‌‘চর্বির সংগে হৃদরোগের কোনো সম্পর্ক নেই’

আমেরিকার বড় বড় অনেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রমাণ করেছে, চর্বির সংগে হৃদরোগের কোনো সম্পর্ক নেই। তাহলে আমরা কেনো কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য বলছি। এখন এসব কিছু প্রমাণের সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. এম মজিবুল হক।

রাজধানীর ধানমণ্ডিতে এক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এই তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, প্রত্যেকের শরীরে একশোটি বডি সেল আছে। এই বডি সেলগুলো প্রতি মুহূর্তে রিজেনারেটেড হয়। আজ আমার একটা অর্গান বা অঙ্গ অসুস্থ হলে আমরা যদি রি-জেনারেটেড খাবার দেই তাহলে সেটা সুস্থ হবে। যদি ভালো খাবার না দেই তাহলে সুস্থ অঙ্গও অসুস্থ হবে। আমাদের শরীর একটা ভাঙা-গড়ার মধ্যে যায়।

গতানুগতিক ওষুধের পরিমাণ যথাসম্ভব কমিয়ে ন্যাচারাল মেডিসিন তথা স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের ওপর বিশেষভাবে জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন মার্কিন চিকিৎসা এই বিজ্ঞানী।

ড. এম মজিবুল হক আরও বলেন, ৭০ ভাগ মানুষ ক্রনিক বা দুরারোগ্য ব্যধিতে ভুগছে। পৃথিবীর ৭৫ ভাগ মানুষকে কোনো না কোনো মেডিসিন নিতে হয়। বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের মতো রোগে। বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মাঝে ৯ কোটি মারা যাবে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকে। আমাদের কার্ডিলজিস্টের কি অভাব রয়েছে? গ্যাপটা কোথায়? সেটা হলো পুষ্টি।

সুস্থ থাকার জন্য মেডিকেল চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে উল্লেখ করে ড. এম মজিবুল হক বলেন, পরীক্ষিত পুষ্টির সমন্বয় রিজেনারেটিভ মেডিকেল থেরাপি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ন্যাচারাল মেডিসিন। সর্বোপরি লাইফস্টাইল মডিফিকেশন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে বলেও জানান তিনি।

ইবনে সিনার ন্যাচারাল মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদ বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান।

তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে বেশিরভাগ মানুষই নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে হাঁটা চলা কম ও দীর্ঘক্ষণ বসে থাকায় ডায়াবেটিস, ওজন বেড়ে যাওয়াসহ নানান সমস্যায় ভুগছেন অনেকে। এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসাবিজ্ঞানে ন্যাচারাল মেডিসিন ও পুষ্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। 

চিকিৎসা বিজ্ঞানের তিনটি দিক-মেডিকেল ব্যবস্থাপত্র, ফার্মাসিস্ট ও নার্স। তার সংগে এখন যুক্ত হয়েছে কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন বা সাপ্লিমেন্টারি মেডিসিন। তার পাশাপাশি এখন পুষ্টি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) পুষ্টির ওপর বেশ জোর দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান।

অধ্যাপক ড. আবু খুলদুন আল মাহমুদ-এর সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন, দেশের প্রখ্যাত পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো,  এসিআরএইচের প্রধান পরামর্শক ডা. মো. মজিবুল হক, ক্লিনিক্যাল ডায়াটেশিয়ান সুমািইয়া শাহনাজ, পুষ্টিবিদ পুষ্টিবিদ ইশরাত জাহান, পুষ্টিবিদ সিরাজাম মুনিরা, ইবনে সিনার স্ট্রাটেজিক মার্কেটিং বিভাগের এক্সিকিউটিভ আবু সালমান রানা।