রমজানে ফেসবুকজুড়ে বয়কটের ডাক, যুক্ত হলো গরুর মাংসও
দ্রব্যমূল্য নিয়ে বেশ জোরেশোরেই আওয়াজ চলছে দেশজুড়ে। সাধারণ মানুষ তো সামাজিক মাধ্যমে রীতিমত সিন্ডিকেট ভাঙতে বয়কটের ডাক বারবার দিয়েছে। এবার যেন কিছুটা সফলই হয়েছে তারা। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর কমেছে অনেক পণ্যের দাম। এবার সেই বয়কটের তালিকায় আসছে গরুর মাংস।
চলুন দেখে আসি সামাজিক মাধ্যমে বয়কটের ডাকগুলো কেমন ছিল?
আহমেদ তাওসিফ সাদের লেখা স্ট্যাটাসটি সবচেয়ে বেশি ভাইরাল হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘এবারের রমজানটা একটু ভিন্ন। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়াতে ভোক্তারা এক হওয়াতে ব্যবসায়ীরা কতটা কোণঠাসা হয়েছে ভোক্তা সিন্ডিকেট। বয়কট এর শক্তি দেখুন
১০০ টাকার পানীয় ৬০ টাকা
৬০-৮০ টাকার বেগুন ২০-৪০ টাকা
৮০/১০০ টাকার লেবুর হালি ৩০ টাকা
৮০/১০০ টাকা কেজির তরমুজ ৫০ টাকা কেজি।
১১০ টাকা কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকা।
আরও পড়ুন: বাজারে সিন্ডিকেট বলে কিছু নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী
দোকানে দোকানে অনেক বিদেশি পণ্য অবিক্রীত। দাম কমিয়েও বিভিন্নন আইটেম বিক্রিতে ভাটা। তরমুজ বিক্রেতার মাথায় হাত। বেগুন, ধনিয়া পাতা, পুদিনা পাতা ফেলে দিতে হচ্ছে সব্জী বিক্রেতাদের।
অপেক্ষা করুন, আরও কমবে ইন শা আল্লাহ। সবাই এক হলে দাম থাকবে নাগালের ভেতর ইন শা আল্লাহ। মনে রাখবেন, ভোক্তা না থাকলে ব্যবসায়ীরা কার কাছে পন্য বিক্রী করবে? তাই ব্যবসায়ী না ভোক্তাদের দ্বারাই বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। একটু সচেতন হন। যেই জিনিস এর দাম বাড়বে, তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিন। যেই জিনিস আপনার বিশ্বাস এর সাথে যায় না। বাদ দিয়ে দিন। এটাই আসল নিয়ন্ত্রণ।’
এদিকে বিভিন্ন পণ্য বয়কটের ডাক দিয়ে যখন মূল্য নিয়ন্ত্রণে এসেছে তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গরুর মাংস বয়কটের ডাক দিয়েছে সাধারণ মানুষ। কারণ, রোজার শুরু থেকেই গরুর মাংসের দাম বেড়েই চলেছে। প্রথমদিকে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি থাকলেও শুক্রবার (২৯ মার্চ) তা ৭৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে, গত ১৫ মার্চ গরুর মাংসের দাম ৬৬৪ টাকা বেঁধে দিয়েছে সরকার। তাতে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই মাংস ব্যবসায়ীদের।
যখন দাম বেড়েই চলছে তখন এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে জনগণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজে গরুর মাংস বয়কটের ডাক দিয়েছেন নেটিজেনরা। এছাড়া হাজার হাজার বাংলাদেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের ফেসবুকের টাইমলাইনে কয়েকটি পোস্ট শেয়ার করছেন। যা রীতিমত ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া একটি পোস্ট হবহু তুলে ধরা হলো-
তরমুজের ভাব বেড়েছিল আমাদের আম জনতার বয়কটে তার দাম এখন হাতের নাগালে। এভাবে গরুর মাংসও খাওয়া বাদ দিন,বয়কট করুন ১ বা ২ বা ৩ মাস। দেখবেন, সেটাও হাতের নাগালে চলে আসবে। ক্রেতা না কিনলে দাম বাড়িয়ে কয়দিন কাটা গরুর মাংস রাখবে ফ্রিজে! কম দামে ক্রেতা না কিনলে কতদিন চড়া দাম হাকাবে! ক্রেতাই যদি না থাকে কিসের সিন্ডিকেট! আমরা সব চাইলেই পারি! লাগবে শুধু একতা! চলেন, তরমুজের পরে এবারে গরুর মাংসের দাম কমাই।
আরও পড়ুন: বাজার সিন্ডিকেটকে লালন-পালন করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
ভাইরাল হওয়া আরেকটি পোস্ট, ‘আমি গরুর মাংস কিনলাম। বলল যে, দেশের মানুষ ভাত পায় না, গরুর মাংস কেনে। গরুর মাংসের ম্যালা দাম, আসুন গরুর মাংস বয়কট করি। খামারিদের এই সিন্ডিকেট ভাঙা গেলে ৫০০ টাকায়ও গরুর মাংস কিনতে পারতো ক্রেতা সাধারণ; আবারও মাসে অন্তত একবার হলেও গরুর মাংসের স্বাদ নিতে পারতো মধ্যবিত্ত পরিবার।’
এদিকে রমজানজুড়ে বিভিন্ন ব্যক্তি উদ্যোগে অল্প দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। যার মধ্যে আলোচিত ব্যবসায়ী খলিল একজন। তিনি ৫৯৫ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করেন। আর তিনি জানিয়েছিলেন ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশের অনুমতি দিলে দেশে ৫০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করা সম্ভব হবে। খলিল ছাড়াও ৬০০ টাকার মধ্যে মাংস বিক্রি করছেন উজ্জ্বল ও রতন।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: