• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ১১ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

বাকৃবিতে গবেষণা; ‘শর্করা জাতীয় খাবারের বিকল্প হবে কাসাভা’

হাবিবুর রনি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ০০:৪১, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

ফন্ট সাইজ
বাকৃবিতে গবেষণা; ‘শর্করা জাতীয় খাবারের বিকল্প হবে কাসাভা’

উচ্চ শর্করাসমৃদ্ধ কন্দ জাতীয় ফসল কাসাভা। শর্করা জাতীয় খাদ্য হওয়ায় ধান, গম, চালের উপর নির্ভরতা কমাতে পারে এটি। কাসাভা নতুন কোনো ফসল নয়। বাংলাদেশে এটি শিমুল আলু হিসেবে পরিচিত। কেউ কেউ আবার একে কাঠ আলু বলেও জানে। কাসাভা সিদ্ধ করে, পুড়িয়ে এমনকি গোল আলুর মতো অন্যান্য তরকারির সাথেও রান্না করে খাওয়া যায়। কাসাভা আটা গমের আটার সাথে মিশিয়ে রুটি, পরোটা, কেক তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির কাসাভা দিয়ে তৈরী করেছেন রুটি, কেক, চপস, হালুয়া, পাকড়াসহ ১১টি খাদ্যজাত পণ্য।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন এই গবেষক। এসময় কাসাভা দিয়ে নিজের তৈরীকৃত খাদ্যপণ্য প্রদর্শন করেন। ড. ছোলায়মান আলী ফকির বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবসহ মাটির অনুর্বরতার বিবেচনায় এবং দেশের মানুষের শর্করার চাহিদা মেটাতে দীর্ঘদিন ধরে দেশে এ ফসলের মাঠ পর্যায়ের গবেষণা করে সফলতা পেয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন।

গবেষক জানান, প্রতি ১০০ গ্রাম কাসাভা আলুতে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ শর্করা,  প্রায় ২ দশমিক ৭০ শতাংশ পর্যন্ত আমিষ, প্রায় ১ দশমিক ২ শতাংশ পর্যন্ত চর্বি, প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত আঁশ এবং প্রায় ২ দশমিক ৬ শতাংশ পর্যন্ত খনিজ দ্রব্য পাওয়া গেছে।
এছাড়াও এতে বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন-সি এবং স্বল্প পরিমাণ লৌহ উপাদানও পাওয়া গেছে। এই গাছের পাতা, কান্ড ও মূল সবকিছুই ব্যবহারযোগ্য। এছাড়া পাতায় কিছু পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও লৌহ উপাদানও থাকে। কাসাভা থেকে উন্নতমানের স্টার্চ পাওয়া যায় যা দিয়ে গ্লুকোজ, বার্লি, সুজি, রুটি, নুডলস, ক্র্যাকার্স, কেক, পাউরুটি, বিস্কুট, পাঁপড়, চিপসসহ নানাবিধ খাদ্য তৈরি করা যায়।

কাসাভার তৈরি খাবার

কাসাভা আলুর ফলন ও চাষপদ্ধতি সম্পর্কে গবেষক ড. ছোলায়মান জানান, হেক্টরপ্রতি এই আলুর গড় ফলন প্রায় ৩৫ থেকে ৫০ টন যেখানে ধানের গড় ফলন ২ থেকে ৩ টন। তবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মে চাষ করে হেক্টরপ্রতি ৫০ টন পর্যন্ত ফলনও পাওয়া গিয়েছে। পাতার ফলন হেক্টরপ্রতি প্রায় ২৫ টন। এ ফসল চাষে মাটির ক্ষয় হয় বলে মূলত বাড়ির পাশের পতিত জমি ও পড়ে থাকা উঁচু জমিতে চাষের জন্য উপযুক্ত। এটি উচ্চ তাপমাত্রা এবং কম উর্বর মাটিতেও জন্মাতে সক্ষম। বীজ ও শাখা কাটিংয়ের মাধ্যমে এর বংশবিস্তার হয়। প্রতি হেক্টরে প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার গাছ লাগানো যায়। গাছ লাগানোর ৭ থেকে ১০ মাস পরে আলু উত্তোলনের উপযোগী হয়।

সতর্কতাস্বরূপ গবেষক বলেন, কাসাভা গাছের সর্বত্র বিষাক্ত সায়ানোজেনিক গ্লুকোসাইড নামক এক ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে। তাই বিষাক্ত কিছু জাতের কাসাভার ডগা এবং পাতা খেয়ে গরু-ছাগল মারা যেতে পারে। তবে সিদ্ধ বা প্রক্রিয়াজাত করলে এই বিষক্রিয়া আর থাকে না। তাই কাসাভা আটা সম্পূর্ণ নিরাপদ।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: