• NEWS PORTAL

  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

নাহিদ রানা : একসময় হয়তো গ্রেটদের পাশে দাঁড়াবে

নাজমুল আবেদীন ফাহিম

প্রকাশিত: ১৫:০১, ২৩ মার্চ ২০২৪

ফন্ট সাইজ
নাহিদ রানা : একসময় হয়তো গ্রেটদের পাশে দাঁড়াবে

বেশ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় ছিলাম বাংলাদেশ এবং শ্রীলংকার প্রথম টেস্ট ম্যাচটি নিয়ে। এই ফরম্যাটটি  আমার এমনিতেই পছন্দের। তার পাশাপাশি সাদা বলের ক্রিকেটের পর শ্রীলংকার বিরুদ্ধে লাল বলের ক্রিকেটে আমরা কেমন করি সেটিও দেখার ইচ্ছে কম নয়। তবে এইসব ছাড়িয়ে আজ আমার কাছে সবচাইতে বড় আগ্রহের কারন ছিল নাহিদ রানা। নাহিদ রানার টেস্ট অভিষেকের ম্যচ এটি।


এতদিন দুর থেকে শোয়েব আখতার, ব্রেট লী, শন টেইটদের দেখেছি এবং মুগ্ধ হয়েছি। দেখেছি কিভাবে তারা পৃথীবির বাঘা বাঘা সব ব্যাটারদের মনে ভিতি ছড়ায়। তাদের বলের আঘাতে কিভাবে ছিটকে পড়ে স্টাম্প গুলো। কেমন করে তারা বিপক্ষ দলকে গুড়িয়ে দিয়ে জয় ছিনিয়ে নেয়। দেখেছি এবং নিজেদের নেই বলে আক্ষেপ করেছি। এক ধরনের হিনমন্যতায়ও ভুগেছি। 
এতদিন জেনেছি এবং খানিকটা মেনেও নিয়েছিলাম  যে সত্যিকার ফাস্ট বোলিং বলতে যা বোঝায় তা আমাদের জন্য নয়। আমাদের শারিরিক গঠন, পরিবেশ, খাদ্যাভাস, এমনকি মানসিকতা ইত্যাদির কোনটিই এর পূর্বশর্ত পূরন করে না। অথচ, কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কেবল মাত্র তীব্র আকাংখাকে পুঁজি করেও যে কংক্রিটের কর্কশ কাঠিন্য ভেদ করে সবুজ পাতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে সেটি বোধহয় আমরা ভুলেই গেছি। সাহস করে বিশ্বাস করতে পারিনি যে আঠারো কোটি মানুষের দেশ এই বাংলাদেশের কোথাও না কোথাও কোন একজন সেই সম্ভাবনা নিয় বেড়ে ঊঠছে। প্রয়োজন শুধু তাকে খুঁজে বের করার আর খানিকটা সমন্বয়ের। 


নাহিদ রানাকে প্রথম দেখলাম সদ্যসমাপ্ত বিপিএলে। একেবারে তরুন, সুঠাম, দীর্ঘদেহি। সহজ রান আপ এবং সহজ বল ছোড়ার ভঙ্গি। দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। কিন্তু ভুরু কুচকে উঠল যখন সাঁই করে বলটা চোখের পলকে ব্যাটেরকে পার হয়ে উইকেট কিপারের হাতে জায়গা করে নিল। তারপর ৪৬, ৪৭, ৪৮ থেকে শেষ হল ঘন্টা প্রতি ১৪৯.৭ কিমি এ গিয়ে। বয়সের তুলনায় দারুন। 


বহু বছর আগে বিমল চন্দ্র তরফদার সাফ গেমসের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সোনার পদক জিতেছিল। তার কিছুদিন পর ১০০ মিটার সাঁতারে সোনার পদক জিতেছিল কারার মিজান। এর পর আরও কয়েকজন। আমাদের এই দেশের মাটিতেই কিন্তু এদের বেড়ে ওঠা। এই ধরনের স্বল্প দুরত্ব্যের ইভন্টে ভাল করার পূর্বশর্ত স্পিড এবং পাওয়ার। ফাস্ট বোলিংও কিন্তু তাই, স্পিড এবং পাওয়ার। এর অর্থ হচ্ছে ‘কাচামাল’ বলতে যা বেঝায় তা আমাদের আছে। সমস্যা হচ্ছে সেই কাঁচামাল কে প্রক্রিয়াজাত করনে এবং চুড়ান্ত রুপ দেয়ায়। এটি কিন্তু আমাদের সার্বিক খেলাধুলারই চিত্র। 
নাহিদ রানার যাত্রার কেবল মাত্র শুরু। ধীরে ধীরে ওর অভিজ্ঞতা বাড়বে। শরীর, মন আরও পরিনত হবে। বাড়বে গতিও। একসময় হয়তো গ্রেটদের পাশে এসে দাঁড়াবে। তবে একই সাথে কিন্তু তৈরী হবে ইন্জুরির সম্ভাবনাও। আর তাই, এখন থেকেই সঠিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে ওকে গড়ে তুলতে হবে। ওর আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া খেলায় কোথায় কখন বিরতি দেয়া প্রয়োজন সেটিই হয়ত সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। পাশাপাশি প্রশিক্ষন, খাদ্যাভাস, ব্যাক্তিগত লাইফস্টাইল এবং শৃক্ষলাবোধ এসব তো আছেই। আগামি তিনটি বছর যদি আমরা ওর সঠিক পরিচর্যা করতে পারি তাহলে রানাই হয়তো আমাদের অনেক প্রাপ্তির, অনেক আনন্দের কারন হবে। ওকে দেখে তৈরী হবে এক নতুন প্রজন্ম। 
নাহিদ রানার জন্য অনেক শুভকামনা।

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2