• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

ঢাকা কলেজের হোটেলে অতিরিক্ত দামে নিম্ন মানের খাবার, প্রশাসন নিরব!

মো. ওবায়দুল্লাহ, ঢাকা কলেজ

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ৭ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
ঢাকা কলেজের হোটেলে অতিরিক্ত দামে নিম্ন মানের খাবার, প্রশাসন নিরব!

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন খাবারের চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণ হয়ে থাকে হোটেল ও খাবার দোকানের মাধ্যমে। তবে এসব হোটেল ও দোকানে অস্বাস্থ্যকর এবং নিম্নমানের খাবার অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের। বারবার বিষয়টি অবগত করার পরও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেই কলেজ প্রশাসনের।

দীর্ঘদিন ধরেই খাবারের মান ও মূল্য নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বাধ্য হয়েই তাদের অতিরিক্ত দাম দিয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সরাসরি এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। বরং দোকান মালিকের উল্টো কথা শুনতে হয় শিক্ষার্থীদের। প্রশাসনের পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবেই খাবারের মান ও মূল্য নিয়ে লাগামহীনভাবে অনিয়ম করে চলেছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কোনো স্থায়ী সমাধান মিলছে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর প্লাস্টিকের পুরোনো বোতলে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। পুরোনো পোড়া তেল বারবার ব্যবহার করে সিঙ্গারা, পুরি, মাছ ও পিঁয়াজু ভাজা হচ্ছে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে রান্না করা হচ্ছে মাছ-মাংস। মাছ ভালোভাবে না পরিষ্কার করাই আইশ থেকেই যাচ্ছে। দুপুরের রান্না করা তরকারি রাতে ও রাতের তরকারি পরের দিন খাওয়ানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ব্যবহৃত প্লেটও ভালোভাবে না ধুয়ে, হালকা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে আবার পরিবেশন করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের দক্ষিণ ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, খাবার খাওয়া হয় দেহে শক্তি যোগাতে, মনকে প্রফুল্ল রাখতে। কিন্তু হোটেলগুলোতে যা বিক্রি হয়, তা যেন বিষ! না মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি, না ঢেকে রাখা হচ্ছে খাবার। ডায়রিয়া, পেটের পীড়া আর ফুড পয়জনিং যেন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তবুও হলগুলোতে খাবারে নিম্নমান এবং ক্লাস পরীক্ষার চাপে এই খাবার অবহেলা করার সুযোগ নেই। দীর্ঘ সময় তা গ্রহণের ফলে বড় ধরনের শারীরিক জটিলতার সম্ভাবনাও রয়েছে। এইসব বন্ধ করতে হলে প্রশাসনের তৎপরতা বাড়াতে হবে। 

আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান বলেন, দাম অনেক বেশি কিন্তু মান এতো খারাপ যে মুখে তোলার মতো না। যা বাহিরেও একই দামে পাওয়া যায়। আবার মাঝে মাঝে পচা সবজি দিয়েও রান্না করে হয়।

উত্তর ছাত্রাবাসের আরেক এক শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান বলেন,তারা যে পরিবেশে খাবার পরিবেশন করে তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। অন্য কোথাও ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে এখানেই খেতে হচ্ছে আমাদের।  

সিসিএসের সহ সভাপতি জিহাদ হোসেন বলেন,খাবারের মান ঠিক রেখে সবার সম্মতিক্রমে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। দোকানে নির্ধারিত দামের লিস্ট টানানো হয়েছে। কিন্তু আমাদের কাছে ছাত্রদের পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ এসেছে, তারা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম রাখে। তাছাড়া ভুট্টো মামা সরাসরি বলেছে আমি এখানে  ব্যবসা করতে এসেছি। শিক্ষার্থীদের উপকার করতে আসেনি। তাই আমার শিক্ষার্থীদের উপকারের থেকে ব্যবসাটা জরুরি। আমাদের করা নীতিমালার অবনতি হলে আমরা প্রশাসনকে জানাই বিষয়টি। কলেজ প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে তারা এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিবে। তাদের মধ্যে ধীরগতি পরিলক্ষিত হলে আমরা একাধিকবার জানিয়েছি। কলেজ প্রশাসনকে অবগত করার পরও এটার কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তবে আমাদের সংগঠনের সক্রিয়তা এখনো বজায় আছে।  কিন্তু এ ক্ষেত্রে কলেজ প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকায় দূর্বলতা লক্ষ্য করছি।

অভিযুক্ত দোকানদার মানিক (ভুট্টো) বলেন, আমি সব সময় পরিষ্কার থাকার চেষ্টা করি। আপনারা যদি প্রমাণ করতে পারেন তাহলে ব্যবস্থা নিবেন। স্যার যে মূল্য তালিকা দিয়ে গিয়েছিল আমি তা মেনে চলছি। 

এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, সিসিএস এর মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে থাকি।  আমরা কয়েকবার তাকে সতর্ক করেছি। পরবর্তীতে যদি আমরা এমন কোন তথ্য প্রমাণ পাই তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: