কোচিং বিতর্ক ভাঙলেন মেডিকেলে প্রথম হওয়া মীম নিজেই(ভিডিও)
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জাতীয় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মেয়ে সুমাইয়া মোসলেম মীম। লিখিত পরীক্ষায় সুমাইয়া মোসলেম মীম ৯২ দশমিক ৫ নম্বর পেয়েছেন। তার মোট নম্বর ২৯২ দশমিক ৫। মীমের বাবা খুলনার ডুমুরিয়া কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোসলেম উদ্দিন সরদার। মা কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট খাদিজা খাতুন।
এদিকে প্রথম হওয়ার ফল প্রকাশের পর খুলনার ৪ কোচিং সেন্টার মীমকে তাদের শিক্ষার্থী বলে দাবি করছে। বিষয়টি প্রমাণ করতে আজ মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুর থেকে মীমের সাথে একাধিক ছবি এবং ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। রেটিনা, মেডিকো, উন্মেষ এবং ডিএমসি মেডি ড্রিমার্স এ দাবি জানাচ্ছে।
এই বিতর্কের অবসান ঘটালেন মিম নিজেই। ফলাফল ঘোষণার পর বাবা-মাসহ মীম তার কোচিং সেন্টার ডিএমসি স্কলার মেডিকেলে যান। সেখানে বাংলাভিশনের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। এসময় এক প্রশ্নের জবাবে মিম বলেন, তিনি ডিএমসি’র স্টুডেন্ট। প্রথম থেকেই ডিএমসি স্কলার্সে পড়েছি। আর কোথাও ক্লাস করি নাই। শুধু মাত্র রেটিনাকে এক মাস এবং উন্মেষে ১৫ দিন মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিয়েছেন। এছাড়া আর কোথাও তাঁর কোনো ভর্তি নাই বলেও জানান তিনি।
সুমাইয়া মোসলেম মীম বলেন, ‘এত বেশি প্রত্যাশা ছিলো না। তারপরও দেশসেরা হওয়ায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। আমার ফলাফলের পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে আমার বাবা-মা। বিশেষ করে প্রতিদিন কেশবপুরে যাওয়া-আসা করা মায়ের জন্য ছিলো খুবই কষ্টের। আমার জন্য এই কষ্ট তিনি হাসিমুখে মেনে নিয়েছেন। ফলাফল পেয়ে তাদের মুখের হাসিই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’
মীম বলেন, ‘ছোটবেলায় চিকিৎসক হওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার ছিলো না। শুধু আম্মুর ইচ্ছার জন্যই মেডিকেলের পড়াশোনা করেছি। এখানে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি এটাই সবচেয়ে ভালো লাগার জায়গা। সবার আগে এখন একজন ভালো মানুষ হতে চাই। এরপর একজন ভালো চিকিৎসক হতে চাই। আমাদের সমাজের মানুষের একটা খারাপ ধারণা রয়েছে, চিকিৎসক মানেই কসাই। এই ধারণা থেকে মানুষকে ফিরিয়ে আনতে চাই।
পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মীম বলেন, সবার আগে কষ্ট করার মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে। এরপর ডাক্তার হওয়ার জন্য বুঝে পড়াশোনা করতে হবে। সবাই ভাবে মুখস্থ করতে হবে। কিন্তু না, যা পড়ছো সেই বিষয়টা পরিষ্কার বুঝতে হবে। মুখস্ত করলে পরদিন ভুলে যেতে পারো। কিন্তু বুঝে পড়লে সেটা কাটিয়ে ওঠা যায়। কোচিংয়ের অনেক পরীক্ষায় ঠিকমতো প্রস্তুতি নিতে পারতাম না। তারপরও বুঝে পড়ার কারণে ফলাফল ভালো হতো।’
তাঁর এই কৃতিত্বের জন্য সর্বপ্রথম মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এরপরে বাবা-মা, শিক্ষকদের স্মরণ করেন। এছাড়া ভর্তি সময়ে ডা. সিয়ামের গাইডলাইনকে তুলে ধরেন।
বিভি/এনএম
মন্তব্য করুন: