কার নামে নিবন্ধিত হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত ফোনসেট?
সংগৃহীত ছবি
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী অক্টোবরের এক তারিখ থেকে অনিবন্ধিত মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নেটওয়ার্কে সচল থাকতে হলে অবশ্যই ফোন নিবন্ধিত থাকতে হবে। এর আগে বিটিআরসি’র তরফ থেকে জানানো হয়েছিলো, নেটওয়ার্কে থাকা পুরোনো সচল ডিভাইস স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবে। প্রশ্ন উঠেছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সচল থাকা ডিভাইস কার নামে রেজিস্ট্রেশন হবে?
শনিবার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটি আয়োজিত এক মানববন্ধনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৭ থেকেই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক অবৈধভাবে ব্যবহার করছেন। অবৈধভাবে স্থানীয় নাগরিকদের নামের মোবাইল সিম সংযোগ নিয়ে মাদকদ্রব্য ব্যবসা, চোরাচালান, অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে, ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছে স্থানীয় নাগরিকরা।
তিনি আরো বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংকেত থাকা সকল হ্যান্ডসেট বেছে বৈধতা প্রদান করেছে বিটিআরসি। তাহলে রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত প্রায় সাড়ে চার লাখ মোবাইল হ্যান্ডসেট কাদের নামে নিবন্ধিত হয়েছে? বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জাতীয় নিরাপত্তার সংগে সম্পৃক্ত। এ বিষয়ে তিনি সরকার ও বিটিআরসি’র দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
রোহিঙ্গারা এই দেশের নাগরিক নয়, স্বভাবতই তাদের কোন ভোটার আইডি কার্ড থাকবে না। যদি তারা অন্যের রেজিস্ট্রেশনকৃত সিম ব্যবহার করে, স্বয়ংক্রিয় রেজিস্ট্রেশনের সময় ডিভাইসও ওই অন্য ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রেশন হওয়ার কথা। যদি তাই হয়, তাহলে অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত সিম/ডিভাইস দিয়ে রোহিঙ্গারা সহজেই অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়তে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, যেসব ডিভাইস নেটওয়ার্কে সচল ছিলো তা স্বয়ংক্রিয় রেজিস্ট্রেশনের আওতায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে। রেজিস্ট্রেশনের এই প্রক্রিয়ায় যদি অবৈধ কোনো ব্যক্তির নাম পরিলক্ষিত হয় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তার রেজিষ্ট্রেশন বাতিলের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্পেকট্রাম বিভাগের ডাইরেক্টর জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদুল আলম বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, ফোনসেট নিবন্ধিত হচ্ছে সিমকার্ডের যে মালিক তাদের নামে। যেহেতু রোহিঙ্গাদের এনআইডি নেই তাই তাদের নামে সেট নিবন্ধন হবে না।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন খবরে এর আগে জানা গেছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনেকেই অবৈধভাবে অন্যের সিমকার্ড ব্যবহার করছেন। তার মানে সিম এবং ফোন রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে একজনের নামে, ব্যবহার করছে অন্যজন। ফলে অপরাধপ্রবণতা বাড়ার সম্ভাবনা থেকে যায় কি না- এ প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদুল আলম বলেন, বিষয়টি সমাধানে বিটিআরসি ইতিমধ্যে কাজ করছে। এমন কিছু পরিলক্ষিত হলে কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
এই বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, একটি ভোটার আইডি দিয়ে একাধিক সিমকার্ড রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ আছে। সেই সুযোগ দুষ্কৃতিকারীরা নিতে পারে। এই বিষয়ে সরকার সর্তক রয়েছে।
এদিকে অনিবন্ধিত মোবাইল ফোনের বিষয়ে গ্রাহককে ইতিমধ্যে সচেতনামূলক বার্তা পাঠিয়েছে বিটিআরসি। এছাড়াও গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ফোন কেনার আগে অবশ্যই neir.btrc.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফোনের নিবন্ধন নিশ্চিত হতে হবে। এছাড়া ক্ষুদে বার্তায় KYD IMEI number লিখে ১৬০০২ নাম্বারে এসএমএস এর মাধ্যমেও ফোনের নিবন্ধন নিশ্চিত হওয়া যাবে। অবৈধ ফোন বিক্রেতার বিরুদ্ধে শাস্তির ঘোষণাও দিয়েছে বিটিআরসি।
বিভি/এসআই/এসডি




মন্তব্য করুন: