পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে সিরিজ হামলা বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাপন্থিদের

এবারে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর চড়াও হয়েছে স্বাধীনতাপন্থি বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি-বিএলএ। একের পর এক হামলায় নাস্তানাবুদ পাক বাহিনী। নতুন করে সেনাবাহিনীর কয়েকটি ঘাঁটিতে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে বিএলএ।
১৮ মার্চ ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ প্রদেশ বেলুচিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে সামরিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে নতুন করে অন্তত ১০টি হামলা চালিয়েছে বিএলএ। কোয়েটা, তুরবাত, হারনাই, মাস্তাং, পাঞ্চগুর ও খুজদারে প্রাণঘাতী এসব হামলা হয়।
এছাড়া নাসিরাবাদ ও জাফরাবাদেও পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা হয়েছে বলে জানায় হিন্দুস্তান টাইমস। হামলার দায় স্বীকার করে বিএলএ জানিয়েছে, পাকিস্তান আর্মি, পুলিশ, বেলুচিস্তানের আধা সামরিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লিভাইস ফোর্সের বিভিন্ন স্থাপনা, ঘাঁটি, চৌকি ও বহরে বোমা ও গ্রেনেড দিয়ে হামলা হয়। অনেক জায়গায় সশরীরেও হামলা চালায় বিএলএ যোদ্ধারা।
বিএলএ’র পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, এসব হামলায় অন্তত ৫ সেনা নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছে। এছাড়া বিধ্বস্ত হয়েছে তিনটি সামরিক যান। বেসামরিক কোনো ব্যক্তি হতাহত হওয়ার কথা জানা যায়নি। চীনের সাথে পাকিস্তানের সংযোগে ব্যবহৃত অতি গুরুত্বপূর্ণ র্যুট- চায়না-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডোর-সিপিইসিতেও হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে তারা।
বিএলএ’র মুখপাত্র জানিয়েছেন, স্বাধীন বেলুচিস্তান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিস্তৃত প্রতিরোধের অংশ হিসেবে এসব হামলা চালানো হয়েছে। পাকিস্তানি বাহিনীকে অব্যাহতভাবে প্রতিরোধ করে যাওয়ার অঙ্গীকার জানিয়েছেন তিনি। তার অংশ হিসেবে আরো হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
বেলুচিস্তানে মোতায়েন পাকিস্তানি বাহিনীকে দখলদার অভিহিত করে বিএলএ আরো জানিয়েছে, পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ থেকে বেলুচিস্তান মুক্ত না করা পর্যন্ত লড়াই চলবে।
এর আগে ১৬ই মার্চ বেলুচিস্তানের নুশকি জেলায় একাধিক স্থানে বিএলএ’র আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে সীমান্তরক্ষীসহ অন্তত ১২ জন নিহত হন। মারাত্মকভাবে আহত হন প্রায় অর্ধশত মানুষ। তবে বিএলএ’র দাবি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গাড়িবহরে বোমা হামলায় অন্তত ৯০ সেনার মৃত্যু হয়েছে।
একইদিন নুশকি–দলবন্দিন মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী বাসের কাছে আরেক বোমা হামলায় অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়। আহত হন অন্তত ৩৫ জন।
তারও ১১ই মার্চ একটি এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা চালায় বিএলএ। রেললাইন উড়িয়ে দিয়ে ট্রেনের ৪৪০ যাত্রীকে জিম্মি করে তারা। পরে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে জিম্মিদের উদ্ধার করে নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানে ৩৩ হামলাকারীর সবাই নিহত হয়। তবে তার আগে ২১ জিম্মিকে হত্যা করে তারা। অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর চার সদস্যও নিহত হন।
সপ্তাহকালের মধ্যে বিএলএ’র একের পর এক চাঞ্চল্যকর হামলায় বেলুচিস্তানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএলএ’র সামরিক সক্ষমতা যে দিন দিন বাড়ছে, এসব হামলা তারই নজির। এখনই তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলে আরো ভুগতে হবে পাকিস্তানকে।
বিভি/এইচজে
মন্তব্য করুন: