• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

‘ইন্টারনেট কখনোই বন্ধ করা যাবে না’

প্রকাশিত: ২২:২৯, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ফন্ট সাইজ
‘ইন্টারনেট কখনোই বন্ধ করা যাবে না’

ছবি: সংগৃহীত

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশের সংশোধন প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অধ্যাদেশ সংশোধনের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইন্টারনেট বা টেলিযোগাযোগ সেবা কখনোই বন্ধ করা যাবে না।

সংশোধিত অধ্যাদেশের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবার মানবৃদ্ধি, এর রেগুলেশন এবং রাষ্ট্রের সার্ভেইল্যান্স কাঠামোতে গঠনমূলক পরিবর্তন আনা হয়েছে।

২০১০ সালের বিতর্কিত সংশোধনের কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে বিটিআরসির স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির ক্ষমতা ও কার্যপরিধির মধ্যে ভারসাম্য আনা হয়েছে।

আগে সব লাইসেন্স ইস্যুর অনুমোদন মন্ত্রণালয় থেকে হলেও, এখন থেকে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু লাইসেন্স মন্ত্রণালয় ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টাডির ভিত্তিতে অনুমোদনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে ও অন্যান্য সকল লাইসেন্স ইস্যু করার এখতিয়ার বিটিআরসির কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়াও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির সভাপতিত্বে একটি ‘জবাবদিহিতা কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।

লাইসেন্সের আবেদন থেকে শুরু করে সিদ্ধান্ত পর্যন্ত সময় কমানো হয়েছে। এ ছাড়াও পূর্বের আইনে বর্ণিত উচ্চ জরিমানা, রিকারিং জরিমানা কমানো হয়েছে, যা টেলিযোগাযোগ খাতকে বিনিয়োগবান্ধব করবে।

এখন থেকে প্রতি চার মাসে বিটিআরসি’কে গণশুনানি করতে হবে, তার ফলোআপ ওয়েবসাইটে রাখতে হবে এবং কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট রোধেও বিধান রয়েছে।

সিম ও ডিভাইস রেজিস্ট্রেশনের তথ্য ব্যবহার করে কোনো নাগরিককে নজরদারি বা অযথা হয়রানি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ করা হয়েছে।

‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত নিবর্তনমূলক ধারা পরিবর্তন করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর ধারাবাহিকতায় কেবল সহিংসতার আহ্বানকেই অপরাধের আওতাভুক্ত রাখা হয়েছে।

টেলিযোগাযোগ সেবার ক্ষেত্রে আপিল এবং সালিশ বিষয়ক ধারা রাখা হয়েছে। ‘সেন্টার ফর ইনফরমেশন সাপোর্ট প্রতিষ্ঠা’ করা হয়েছে। আইনানুগ ইন্টারসেপশনের সংজ্ঞা এবং পরিধি স্পষ্টভাবে এবং সুবিস্তারে আইনে নির্ধারিত করা হয়েছে।

কেবল বিচারিক ও জরুরি আইনানুগ ইন্টারসেপশনের প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘সেন্টার ফর ইনফরমেশন সাপোর্ট’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যা বাধ্যতামূলকভাবে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশের মানদণ্ড অনুযায়ী পরিচালিত হতে হবে।

জাতীয় নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা, জরুরি প্রাণরক্ষার প্রয়োজনে, বিচারিক বা তদন্তের প্রয়োজন এবং আন্তঃসীমান্ত সংক্রান্ত কাজে সুনির্দিষ্ট কার্যপদ্ধতি অনুসরণ করে আইনানুগ ইন্টারসেপশন করতে পারবে।

এই কাজ কেবল আইনে স্পষ্টভাবে বর্ণিত নির্দিষ্ট কিছু সংস্থা, সেটিও কেবল নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের মধ্যে করতে পারবে।

‘সেন্টার ফর ইনফরমেশন সাপোর্ট (সিআইএস)’-এর মাধ্যমে রোল বেজড অ্যাক্সেস কন্ট্রোল ও আধা বিচারিক কাউন্সিলের অনুমোদন ছাড়া ইন্টারসেপশন কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।

নতুন গঠিত সিআইএস (সেন্টার ফর ইনফরমেশন সাপোর্ট) নিজে কোনো ইন্টারসেপশন পরিচালনা করতে পারবে না, এটি কেবল কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে।

‘সেন্টার ফর ইনফরমেশন সাপোর্ট প্রতিষ্ঠা’র জন্য বর্ণিত সংশোধনের মাধ্যমে এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন্স মনিটরিং সেন্টার) বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

আইনানুগ ইন্টারসেপশনের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আধা-বিচারিক কাউন্সিল ও সংসদীয় তদারকির বিধান আনা হয়েছে। কাউন্সিলের নিকট বেআইনি ইন্টারসেপশন-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যাবে।

আধা বিচারিক কাউন্সিল আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী (সভাপতি), প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নিয়ে গঠিত হয়েছে।

সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আইনানুগ ইন্টারসেপশন বিষয়ে প্রতি বছর একটি জাতীয় বার্ষিক প্রতিবেদন জনগণের কাছে প্রকাশ করবে, যাতে ইন্টারসেপশনের ক্ষেত্রসমূহসহ বর্ণিত থাকবে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটি প্রতি বছর কার্যক্রম বাজেট এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা যাচাই করবে।

এ ছাড়াও, ইমেজ এবং ভয়েস প্রোটেকশন, সিম ডেটা এবং ডিভাইস ডেটা প্রোটেকশনের বিধান রাখা হয়েছে।

এই আইনের অধীন সব ব্যবস্থাপনা জাতিসংঘ, আইটিইউসহ আন্তর্জাতিক উত্তম অনুশীলনের সহিত সামঞ্জস্য থাকবে।

উল্লেখ্য, অধ্যাদেশটি গত ২০ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নীতিগত অনুমোদন পায়। এরপর স্বরাষ্ট্র, অর্থ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আজকের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তোলা হয়। সূত্র: বাসস

বিভি/এআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2