• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

গবিতে গণধর্ষণ ও র‍্যাগিং: ৫ শিক্ষার্থী স্থায়ী বহিষ্কার, ১৭ জন শাস্তির আওতায়

প্রকাশিত: ১৯:০৯, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

আপডেট: ১৯:০৯, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
গবিতে গণধর্ষণ ও র‍্যাগিং: ৫ শিক্ষার্থী স্থায়ী বহিষ্কার, ১৭ জন শাস্তির আওতায়

সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) আইন বিভাগের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও শের আলীকে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত ৫ শিক্ষার্থীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ৫ জনকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার ও ১২ জনকে জরিমানা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

বৃহস্পতিবার (০৪ ডিসেম্বর) রাত আটটায় দীর্ঘ বৈঠক শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান। 

গণধর্ষণের ঘটনায় স্থায়ী বহিষ্কৃতরা হলেন—আইন বিভাগের ৩২তম ব্যাচের দেলোয়ার ভূঁইয়া, তাজুল ইসলাম তাজ, শ্রাবণ সাহা এবং ২৭তম ব্যাচের অন্তু দেওয়ান। র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় স্থায়ী বহিষ্কৃত হন অন্তু দেওয়ান ও তরিকুল ইসলাম। অর্থাৎ অন্তু দেওয়ান দুই অভিযোগেই দায়ী সাব্যস্ত হয়েছেন।

র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে এক সেমিস্টার (ছয় মাস) বহিষ্কার করা হয়েছে—৩২তম ব্যাচের আশরাফুল ইসলাম, নাইম, মেহেদী হাসান, সাজ্জাদ বাবর এবং ২৮তম ব্যাচের মেহেদী হাসান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকায় ১২ শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। তারা হলেন- আসিফ রহমান লাবিব, লতিফুল হক লোবান, সামিউল ইসলাম, আলিমুল ইসলাম নাহিদ, মোহাম্মদ ওয়ালিদ প্রধান, আসাদুর, শ্রাবণ সাহা, দেলোয়ার ভূঁইয়া, ইমামুল মোরসালিন, কাজল, খন্দকার জিহাদ হাসান ও আইয়াজ হক। 

ঘটনাগুলো সামনে আসার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসজুড়ে। প্রশাসনের “দীর্ঘদিনের উদাসীনতা ও অব্যবস্থাপনা”র প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সকালেই প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন। বেলা ১১টার দিকে ছাত্র সংসদ–গকসু ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে যায়। শিক্ষার্থীদের তীব্র স্লোগানে ক্যাম্পাস কেঁপে ওঠে—“বাহ্ ভিসি চমৎকার, ধর্ষকদের পাহারাদার”, “ধর্ষকদের ঠিকানা—এই ক্যাম্পাস হবে না”, “ফাঁসি চাই”, “লিমনের বিচার চাই।” আন্দোলনকারীরা পরে আইন বিভাগে গিয়ে শিক্ষক লিমন হোসেনের পদত্যাগ দাবি করেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ভুক্তভোগী ছাত্রী দীর্ঘ সময় ধর্ষণচক্রের হুমকির মুখে ছিলেন, অথচ প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের পক্ষে থানায় যাওয়ার ঘটনায় ভূমিকা নেওয়ায় আইন বিভাগের শিক্ষক লিমন হোসেনকে শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ করেন। একই সঙ্গে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর, আইন বিভাগের সভাপতি রফিকুল আলম, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা এবং লিমন হোসেনসহ তিন শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করেন।

সকালের উত্তেজনার পর দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গকসু ও গবিসাসের প্রতিনিধিদের নিয়ে জরুরি বৈঠক শুরু হয়, যা চলে রাত পর্যন্ত। দীর্ঘ বৈঠক শেষে স্থায়ী বহিষ্কার, সেমিস্টার বহিষ্কার ও জরিমানার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়।

গত ২ ডিসেম্বর রাতে আশুলিয়া থানায় গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। মামলায় বলা হয়, পিকনিকের কথা বলে তাঁকে ডেকে নিয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করা হয় এবং ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। পুলিশ পরে চারজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পাঠায়।

এর আগে ২৬ নভেম্বর শের আলীকে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে আগে ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছিল প্রশাসন। চলমান তদন্তের ভিত্তিতেই অন্তু দেওয়ান ও তরিকুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে, পাঁচজনকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার এবং বাকি অভিযুক্তদের  জরিমানা করা হয়েছে।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2