২০৩০ সাল পর্যন্ত রাশিয়া চালাবেন পুতিন (ভিডিও)
প্রথমবারের মত রাশিয়ার ক্ষমতায় এসেছিলেন সেই ১৯৯৯ সালে। এরপর থেকে দেশটিতে একাই রাজত্ব করে যাচ্ছেন তিনি। বিরোধীদের কখনো করেছেন নিষিদ্ধ, কখনো নিজের সমর্থককে করেছেন নামমাত্র প্রতিপক্ষ। আর এভাবেই রাশিয়ার ২০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রপ্রধানে পরিণত হলেন ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও জয় পেয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত তিন দিনের ভোট গ্রহণ শেষে রুশ নির্বাচন কমিশনের কর্তারা জানিয়েছেন ৮৭ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন পুতিন। এর মাধ্যমে আরও ৬ বছরের জন্য ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত হলো তার।
এই নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার মেয়াদের দিক থেকে নতুন ইতিহাস গড়লেন ৭১ বছর বয়সী পুতিন। এতদিন সবচেয়ে দীর্ঘ সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে থাকার রেকর্ডের মালিক ছিলেন জোসেফ স্টালিন এবং লিওনিদ ব্রেজনেভ। সাবেক সোভিয়েত আমলে দুজনেই ২৪ বছর করে ক্ষমতায় ছিলেন।
নির্বাচনে পুতিনের জয় নিয়ে কখনোই কোনো সন্দেহ ছিল না। কারণ তার সমালোচকরা বেশিরভাগই হয় জেলে, না হয় নির্বাসনে বা মৃত। এছাড়া পুতিনের প্রতি জনসাধারণের সমালোচনাও দমিয়ে রাখা হয়েছে। এবার প্রার্থী হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত কয়েকজনের নাম ব্যালটে নেই। তাদের একজন সম্প্রতি প্রয়াত বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি। রাশিয়ায় পুতিনের সবচেয়ে বড় সমালোচক মনে করা হতো তাঁকে। দীর্ঘদিন কারাবন্দী থাকার পর গত মাসে কারাগারে মৃত্যু হয় নাভালনির। এ ছাড়া এবারের নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন বরিস নাদেজদিন ও সাংবাদিক ইয়েকাতেরিনা দুনৎসভা। বর্ষীয়ান রাজনীতিক নাদেজদিন ইউক্রেন যুদ্ধের একজন সমালোচক হিসেবে পরিচিত। সাংবাদিক দুনৎসভাও পুতিনের সমালোচক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি দুজনের কেউই। রুশ কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞায় তারা নির্বাচনে অংশই নিতে পারেননি।
নির্বাচনে পুতিনের বিরুদ্ধে লড়েছেন তিনজন নামমাত্র প্রার্থী। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যালটে পুতিন ছাড়া যে তিন প্রার্থীর নাম আছে, তাদের একজন নিকোলাই খারিতোনোভ। তিনি কমিউনিস্ট পার্টি মনোনীত হলেও নিজের চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী পুতিনের প্রশংসাই করেন বেশি। আরেক প্রার্থী লিওনিড স্লাটস্কি। তিনিও দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে পশ্চিমাবিরোধী আলোচনাতেই ব্যস্ত থাকেন। এছাড়া নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ভ্লাদিস্লাভ দাভানকোভ। এই প্রার্থীও পুতিনপন্থী একজন রাজনীতিক হিসেবেই পরিচিত।
নির্বাচনে জয়লাভের পর এক ভাষণে ‘তার প্রতি সমর্থন ও বিশ্বাস রাখার জন্য’ রাশিয়ানদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পুতিন। এসময় পশ্চিমাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারাই আমাদের ভয় দেখানো বা দমনের চেষ্টা করুক না কেন; ইতিহাসে কেউই এইসব করে সফল হয়নি, তাদের এই প্রচেষ্টা এখনো কাজে দিচ্ছে না, ভবিষ্যতেও দেবে না।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় এখন তিনি পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হবেন এবং সেক্ষেত্রে তার ক্ষমতার মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়বে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: