ষড়যন্ত্র নাকি মামলা? কেনো গ্রেফতার হলেন কেজরিওয়াল? (ভিডিও)
ভারতের মাটিতে রচিত হলো নতুন এক ইতিহাস। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় গ্রেফতার হলেন। কয়েকজন নেতাকর্মীসহ নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার হলেন নয়াদিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
মদনীতি কেলেঙ্কারির মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির ১২ সদস্যের একটি দল। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, গতকাল রাতে সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে কেজরিওয়ালের বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে দুই ঘণ্টাব্যাপী জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি'র সদস্যরা। ওই সময় কেজরিওয়াল ও তার স্ত্রীর মোবাইল ফোন জব্দ করা হয় এবং দুটি ট্যাব এবং একটি ল্যাপটপ থেকে ডেটা ট্রান্সফার করে নেওয়া হয়।
একদিকে চলছিলো জিজ্ঞাসাবাদ আর অন্যদিকে মোতায়েন করা হচ্ছিলো দিল্লি পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের সদস্য এবং সিআরপিএফের কয়েকটি দল। ওই সময় বাড়ির বাইরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে তখন কেজরিওয়ালের বাড়ির বাইরে যে কয়েকজন নেতাকর্মী জড়ো হয়েছিলেন তাদেরও গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের আশপাশে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।
কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা। কেজরিওয়াল যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করছেন তারা। নেতারা বলছেন, বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মাত্র ৭০,০০০ রূপি পাওয়া গেছে। এরপরও তার মোবাইল কেড়ে নিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা বলছে, মদনীতি কেলেঙ্কারি মামলার প্রধান ‘‘ষড়যন্ত্রকারী’ এই কেজরিওয়াল। ষড়যন্ত্র অনুযায়ী, দিল্লিতে এমন এক মদনীতি তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়; যা দক্ষিণ ভারতের একটি মদের লবিকে সুবিধা দেবে। আর বিনিময়ে সেই ‘‘দক্ষিণ লবি’’ আম আদমি পার্টিকে দেবে ১০০ কোটি রুপি। এও বলা হয়, মদনীতি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত বিজয় নায়ার প্রায়ই কেজরিওয়ালের অফিসে যেতেন এবং বেশিরভাগ সময় সেখানেই কাটাতেন।
এদিকে গ্রেফতার হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আম আদমি পার্টি জানায়, জেলে থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন দিল্লির মূখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তবে জেল থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার কাজ চালিয়ে যাওয়া একটি সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি করতে পারে। কেনোনা কারাগারের এক সূত্র জানিয়েছে, কারাগার থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করার কোনও নজির নেই এবং জেল ম্যানুয়ালে এর কোনো উল্লেখ নেই।
দুই বছর আগে মদনীতি কেলেঙ্কারির মামলার তদন্ত শুরু হয়। তবে আম আদমি পার্টির এক হাজার নেতার বিরুদ্ধে ইডি ও সিবিআই এক হাজারের বেশি অভিযান চালিয়ে কোনো অর্থের হদিস পায়নি।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: