• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

সৌদি আরবের যে প্রস্তাব প্রত্যাখান করলো আফ্রিকার দেশ (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৪:০৪, ২৩ মার্চ ২০২৫

ফন্ট সাইজ

আফ্রিকার দারিদ্রপীড়িত দেশগুলোতে চকচকে মেঝে, সুউচ্চ মিনার ও দামী পাথর দিয়ে তৈরি এমন জাঁকজমক পূর্ণ মসজিদ দেখে হয়ত খটকা লাগে অনেকেরই। তবে এসব মসজিদের বেশিরভাগই এই দেশগুলোর নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি নয়। এসব মসজিদ নির্মাণের জন্য মোটা অঙ্কের অর্থায়ন করে থাকে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের ধনী রাষ্ট্র গুলো।   

অর্থ ও সম্পদের প্রাচুর্যতে ভরা দেশ সৌদি আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আইকনিক মসজিদ নির্মাণের জন্য অর্থায়ন করে থাকে। গরীব দেশগুলোতে অন্যান্য বিভিন্ন খাতে সহায়তার সুযোগ থাকলেও কেন মসজিদ নির্মাণ করা হয়, সেটি নিয়েও প্রশ্ন তুলে আসছেন অনেকে। এবার সেই বিতর্ককে আবারও সামনে নিয়ে আসলো পশ্চিম আফ্রিকার একটি দেশ।

সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ২০০টি মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বুরকিনা ফাসো। এর পরিবর্তে দেশটি সৌদি আরবকে অনুরোধ করেছে তারা যাতে এমন প্রকল্পে বিনিয়োগ করে, যা দেশের জনগণের জন্য আরও সহায়ক হবে। মসজিদের বদলে স্কুল, হাসপাতাল এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করলে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।

বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ট্রাওরে বলেছেন, বুরকিনা ফাসোতে ইতোমধ্যেই যথেষ্ট মসজিদ রয়েছে এবং অনেক মসজিদ পুরোপুরি ব্যবহারও করা হয় না। তার মতে, বুরকিনা ফাসোর এখন এমন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রয়োজন যা দেশটিকে আরও শক্তিশালী করবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে অগ্রগতি সাধন করবে। সৌদির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, প্রেসিডেন্ট ট্রাওরে স্পষ্ট করে দিয়েছেন তার অগ্রাধিকার হলো শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন।

প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে, ট্রাওরে জনগণের অবকাঠামো উন্নত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন যাতে দেশের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়। অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, প্রেসিডেন্ট ট্রাওরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলবের আর্থিক সহায়তাও প্রত্যাখ্যান করেছেন। এর পরিবর্তে, তিনি দেশের নিজস্ব সম্পদ ব্যবহার করতে চান। এরই মধ্যে দেশটির সকল বৈদেশিক ঋণ মিটিয়ে দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও দেশের সকল জনগণের জন্য শিক্ষাকে সম্পূর্ণ ফ্রি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ফলে সৌদির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের এ সিদ্ধান্ত তার জাতীয় উন্নয়নের বৃহত্তর পরিকল্পনারই প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন অনেকে।

অনেক বছর ধরেই আফ্রিকা জুড়ে প্রভাব বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় লক্ষ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করছে তুরস্ক, ইরান, কাতার ও সৌদি আরব সহ সম্পদশালী মুসলিম দেশগুলো। গত চার দশকে আফ্রিকার ২৫টি দেশে ১০০টিরও বেশি মসজিদ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে অর্থায়ন করেছে তুরস্ক। এমন অনেক জায়গায় চাকচিক্যতে ভরা বিশালকার এসব মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগেরই কোন নিশ্চয়তা নেই।

আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোতে ধর্মীয় সহিংসতা একটি গুরুতর সমস্যা। বিভিন্ন মতধারায় বিভক্ত মুসলিমদের মধ্যে আদর্শগত দ্বন্দ্বের জেরে জন্ম নিচ্ছে উগ্রপন্থার। ফলে এসব দেশে নিজস্ব ধর্মীয় প্রভাব বলয় তৈরি করতে ধনী মুসলিম দেশগুলো মসজিদ নির্মানে অর্থায়নের প্রতিযোগিতা করছে বলেও মনে করেন অনেকে।  

বিভি/এমএফআর

মন্তব্য করুন: