গাজা দখলের পরিকল্পনায় হুঁশিয়ারি, ট্রাম্পকে ‘হিংস্র ডাকাত’ বললেন কিম

প্রথমবারের মতো ট্রাম্পের গাযা দখলের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। ফিলিস্তিনিদের কোনোভাবেই নিজ ভূখণ্ড থেকে সরানো চলবে না বলে পিয়ংইয়ং-এর পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি- কেসিএনএ-তে প্রচারিত ওই বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখলে নেয়ার পরিকল্পনাকে হাস্যকর ও অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করার বদলে এ ধরনের পদক্ষেপকে ডাকাতি পরিকল্পনা বলেও অভিহিত করা হয়।
এই পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনবাসীর সামনে নিরাপত্তা ও শান্তির যে ক্ষীণ আশাবাদ জেগে উঠেছে, তাও গুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। ট্রাম্পকে হিংস্র ডাকাত অভিধা দিয়ে বলা হয়, গাজা দখলের বিস্ফোরক ঘোষণায় সারা বিশ্ব উত্তপ্ত কড়াইয়ে টগবগে তেলের মতো ফুঁসছে।
যুক্তরাষ্ট্রকে এ ধরনের দিবাস্বপ্ন পরিত্যাগের আহ্বান জানিয়ে পিয়ংইয়ং বলে, অবিলম্বে তাদের অন্য দেশ বা জাতির মর্যাদা ও সার্ভৌমত্ব লঙ্ঘনের এসব অপচেষ্টা থেকে সরে আসা জরুরি।
বরাবরই গাজায় ইসরাইলের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলে আসছে উত্তর কোরিয়া। এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রও ইসরাইলের দুষ্কর্মের সহযোগী বলে অভিযোগ তুলছে তারা।
বিবৃতিতে কেবল গাজা নয়, গ্রিনল্যান্ড, পানামা খালসহ অন্যান্য দেশ বা অঞ্চল দখলে নেয়ার জন্য ট্রাম্প যেসব হুমকি দিয়ে চলেছেন, সেসবেরও কঠোর সমালোচনা করে পিয়ংইয়ং।
এদিকে ট্রাম্প যে কোনো সময় ইরানে হামলা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কার মাঝেই এ সপ্তাহে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সাথে যোগাযোগ করেছেন কিম জং উন। এ সময় আগামীতে তেহরানের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার ও পারস্পরিক আদান-প্রদান আরো গভীর করার বার্তা দেন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, বৈশ্বিক সতর্কতা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়ার সাথে হাত মিলিয়ে গোপনে মিসাইল কার্যক্রম উন্নত ও শক্তিশালী করে চলেছে তেহরান। এর অংশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে নকশা নিয়ে পারমাণবিক ওয়ারহেডসহ ১ হাজার ৮০০ মাইল দূরে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র বানাচ্ছে তারা। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইউরোপকেও লক্ষ্যবস্তু করতে সক্ষম। এরই মাঝে ইরানের সাথে আগামীতে সম্পর্ক আরো গভীর করার ব্যাপারে কিমের বার্তা নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে।
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও নতুন নতুন মিসাইল পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে খোদ উত্তর কোরিয়াও। সম্প্রতি দূরপাল্লার একটি ক্রুজ মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে রাখতে এ ধরনের পরীক্ষা চলবে বলেই ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে যোগাযোগ বেড়ে চলায় ব্যাপক চাপে পড়েছে পশ্চিমারা। এ দুই দেশের পরমাণু অস্ত্রের অভিলাষ থামাতে মরিয়া ট্রাম্প। কিন্তু কীভাবে? সমঝোতা চুক্তি, নাকি হামলা, কোনটিকে বেছে নেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট? মূলত এ ব্যাপারে তিনি নিজেও আছেন ধোঁয়াশার মধ্যে।
বিভি/এইচজে
মন্তব্য করুন: