশে — বিশেষ করে আফ্রিকান অঞ্চলে — স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য অবিচ্ছেদ্য বিষয় ছিলো।
গত দুই দশকে ইউএসএইড-সাপোর্টেড প্রোগ্রামগুলো বিশ্বজুড়ে প্রায় ৯ কোটি ১০ লাখ প্রাণ বাঁচিয়েছে, যার মধ্যে ৩০ মিলিয়ন শিশুও ছিল। গবেষকরা বলছেন, বর্তমান বাজেট কমানো ও সংস্থাটি বিলুপ্তির পথে এগোলে ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি নতুন মৃত্যু হতে পারে। এর মধ্যে ৪৫ লাখেরও বেশি শিশু (৫ বছরের নিচে) থাকবে।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সহায়তা দানকারী দেশ। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের মানবিক তহবিলের ৩৮ শতাংশই দেয় যুক্তরাষ্ট্র। শুধু গত বছরই তারা ৬১ বিলিয়ন ডলার বিদেশি সাহায্য দিয়েছে, যার অর্ধেকের বেশি গেছে ইউএসএইডের মাধ্যমে।
দ্য ল্যানসেট-এ প্রকাশিত ওই গবেষণায় গবেষকরা বলেছেন, “যদি ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ঘোষিত তহবিল কাটছাঁট স্থায়ী হয় এবং পূর্বের সহায়তা ফিরে না আসে, তবে ২০৩০ সালের মধ্যে বিস্ময়কর মাত্রার অপ্রয়োজনীয় মৃত্যু ঘটবে।”
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও চলতি বছরের মার্চে জানিয়েছেন, মাত্র ছয় সপ্তাহের এক পর্যালোচনার পর ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএইডের ৮০ শতাংশ প্রোগ্রাম বন্ধ করে দিয়েছে। অবশিষ্ট প্রায় ১০০০টি কর্মসূচি এখন পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে কংগ্রেসের সঙ্গে সমন্বয় করে নতুনভাবে চালানো হবে।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: