আরশ খান কাণ্ডে রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানালেন অভিনেত্রী চমক
 
								চমক ও আরশ খান
গত কয়েক দিন ধরে আলোচনায় আছেন অভিনেতা আরশ খান ও অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক। শুটিং সেটে নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীদের থেকে দুর্ব্যবহার ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ আনেন এই অভিনেত্রী। অবশেষে সাংগঠনিক সমাধান হয়েছে।
ঘটনার সার্বিক বিশ্লেষণ শেষে অভিনয়শিল্পী সংঘের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন চমক। তাকে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
রায় নিয়ে অভিনেত্রী চমকের প্রতিক্রিয়া জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বাংলাভিশনকে তিনি বলেন, ‘আমি চাই না এ নিয়ে আর কথা বাড়ুক। যেহেতু এটা পুরুষ শাসিত সমাজ, তাই আমি যাই বলি না কেন সেটা অন্যদিকেই যাবে।’
অভিনয়শিল্পী সংঘের রায়ের পর নিজের ফেসবুক পেজে পরপর দুইটি ইঙ্গিতপূর্ণ স্ট্যাটাস দিয়েছেন চমক। যেখানে পরোক্ষভাবেই অভিনয়শিল্পী সংঘের রায়কে কটাক্ষ করেছেন এই অভিনেত্রী।
এক স্ট্যাটাসে চমক লেখেন, ‘বাংলাদেশ একদমই একটি নারীবাদী দেশ। এখানে মেয়েরা সর্বস্থলে সবসময় নিরাপদে এবং নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারে। কোথাও কারও কাছে কিংবা কোনও পরাশক্তি বা ষড়যন্ত্রের কাছে মাথা নত করতে হয় না। নিরাপদে নির্ভিক থাকুক প্রতিটি মেয়ে।’
এর কিছু সময় আগে অপর আরেকটি স্ট্যাটাসে কবিতার ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করেছেন চমক। অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘দিন শেষে সব দোষ নন্দ ঘোষের। আনন্দবাবু তো তুলসীপাতা, তাও আবার ধোয়া, যায় না তাকে ছোঁয়া! নন্দ ঘোষের মুখে তালা, ভয়-ভীতিও আছে, পাছে সবাই করে ছি-ছি তারে, কেটে দেয় তার ডালপালা যদিও একটু বাড়ে! থাক, এবার না হয় বাঁচুক প্রাণ, কে নেবে, যদি রাখে ঈশ্বর মানীর মান! দুষ্ট লোক এবার দিলেও ফাঁকি, মনে রেখো, তার হিসেব রইলো শ’খানেক বাকি!’
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে এ সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে অভিনয়শিল্পী সংঘের প্যাডে। যেখানে বলা হয়েছে, শুটিং সেটে উত্তেজিত অবস্থায় চমক যে আচরণ করেছেন, যার কারণে সেটে পুলিশ আসা, শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং পরিচালক আর্থিক ক্ষতি ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এছাড়া জ্যেষ্ঠ অভিনেতা ফখরুল বাশার মাসুম এবং নির্মাতা আদিফ হাসানসহ ইউনিটের সবার সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা অভিনেত্রী চমকের ভুল ছিল এবং পরবর্তীতে অভিনেতা আরশ খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইন্টারভিউতে যে অভিযোগ এনেছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন প্রতীয়মান হয়। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় চমকের ব্যাপারে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি। এগুলো হলো-
১. ক্ষতিগ্রস্ত নাটকের প্রযোজক, পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ অভিনেতা ফখরুল বাশার মাসুমসহ সকলের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করবেন ও ক্ষমা চাইবেন।
২. ‘শ্বশুর বাড়ির প্রথম দিন’ নাটকটি নির্মাণ সম্পন্ন করতে বাকি যে অর্থের প্রয়োজন হবে, তা ক্ষতিপূরণ হিসেবে চমক প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন।
৩. অভিনেতা আরশ খান ও পরিচালক আদিফ হাসানের বিরুদ্ধে চমক থানায় যে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তা অনতিবিলম্বে নিষ্ক্রিয় করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
৪. ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না, যদি ঘটে তবে সংগঠন কর্তৃক যে কোনও শাস্তি গ্রহণ করতে তিনি বাধ্য থাকবেন বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করবেন। আগামী ৬ মাস তিনি সকল সংগঠনের পর্যবেক্ষণে থাকবেন। তার বিরুদ্ধে কোনও প্রকার অভিযোগ যেন না আসে, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকবেন।
সভা শেষে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হন রুকাইয়া জাহান চমক। সেই সঙ্গে ফখরুল বাশার মাসুম ও আরশ খানের প্রতি দুঃখপ্রকাশ করেন। এছাড়া ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ করবেন না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার দেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন টেলিপ্যাবের সাধারণ সম্পাদক সাজু মুনতাসির, কার্যনির্বাহী সদস্য বাবুল আহমেদ, ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি অনন্ত হীরা, সহ-সভাপতি আশরাফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সাগর, অভিনয়শিল্পী সংঘের সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান মিলন, সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজনীন হাসান চুমকিসহ আরও অনেকে।
বিভি/জোহা
 
						





 
							
							 
						 
 
										 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							 
							
 
											 
											 
											 
											
মন্তব্য করুন: