• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

রমজানে জেরুজালেমে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা

প্রকাশিত: ১৫:০৫, ১১ মার্চ ২০২৪

ফন্ট সাইজ

এক বুক কান্না আর অশান্ত মন নিয়ে জড়ো হয়েছেন তারা। উদ্দেশ্য রমজানের চাঁদ দেখা। দৃশ্যটি মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গনের। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে থেকেও এসেছেন পবিত্র রমজান মাসকে স্বাগত জানাতে।

রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে ফিলিস্তিনে। কিন্তু সীমাহীন আতঙ্ক নিয়ে ফিলিস্তিনিরা শুরু করতে যাচ্ছে সিয়াম সাধনার এই মাস। ইসরাইল আর হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি না হওয়ায় মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে জেরুজালেমে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

রোজার শুরুতে ৪০ দিনের একটা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে গেছে। ইসরায়েলি পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা, যুদ্ধ আর দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মধ্যেই পবিত্র রমজানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। যুদ্ধবিরতির আলোচনা স্থগিত হয়ে যাওয়ায় পবিত্র মাসের উৎসব মুখর পরিবেশ ছাপিয়ে ফিলিস্তিনিদের মুখে এখন কেবলই আতঙ্কের ছাপ। 

বিশ্বজুড়ে মুসল্লিরা তারাবি নামাজ আদায়ের মাধ্যমেই রোজার প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। কিন্তু পূর্ব জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের নামাজ আদায়ের অধিকারও কেড়ে নিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি বাহিনী কম বয়সী ফিলিস্তিনি পুরুষ ও নারীদের আল-আকসায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। সেখানে ৪০ বছরের বেশি বয়সী লোকজনকেই শুধু নামাজ আদায়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আল আকসা হলো ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। এই জায়গাটিকে ইহুদিরাও তাদের পবিত্রতম স্থান বলেও মনে করে, যা তাদের কাছে টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত। কখনো কখনো জায়গাটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের কেন্দ্রবিন্দু হয়েও দাঁড়ায়। ১৯৬৭ সালে যুদ্ধের মাধ্যমে ইসরায়েল এই অংশসহ পূর্ব জেরুজালেম দখল করে। তাই স্থানটি ফিলিস্তিনিদের কাছে সংগ্রামের একটি প্রতীক হয়ে উঠেছে। আল আকসা প্রাঙ্গনে প্রায়ই ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার বেশিরভাগই হয় রমজান মাসেই। 

রমজান উপলক্ষে যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাহারী সব খাবারের আয়োজন, তখন উল্টো চিত্র যুদ্ধবিদ্ধস্ত ফিলিস্তিনে। রমজানের শুরুতে খাদ্য সংকটে ভুগছে দেশটির রাফাহ অঞ্চল। এখানে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা বলছেন, রোজার মাসে তাদের অতি প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলোই মিটানোর ব্যবস্থা করতে পারছেন না তারা। বাজারে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ খাবারই প্যাকেটজাত যা অধিকাংশেরই ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।


রাফার একটি অস্থায়ী বাজারে খাবার কিনতে এসে এক ফিলিস্তিনি বলেন, "আমি এখানে খাবার কিনতে এসেছি কিন্তু কেনার কিছুই খুঁজে পাচ্ছি না। খেজুর বা দুধ বা কিছুই এখানে নেই। কেউই তাদের সন্তানদের জন্য কিছু খুঁজে পাচ্ছেন না। আমরা কিভাবে সাহরি করবো? রোযা ভাঙার জন্য ইফতার করবো কী দিয়ে? টিনের মধ্যে থাকা এসব খাবার জীবাণুতে ভরা। খেলেই অসুখে পড়তে হবে। আমাদের বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য শাকসবজি এবং ফল দরকার কারণ তারা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে।"

ইসরায়েলি হামলার পরের পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণকে সহায়তার ক্ষেত্রে কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। পবিত্র এই রমজানের শুরুতেও ভয় ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বাসিন্দারা। গাজাজুড়ে এখনও হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার বাহিনী। উত্তর গাজায় অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় এখন পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত ৭ অক্টোবর থেকে চালানো হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৩১ হাজার ফিলিস্তিনী।

 

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2