• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

চোখে কাজল, নখে নেলপলিশ, সুন্দরী প্রতিযোগিতায় হাতি!

হাফিজুল ইসলাম

প্রকাশিত: ১৯:২৯, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩

ফন্ট সাইজ
চোখে কাজল, নখে নেলপলিশ, সুন্দরী প্রতিযোগিতায় হাতি!

মাঠের চারপাশে জনতার ভিড়। চলছে বিশেষ এক সুন্দরী প্রতিযোগিতা। চোখে আই-লাইনার নখে নেইল পলিশ। সেজেগুজে অংশ নিয়েছে একদল মডেল। আছেন বিচারকও। তবে, এই সুন্দরী প্রতিযোগিতা মানুষের নয়। বরং হাতির! নেপালের দক্ষিণ তরাইয়ের একটি পর্যটন শহর সৌরাহা। এখানেই প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় হাতি উৎসব। 

ছাগল, উট বিড়ালের পর এবার হাতির সুন্দরী প্রতিযোগিতা। শুনতে সাধারণ মনে হলেও বেশ জাঁকজমক নিয়েই আয়োজন করা হয় এই অনুষ্ঠান। হাতি উৎসবে শুধু সুন্দরী প্রতিযোগিতা হয়, বিষয়টি কিন্তু তেমন না। হাতিরা অংশ নেয় ফুটবল খেলায়। দিতে হয় রিলেরেসও। এমনকি পোলোও খেলে হাতি। 

এখানে সেরা হাতির তকমা পাওয়া মোটেও সহ জনা। পার হতে হয় অনেক ধাপ, আর জানতে হয় নানা কায়দা কসরত। কীভাবে সেরা হাতি নির্বাচন করা হয়, বিষয়টি সম্পর্কে জানালেন চিতওয়ানভ্যালির এক যুগের বেশি পুরনো হাতি সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিচারক বিনোদতি মালসিনা। তিনি বলেন, শুধু শারীরিক সৌন্দর্য দেখেই সেরা হাতি ঘোষণা করা হয় না। 

আলাদা করে নয়টি বিষয় বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো, হাতিটির দেহের গঠন কেমন। মাহুত কীভাবে হাতিকে সাজিয়েছে, সেই বিষয়টিও ভালোভাবে দেখা হয়। পায়ের আঙ্গুলে ভর করে হাতিটি হাঁটতে পারছে কিনা, মালিকের কতোটুকু বাধ্যগত আর নখ ও শরীরের পরিচ্ছন্নতা কেমন- বিবেচনা করা হয় সবকিছুই। 

রাপ্তি নদীর ধারে সৌরাহার বিখ্যাত সূর্যাস্ত পয়েন্ট থেকে শুরু হয় হাতির সুসজ্জিত কুচকাওয়াজ। ঢাল বেয়ে প্রায় এককিলোমিটার দূরের সমতল মাঠে নেমে যায় হাতির দল। চলে গান আর নাচের অনুষ্ঠান। বিদেশি পর্যটকদের পাশপাশি স্থানীয়দের কাছেও এই আয়োজন বেশ জনপ্রিয়।

মাহুতদের অনেকেরই নিজস্ব হাতি নেই। তবে, হাতি পরিচালনার সাথে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম তারা জড়িত। যারা হাতির মালিক না, মজুরির বিনিময়ে তারা হাতিপালেন। হাতিকে মাল-টানা শেখানো আর চোখ জোড়ানো কসরতের প্রশিক্ষণ- সবকিছু করেন মাহুতেরাই।

হাতির যত্নআত্তি নিয়ে কথা বলেন মাহুত দিলীপ মাহাতো। তিনি জানান, হাতির যত্ন নেয়া বেশ কঠিন কাজ। মাহুতদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়। প্রতিদিন সকাল ৫ টায় ঘুম থেকে উঠে কাজে নামেন তারা। হাতির ঘর পরিষ্কার করা শেষে বন থেকে হাতির খাবার জোগাড় করার জন্য বেরিয়ে পড়েন। সকালে জোগাড় করা খাদ্যশস্য সন্ধ্যায় খেতে দেয়া হয়। কাজ শেষে সকাল ৮ টার মধ্যে বাড়ি ফিরে হাতিরা নিজেদের পছন্দের খাবার খায়।

কোভিড মহামারীর আগে বাৎসরিক হাতি উৎসব নিয়মিত উদযাপিত হতো।টানা তিনবছর বন্ধ থাকার পর জনপ্রিয় উৎসবটি পুনরায় চালু হলো। এর আগে ১৬ বছর ধরে এই আয়োজন হয়ে এসেছে। তবে, প্রাণী অধিকারকর্মীদের মনোভাব সম্পূর্ণ আলাদা। তারা মনে করেন, এমন আয়োজন আনন্দের নয়। বরং হাতির জন্য একটি নির্যাতনের উপলক্ষ্য।

বন উজাড় করে প্রতিনিয়ত ধ্বংস করা হচ্ছে প্রাণীদের বাসস্থান। তাই আবাসস্থল ও খাদ্যের খোঁজে হাতির পাল লোকালয়ে চলে আসছে। নেপালের হাতি সুন্দরী প্রতিযোগিতা সাময়িক আনন্দের উপলক্ষ্য হতে পারে। কিন্তু, বন্যপ্রাণী গবেষকগণ মনে করেন, প্রাচীন এই প্রাণীকূল সংরক্ষণের কোন বিকল্প নেই। 

বিভি/এইচআই/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2