গাজার শিশুকে দত্তক নিয়ে ২৩ বছর পর পিতৃত্ব ও মাতৃত্বের স্বাদ নিলেন দম্পতি

ছবি: সংগৃহীত
গাজায় দখলদার ইসরাইলের বর্বর হামলায় বাবা-মা হারিয়েছে হাজারো শিশু। অপরদিকে, দীর্ঘ ২৩ বছর সন্তানের মুখ দেখেননি ফিলিস্তিনের এক দম্পতি রামি আরোকি ও ঈমান। সম্প্রতি, গাজার যুদ্ধে বাবা মা হারানো ৪ মাস বয়সী এক শিশুকে দত্তক নিয়েছেন তারা। ফলে, দীর্ঘ ২৩ বছর পর মাতৃত্ব ও পিতৃত্বের স্বাদ পেয়েছেন এই দম্পতি।
শুধু রামি আরোকি আর ঈমানই নয়, তাদের মতো আরও অনেক দম্পতি এখন গাজার এতিম শিশুদের দত্তক নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। গাজার এই শিশুরা ইসরাইলি বর্বর হামলায় বাবা অথবা মাকে হারিয়ে এক কঠিন জীবন অতিবাহিত করছিলো।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইকে রামি আরোকি ও ঈমান জানান, তারা এমন এক শিশুর খোঁজ করছিলেন, দুনিয়ায় যাকে দেখভালো করার মতো কেউ নেই। এমন সময় তাদের এক পারিবারিক বন্ধু আবীর তাদেরকে দুই মাস বয়সী এক শিশুর খোঁজ দেয়। তাদের ওই বন্ধু হাসপাতালের নার্স হিসেবে কাজ করতেন।
আবীর জানায়, বিমান হামলা থেকে বেঁচে ফিরেছে ওই শিশু। তবে, তার বাবা-মা কে অনেক চেষ্টা করেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশেষে গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিয়ে এই শিশুটিকে দত্তক নেন রামি আরোকি ও ঈমান। তারা শিশুটির নাম দিয়েছেন জান্নাত।
রামি আরোকি ও ঈমানের মতো আমাল ইসমাইল নামে এক নার্সও আরেক শিশুকে দত্তক নিয়েছেন। ইসমাইলের বয়স ৩৪ বছর। তিনি গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালে কাজ করতেন।
২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ৩০ নবজাতককে আনা হয় আল-শিফা হাসপাতালে। এই নবজাতক শিশুদের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক ছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য এই শিশুদেরকে মিশরে নেওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
সেসময় দেখা যায় একটি শিশুর সাথে কেউ নেই। হাসপাতালের কেউই তাকে বাবা-মা ছাড়া মিশরে পাঠাতে রাজি হননি। ওই সময় শিশুটিকে প্রায় ৫০জন দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। পরে, নার্স ইসমাইলকে শিশুটির দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে রাজি হন হাসপাতালের পরিচালক।
নার্স ইসমাইল তার দত্তক নেওয়া শিশুর নাম রেখেছেন মালাক। মালাক অর্থ পরী। ইসমাইল বলেন, এই শিশুটিকে সবাই অজ্ঞাত বলে ডাকছিলো। পরে, তিনি শিশুটির নাম দিয়েছেন পরী।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: