• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহড়া

রুবেল হোসাইন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ০১:০২, ২৩ মার্চ ২০২৩

আপডেট: ০১:১১, ২৩ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহড়া

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রকাশ্যে মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র রড, রামদা, ছুরি, লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দিয়েছেন।

বুধবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও জাবি শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আহমেদ গালিবকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের একদল শিক্ষার্থী মারধর করার জের ধরেই রাতে এ মহড়া দিয়েছেন তারা।

এ সময়, অস্ত্রধারীরা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বটতলায় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাদের বাধা দেন।

সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ঘটনার ভিডিও ধারণকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিকের দিকে তেড়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় একুশে টেলিভিশনের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি জুবায়ের আহমেদকে হেনস্তা করেন তারা।

এভাবেই অস্ত্র হাতে মহড়া দেয় ছাত্রলীগের কর্মীরা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেনিন মাহবুব, সহ-সভাপতি হাসান মাহমুদ ফরিদ ও সজিবের ইন্ধনে সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে যান অন্য নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা সাংবাদিক জুবায়েরের গায়ের শার্ট ছিঁড়ে পেলেন।

এ বিষয়ে জুবায়ের আহমেদ বাংলাভিশনকে বলেন, ‘আমি মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহড়ার ভিডিও করছিলাম। এসময় তাদের একজন বলে উঠলো ওই দেখ, সাংবাদিক ভিডিও করছে ওরে ধরে মার। তখন তাদের কয়েকজন আমার গায়ে হাত তোলে। একজন লাঠি দিয়ে বাড়ি দেয়।'

বটতলায় প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিলেন মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে এসময় রবীন্দ্র চত্বরে অবস্থান নেয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের নেতাকর্মীরা। পরে মীর মশাররফ হোসেন হলের উত্তেজিত নেতাকর্মীরা ফিরে যাওয়ার পর সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন উপস্থিত হন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘ক্যাম্পাসে দেশীয় অস্ত্র থাকলে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তো একরকম শঙ্কা তৈরি হয়। আমরা এসবের বিরুদ্ধে রয়েছি। এক্ষেত্রে হল থেকে এসব নির্মূলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করবো। আর ছাত্রলীগের কেউ অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল হাসান বাংলাভিশনকে বলেন, ‘আজকের ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত। মশাররফ হোসেন হলের নেতাকর্মীদেরকে বলেছি, তাদের যে ছাত্রকে মারধর করেছে তারা অভিযোগ পত্র দিক। অভিযোগ দিলে আমরা শোকজ পাঠাবো এবং প্রশাসনিকভাবে এর ব্যবস্থা নিব। এতে তারা আশ্বস্ত হয়ে ফিরে যায়।’ 

সাংবাদিক হেনস্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকের সাথে যেটা ঘটেছে সেবিষয়েও অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এর আগে, গত রবিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় সাভারে অবস্থিত ‘সুলতান ডাইন’ রেস্টুরেন্টে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে মশাররফ হোসেন হলের কয়েকজন নেতাকর্মীর সাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরোধ বাধে। এর জেরে ওইদিন রাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় মারধর করে মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীরা। 

এ ঘটনায় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ গালিব, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তানভীর ইসলাম, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাব্বির হাসান সাগর ও খালিদ হাসানসহ অজ্ঞাত ৪০ জনের বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মাহফুজুর। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা এবং ভুক্তভোগী ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: