• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ১১ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

জবি ছাত্র শিবির: গ্রুপিং-কোন্দলে দল ছেড়েছে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী

অপূর্ব চৌধুরী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১৬:২৫, ২০ মার্চ ২০২৩

আপডেট: ১৬:২৬, ২০ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
জবি ছাত্র শিবির: গ্রুপিং-কোন্দলে দল ছেড়েছে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী

দলীয় অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং-কোন্দলে গত এক বছরে রাজনীতি ছেড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র শিবিরের প্রায় অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী। এদের মধ্যে অধিকাংশ সাথী ও সদস্য পর্যায়ের নেতাও রয়েছেন। আঞ্চলিকতা ও সিন্ডিকেটের প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন বলেও জানান এদের একটি অংশ।

জানা যায়, ২০০৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ২০০৬ সাল থেকেই কেন্দ্রের সুপার ইউনিট হিসেবে কাজ করে আসছে ছাত্র শিবিরের এই ইউনিট। এই পর্যন্ত ১২ জন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কেন্দ্র থেকে বিদায় নিয়েছেন। ২০১২-১৩ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি ছিলেন শাহিন আহমেদ খান। বর্তমানে পল্টন থানা জামায়াতে ইসলামীর আমীরের দায়িত্বে আছেন তিনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের ‘আধ্যাত্মিক গুরু’ এই নেতা। খান সাহেবকে ‘খুশি’ করেই শীর্ষ পদ ভাগে আনেন এই ইউনিটের নেতারা। 

২০২০-২১ সালে পরিসংখ্যান বিভাগের আমজাদ হোসেন (ছদ্মনাম: আবির আব্দুল্লাহ) সভাপতি হওয়ার পর থেকেই পালটে যেতে থাকে নেতাকর্মীদের অবস্থা। ‘জান্নাত’ লাভের আশায় সংগঠনে যুক্ত হয়ে জড়িয়ে পড়েন সিন্ডিকেট আর সিনিয়র ভাইদের আস্থাভাজন হওয়ার নেশায়। সর্বশেষ ২০২০-২১ সাল থেকে গণহারে নেতাকর্মীরা সংগঠন ছাড়তে থাকে। 

এর মধ্যে সর্বশেষ ২০২২-২৩ সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান মো. মিকদাত (ছদ্মনাম: সুহাইল) এবং সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পান মো. ইকবাল (ছদ্মনাম: সাফওয়ান)। মিকদাতের বাড়ি খুলনা ও ইকবালের বাড়ি বরিশাল। দুই নেতা দায়িত্বে আসার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ১৯টি থানা ইউনিটের নেতৃত্বে অস্বাভাবিক পরিবর্তন নিয়ে আসেন। যেখানে খুলনা ও বরিশাল বেল্টের কর্মীদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা হয়। এই দুই নেতার তোপে বায়তুলমাল সম্পাদক, দাওয়াহ সম্পাদক, অফিস সম্পাদক ও একাধিক সেক্রেটারিয়েট সদস্য সহ চলতি বছরে দল ছেড়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের বর্তমান সভাপতি মো. মিকদাদের উত্থানেও রয়েছে প্রশ্নবিদ্ধ পরিবর্তন। ২০২০ সালে কেন্দ্রীয় সহকারী বিতর্ক সম্পাদক থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান তিনি। তৎকালীন সভাপতি আমজাদ হোসেনের একান্ত চাহিদায় তাকে কেন্দ্র থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দায়িত্বে নিয়ে আসা হয়। দায়িত্বে সাংগঠনিক সম্পাদক থাকলেও একই সাথে তিনি প্রচার, মিডিয়া ও অফিস সম্পাদকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। বছর ঘুরতেই শাখার সেক্রেটারির দায়িত্ব নেন মিকদাদ। তৎকালীন সভাপতি সাজ্জাদ হোসাইন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে পুরো ইউনিটের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় মিকদাদের হাতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মী জানায়, ছাত্র শিবির বলতে গ্রামের মানুষ ও সাধারণ ছাত্ররা যে পবিত্র জিনিসকে বুঝে সেটার ছিটেফোঁটাও এখানে নেই। বিশেষ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা চলে সিন্ডিকেট আর আঞ্চলিকতার উপর ভর করে। সিন্ডিকেটের বাইরের কেউ ভালো কাজ করতে গেলে তাকে সিস্টেমে মাইনাস করে দেয়া হয়। দীর্ঘদিন এমন জুলুমের শিকার হয়ে আমাদের মধ্যে অনেকেই সংগঠন ছেড়ে দিয়েছে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি মো. ইকবাল বলেন, এসব বিষয় সত্য না। অন্য কোন ইকবাল হতে পারে এটা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো. মিকদাত বলেন, আমি এখন ভরা মজলিশে আছি, এমন পরিবেশে এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া কঠিন। এসব অভিযোগ মিথ্যা। যদি আমি ভুল হয়ে থাকি আল্লাহ আমাকে পাকড়াও করবেন।

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন: