• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

Drama: Jamai Bou Chor
Drama: Jamai Bou Chor

‘বিপদের মুখেও ছেলে সত্য কথা বলেছে, এমন ঘটনায় কেউ মিষ্টি বিতরণ করেনি’

প্রকাশিত: ১৪:১৬, ১৫ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১৪:১৭, ১৫ জুলাই ২০২৫

ফন্ট সাইজ
‘বিপদের মুখেও ছেলে সত্য কথা বলেছে, এমন ঘটনায় কেউ মিষ্টি বিতরণ করেনি’

ভালো কাজে উৎসাহ প্রদানে মিষ্টি বিতরণের তেমন কোনো নজির নেই বলে মন্তব্য করেছেন শায়েখ আহমদুল্লাহ। সম্প্রতি দেশজুড়ে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া উচ্ছ্বাসের সমালোচনা করে নিজের ফেসবুক পেইজে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।

শায়েখ আহমদুল্লাহ বলেছেন, প্রতি বছর এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টকে কেন্দ্র করে যে লাগামহীন উন্মাদনা দেখা যাচ্ছে, তা আমাদেরকে শঙ্কিত ও ব্যথিত করছে। পরীক্ষায় ভালো ফল করা নিঃসন্দেহে আনন্দের ঘটনা। কিন্তু সেই আনন্দের উদযাপন নির্দিষ্ট মাত্রার ভেতর হওয়াই শোভনীয়।

এরপর গণমাধ্যমে ফলাফল প্রকাশের তৎপরতারও সমালোচনা করেন তিনি। লেখেন, দেশের মিডিয়াগুলোও এই পরীক্ষাকে ঘিরে যেভাবে সংবাদ কাভারেজ দেয়, অন্য কোনো দেশে এর নজির আছে বলে আমাদের জানা নেই।  এই অতি উন্মাদনার কারণেই পরীক্ষায় যারা ভালো করতে পারে না, তাদের ভেতর অপরাধবোধ তৈরি হয়, তারা ডিপ্রেশনে চলে যায়। এক পর্যায়ে অনেকে আত্মহত্যার মতো ভয়ংকর সর্বনাশা পথ বেছে নেয়।

এরপর শায়েখ আহমদুল্লাহ বলেছেন, এই শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার পেছনে আমাদের মিডিয়ার যেমন দায় আছে, তেমন দায় আছে সন্তানদের প্রতিযোগিতার বাজারে ছেড়ে দেয়া মা-বাবাদেরও। 

পোস্টের এক পর্যায়ে ইহজাগতিক কর্মকাণ্ড ও ভোগবাদের সমালোচনা করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ। তিনি লিখেছেন, সামগ্রিক জীবনের সাফল্যের তুলনায় একটি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা আঁচড় রেখে যাওয়ার মতো বড় ঘটনা নয়। তারপরও এই উন্মাদনা প্রমাণ করে, আমরা দিন দিন খুব বেশি ভোগবাদী, বস্তুবাদী এবং পরকাল ভোলা ইহজাগতিক মানুষ হয়ে উঠছি। 

এরপর ভালো কাজে উৎসাহ দিতে মিষ্টি বিতরণ করা হয় না এমন মন্তব্য করে সমালোচনা করেন আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি। তিনি লিখেছেন, খুব কম বাবা-মাই আছেন, সন্তানের সৎ কাজকে যারা উচ্ছ্বাস ভরা হৃদয়ে অভিনন্দিত করেন। বিপদের মুখেও ছেলে সত্য কথা বলেছে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে, সুযোগ থাকার পরও ঘুস নেয়নি— এই আনন্দে বাবা-মা কখনো মিষ্টি বিতরণ করেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা হয়তো একবারও ঘটেনি। 

অথচ জিপিএ ৫ পেলে মিষ্টির বন্যা বইয়ে দেব—এমন ঘোষণা আমরা অহরহ শুনছি। সততা নয় বরং পরীক্ষায় পাশ করাই জীবনের প্রধান লক্ষ্য হয়ে ওঠায় অনেক বাবা-মা প্রয়োজনে সন্তানের নকল করারও অনুমোদন দেন। পাশের ভালো ছাত্রের খাতা দেখে লিখতে না পারলে অনেক সন্তান ভর্ৎসনার শিকার হয়। কী অদ্ভুত মনোবৈকল্য আমাদের!  জিপিএ ৫ সাময়িকের সাফল্য। কিন্তু মুমিনের জীবনে চূড়ান্ত সাফল্য তো তখনই আসবে, যখন সে জাহান্নাম থেকে বেঁচে চিরসুখের জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে এটাকেই আসল সফলতা বলেছেন। আর বুদ্ধিমান তো সে, যে কিনা সাময়িকের সাফল্যের ফাঁদে আটকা না পড়ে চূড়ান্ত সফলতার জন্য চুপচাপ কাজ করে যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ওই পোস্টের কমেন্টে শায়েখ আহমদুল্লাহ লিখেছেন, জীবন অনেক দীর্ঘ জার্নির নাম। জিপিএ ৫ পাওয়ার পরও অনেক শিক্ষার্থী পরবর্তী জীবনে ব্যর্থ হয়। আবার জিপিএ ৫ না পেয়েও বহু মানুষ পরবর্তী জীবনে সফল হয়। তাই সাময়িকের এই সাফল্যকে উন্মাদের মতো উদযাপন করা শোভনীয় নয়।

পোস্টটি নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অর্ধলক্ষের বেশি মানুষ এটাতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, ৪ হাজারের বেশি শেয়ার হয়েছে এবং ২ হাজারের বেশি মানুষ মন্তব্য করেছেন।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2