সাংবাদিককে গেস্টরুমে পেটালো ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ

ভুক্তভোগী ফয়সাল আহমেদ
গেস্টরুমে আসতে দেরি হওয়ায় এক সাংবাদিককে বেধড়ক মারধর করেছে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা কলেজের শহিদ মো. ফরহাদ ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে। ওই সাংবাদিকের নাম ফয়সাল আহমেদ। তিনি ডেইলি বাংলাদেশ ও প্রতিদিনের ক্যাম্পাসের ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি। সে ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের ২য় বর্ষ ও শহিদ ফরহাদ ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী।
জানা যায়, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের ৩০ সেপ্টেম্বরের কর্মীসভা বাস্তবায়ন করতে গেস্টরুমে ডাকে ঢাকা কলেজের শহিদ ফরহাদ ছাত্রাবাসের ছাত্রলীগ কর্মীরা। রিডিং রুমে থাকায় গেস্টরুমে যেতে দেরি হয় ফয়সালের। গেস্টরুমে আসতে কেন দেরি করলো, সেজন্য আসা মাত্রই চর-থাপ্পর মেরেছে আল আমিন, লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে সজিব আহমেদ, সাগর এবং বালিশ দিয়ে ইকরাম। এতে ওই সাংবাদিকের ঠোঁট ফেটে যায়। কানেও ব্যথা পায়।
আরাও জানা যায়, সাংবাদিকতা করার কারণে ওই সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। আর ছাত্রলীগের বাকিরাও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে। হলে থেকে কিসের সাংবাদিকতা, সাংবাদিকতা করতে হলে হলের বাইরে গিয়ে কর, সাংবাদিক বলে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম কেন করো না? বলা হয়েছে এসবও।
মারধরকারীরা সকলেই অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের।
এ বিষয়ে ফরহাদ হোসেন হলের সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতা খায়রুল হাসু বলেন, বিষয়টি অপ্রত্যাশিত। যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উত্তর ছাত্রাবাসের ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিন পুরো বিষয়টির জন্য লজ্জিত হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন । জড়িতদের চিহ্নিত করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
জানা যায়, ঢাকা কলেজের সবগুলো হলের নিয়ন্ত্রণ ছাত্রলীগের অধীনে। প্রশাসন সেখানে নাম মাত্র। ফরহাদ ছাত্রাবাসের ১০২ নং রুম যেন আবাসিক ছাত্রদের আতংকের নাম। এর আগেও ছাত্রলীগের অত্যাচারে হলের ১ম বর্ষের সব শিক্ষার্থী এক যোগে হল ছেড়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে হল প্রভোস্ট নাসির উদ্দিনকে বার বার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
গেস্টরুমে শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ বাংলাভিশনকে বলেন, এটা ওদের নিজেদের বিষয়। ওরা একসাথে থাকে, কী নিয়ে ঝামেলা হয়েছে আমি খোঁজ নিচ্ছি। ক্যাম্পাসে কোনো গেস্টরুম নেই। আমি নেতৃবৃন্দকে ডেকেছি, ফয়সালকেও ডেকেছি। ফয়সাল অফিসে থাকায় এখন বসা সম্বব হয়নি, সন্ধ্যায় বসে মিমাংসা করে দেব। মিমাংসা না হলে প্রয়োজনে যারা দোষী তাদের হল থেকে বের করে দেব।
ক্যাম্পাস প্রশসন থাকতে ছাত্রলীগ কীভাবে সাধারণ ছাত্র বা সাংবাদিকদের নির্যাতন করে জানতে চাইলে তিনি অসুস্থ বলে কল কেটে দেন।
বিভি/কেএস/টিটি
মন্তব্য করুন: