বিলাসী রোলেক্স ঘড়ি দেখিয়ে পড়লেন বিপদে, ছাড় দিলো না পুলিশ (ভিডিও)
একেই বলে খাল কেটে কুমির আনা। দেখে বোঝার উপায় নেই বয়সটা তার এখন ষাটের কোটায়। এখোনো ধরে রেখেছেন নিজের সৌন্দর্য। তাক লাগিয়ে দেন নজড়কারা পোশাক আর বিলাসী অলংকার দিয়ে। আর এবার সেই বিলাসী চলনের জেরেই বিপাকে পড়লেন পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তে।
প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তের হাতে দেখা যায় অবিশ্বাস্য মূল্যের বিলাসবহুল একাধিক ঘড়ি। এদের একেকটির মূল্য প্রায় ৫ লাখ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকার মতো। আর দামি এসব ঘড়ি দেখিয়ে রীতিমত বিতর্কের জন্ম দিলেন দিনা।
পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তারা। তার বিরুদ্ধে চলমান একটি দুর্নীতি তদন্তের অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়। পেরুর পুলিশ ‘রোলেক্সগেট’ নামে পরিচিত দুর্নীতির তদন্তের অংশ হিসাবে দেশটির প্রেসিডেন্ট দিনার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। অভিযানের সময় কর্তৃপক্ষ এক ডজনেরও বেশি রোলেক্স ঘড়ির সন্ধান করে। মূলত দিনার বিরুদ্ধে অভিযোগটি হলো বিলাসবহুল এসব ঘড়ি নিজের কাছে আছে এমন কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি তিনি।
পেরুর পুলিশ ও সরকারি কৌঁসুলিরা যৌথভাবে এই অভিযান চালিয়েছেন। পুরো অভিযান স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। পুলিশের নথিপত্র থেকে জানা গেছে, অভিযানে প্রায় ৪০ কর্মকর্তা অংশ নিয়েছিলেন। অভিযানের সময় রাজধানী লিমার সারকুইলো এলাকায় প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘিরে রাখতে দেখা যায় সরকারি কর্মকর্তাদের। প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘেরাও করার সঙ্গে সঙ্গে কর্মকর্তারা যানবাহন চলাচলও বন্ধ করে। এ সময় প্রেসিডেন্টকে তার বাসভবনে দেখা যায়নি। তবে এ অভিযান ‘সংবিধানবিরোধী’ বলে উল্লেখ করেছেন পেরুর প্রধানমন্ত্রী গুস্তাভো আদ্রিয়ানজেন।
চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে বিলাসবহুল ঘড়ি পরা অবস্থায় দিনা বলুয়ার্তের একাধিক ছবি প্রকাশ করে পেরুর একটি গণমাধ্যম। ছবিগুলো ২০২২ সালের ডিসেম্বরের পরের তোলা হয়েছিলো। সেই মাসেই তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। ছবি প্রকাশের পর এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়। তখন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত দুই বছরে প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তের যে সম্পদ হয়েছে, তার পর্যালোচনা করা হবে। আর এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বোলুয়ার্তে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে বোলুয়ার্তে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ছিলেন। সেখানে তার মাসিক বেতন ছিল ১ হাজার ডলার। আর এখন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতি মাসে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ ডলার ভাতা পান। ফলে অনেকে বলছেন, এই আয় দিয়ে প্রেসিডেন্ট এই ঘড়ি কেনার সামর্থ্য রাখেন না। তবে গত সপ্তাহে ৬১ বছর বয়সী বোলুয়ার্তে বলেছেন, ‘আমি সরকারি প্রাসাদে পরিষ্কার হাত নিয়ে প্রবেশ করেছিলাম, আর যখন ছেড়ে যাব, পরিষ্কার হাত নিয়েই যাব।’
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: