• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে হাইতির গ্যাং লিডার জিমির জীবন কাহিনী

প্রকাশিত: ১৫:৩৫, ৫ মার্চ ২০২৪

আপডেট: ১৯:১২, ৫ মার্চ ২০২৪

ফন্ট সাইজ

হলিউড সিনেমার মতো লোমহর্ষক এক কাহিনীর সাক্ষী হলো ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ হাইতি। দেশটির একটি কারাগারে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সশস্ত্র এই হামলার মাধ্যমে প্রায় চার হাজার বন্দিকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে তারা। আর এই ঘটনার নেপথ্যে আছেন দেশটির সবচেয়ে বড় গ্যাং জি নাইনের লিডার জিমি চেরিজিয়ার। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর সেই ঘটনার বিবরণ। গত বৃহস্পতিবার হাইতিতে কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করতে নাইরোবি সফরে যান হাইতির প্রধানমন্ত্রী। এরপরই গ্যাং লিডার জিমি চেরিজিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের জন্য সমন্বিত আক্রমণ চালানোর কথা ঘোষণা করেন। তবে কিভাবে এত ক্ষমতার অধিকারী হলেন জিমি? কেনই বা হয়ে উঠলেন যুদ্ধবাজ?

সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে জিমির জীবন কাহিনী।  জিমির জন্ম পোর্ট-অ-প্রিন্স-এর ডেলমাস শহরে। মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই বাবাকে হারান তিনি। নাম জিমি চেরিজিয়ার হলেও হাইতিতে তিনি পরিচিত বারবিকিউ নামে। তার মা ছিলেন ফুটপাতের চিকেন ফ্রাই বিক্রেতা। সেখান থেকেই তার নাম হয়ে উঠে বারবিকিউ। 

আরও পড়ুন: কমলা হ্যারিস-ডগ এমাহফ: এক অত্যাশ্চর্য প্রেমকাহিনী

গ্যাং লিডার হওয়ার আগে জিমি দায়িত্ব পালন করেছেন হাইতির একজন পুলিশ অফিসার হিসেবে। যেখানেই দাঙ্গা বা বিক্ষোভের ঘটনা ঘটতো সেখানেই পাঠানো হতো জিমিকে। ২০১৭ সালে হাইতিতে গণহত্যায় ভূমিকা রাখার অভিযোগে পুলিশ বাহিনী থেকে বরখাস্ত হন জিমি। আর সেই ক্ষোভ থেকেই ধীরে ধীরে দুর্ধর্ষ হয়ে উঠতে শুরু করেন জিমি।

২০২০ সালে জিমি চেরিজিয়ার জি নাইন নামে একটি নতুন জোট প্রতিষ্ঠা করেন। সেই জোটে এক ডজনেরও বেশি গ্যাংকে অন্তর্ভুক্ত করেন তিনি। বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আছে জিমি ও তার গ্যাং-এর বিরুদ্ধে। তবে  গণহত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা বারবার অস্বীকার করেছেন চেরিজিয়ার। তার দাবি তিনি তার সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের সাহায্য করছেন। আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জিমি বলেন, আমার লড়াই সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে নয়, সিস্টেমের বিরুদ্ধে। এই সিস্টেমের বিরুদ্ধেই আমি সংগ্রাম করে যাচ্ছি। এই সিস্টেমকে যারা নিয়ন্ত্রণ করছে, তাদের কাছে অনেক অর্থ। তারাই সব মিডিয়ার মালিক। আর এখন তারা আমাকে গুন্ডা বানানোর চেষ্টা করছে।

অভিযোগ আছে, যারা জিমির টার্গেট হতেন তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হতো। বাড়ি থেকে টেনে এনেও মানুষকে হত্যা ও নির্যাতন করতো তার গ্যাং। এখানেই শেষ নয়, হত্যা করা মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে পশুদেরকে খাওয়ানোর বিভৎসতাও দেখিয়েছেন তিনি। 'সশস্ত্র বিপ্লব'র নেতৃত্ব দিয়ে জিমি ঘোষণা দিয়েছেন, যদি প্রয়োজন হয় প্রতিটি শিশুর হাতে বন্দুক তুলে দেয়া হবে। বর্তমানে দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন এই গ্যাং লিডার।

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে, চেরিজিয়ার এবং তার সহযোগীরা পোর্ট-অ-প্রিন্সের একটি প্রধান জ্বালানী টার্মিনাল ঘেরাও করে রেখেছে। যতক্ষণ না প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন ততক্ষণ পর্যন্ত তারা সরবে না বলে ঘোষণা করে। কিন্তু হাইতির সরকার অবিলম্বে বিদেশী সৈন্য মোতায়েনের অনুরোধ করার পর, চেরিজিয়ার সাধারণ ক্ষমা চান এবং তার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সমস্ত গ্রেফতারি পরোয়ানা অপসারণের দাবি জানান। মন্ত্রিসভার পদও দাবি করে বসেছেন জিমি চেরিজিয়ার। তবে এসব অনুরোধে প্রকাশ্যে সাড়া দেয়নি দেশটির সরকার।

মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে হাইতিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক চুক্তির আওতায় হাইতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সেটি আর হয়নি। জাতিসংঘ জানায় শুধু গত বছরেই হত্যা, নির্যাতন এবং অপহরণসহ হাইতিতে গ্যাং সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৮ হাজারেরও বেশি মানুষ।
 

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2