বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে নতুন রেল নেটওয়ার্ক তৈরি করবে ভারত (ভিডিও)
এবার আর ঘুরিয়ে পেচিয়ে নয়, একদম বাংলাদেশের ভেতর দিয়েই রেল সংযোগ চালুর পরিকল্পনা করছে ভারত। ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলকে অন্যান্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করতে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বিকল্প রেল যোগাযোগের রুট তৈরি করতে যাচ্ছে ভারত।
ইতোমধ্যেই এই রেল পথ তৈরির জন্য একটি খসড়া প্রকল্পও প্রস্তুত করে ফেলেছে ভারত সরকার। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, খসড়া প্রকল্পটিতে বাংলাদেশকে যুক্ত করে ১৪টি নতুন রুট রাখার পরিকল্পনাও করেছে ভারত। রুটগুলোতে সবমিলিয়ে রেললাইন থাকবে ৮৬১ কিলোমিটার। সঙ্গে থাকবে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাওয়া বিকল্প রুটটি। এতে করে সবমিলিয়ে এ প্রকল্পে রেললাইন হবে ১২৭৫.৫ কিলোমিটার।
২২ কিলোমিটার প্রশস্ত ‘চিকেন নেক’ করিডোরটি বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্য দিয়ে গেছে, যা আবার চীনের সঙ্গে ভারতের বিরোধপূর্ণ এলাকার মধ্যে পড়ে। ফলে সামরিক এবং বেসামরিক পণ্য পরিবহণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ‘চিকেন নেক’ করিডোরের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে চাইছে ভারত। মূলত এ কারণেই করিডোরটি এড়িয়ে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বিকল্প রেল নেটওয়ার্ক তৈরির কথা ভাবছে দেশটির সরকার।
প্রকল্পের অংশ হিসেবে পুরোনো রেললাইন বদলে নতুন রেললাইন স্থাপন করা হবে। অপরদিকে বাংলাদেশে তৈরি করা হবে নতুন রেললাইন। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী ট্রেনটি হলদিবাড়ী থেকে যাবে ভুটান সীমান্তবর্তী ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত। ডালগাঁও পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার একটি স্টেশন। এ স্টেশনের একটি লাইন উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যকে দেশটির মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছে।
ভূরাজনৈতিক কারণে এ রেলপথ ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে দেশটির উত্তর-পূর্বগামী ট্রেন জলপাইড়গুড়ির ‘চিকেন নেক’ করিডোর ঘুরে যায়। বাংলাদেশের দর্শনা-ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর-পার্বতীপুর-চিলাহাটী হয়ে গেলে ৩০০ কিলোমিটার পথ কমবে। আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল রাজ্যের সঙ্গে বাকি ভারতের রেল যোগাযোগ সহজ হবে। তবে এর ফলে বাংলাদেশের ভূমি ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পরতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
আগে কলকাতা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভেতর ঢুকে খানিকটা পথ অতিক্রম করার পরে আবার ভারতে প্রবেশ করতো। কিন্তু ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: