এবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাস্তায় ভয়ঙ্কর সিংকহোল (ভিডিও)
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে হঠাৎ রাস্তা ধসে সিংকহোলের সৃষ্টি হয়েছে। ২০ মিটার গভীর সে গর্তে পড়ে যাওয়া ৩০ বছর বয়সি এক মোটরসাইকেল চালককে দুর্ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিউলের গ্যাংডং এলাকায় মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওই ব্যক্তি। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ড্যাশক্যাম ভিডিওতে মাঝরাস্তায় আকস্মিকভাবেই একটি গর্ত সৃষ্টি হতে দেখা যায়। তবে দ্রুত গতির কারণে তার সামনে থাকা আরেকটি গাড়ি অল্পের জন্য রক্ষা পায়।
আকস্মিকভাবে তৈরি হওয়া এমন গর্তকে বলা হয় সিংকহোল। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সিংকহোলটি প্রায় ২০ মিটার ব্যাস, ২০ মিটার গভীর এবং ৪ মিটার প্রশস্ত। গর্তের ভেতরে ২ হাজার টন মাটি ও পানি মিশ্রিত ছিল।
পানি পাম্প করে এবং ময়লা ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ খুঁড়ে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। সতর্কতা হিসেবে কর্তৃপক্ষ নিকটবর্তী এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং কাছে থাকা একটি গ্যাস স্টেশনের সমস্ত তেলের ট্যাঙ্ক সরিয়ে ফেলে। দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ ১৮ ঘণ্টার চেষ্টায় সে ব্যক্তিকে মাটি ধসে পড়ার স্থান থেকে প্রায় ৫০ মিটার গভীরে খুঁজে পাওয়া যায়।
এরপর ৩৪ বছর বয়সী সে ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। উদ্ধারকারীরা গর্তে মৃতদেহের সাথে একটি মোবাইল ফোন এবং মোটরসাইকেলটি খুঁজে পান। তবে ওই ব্যক্তির পরিচয় এখনও প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ।
এই সিংকহোল তৈরির প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। দুর্ঘটনাস্থলের কাছে সিউল সাবওয়ে লাইন সম্প্রসারণের নির্মাণ কাজও চলছে। তবে নগর সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা সমস্ত নির্মাণ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখবে। ফলে সিংকহোলটি তৈরির পেছনে এই নির্মাণকাজকেও দায়ী করছেন অনেকে।
সিউলের কর্মকর্তারা বলছেন, গত এক দশকে শুধু এই শহরেই ২২৩টি সিংকহোল দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্বল অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা, পুরাতন বা ক্ষতিগ্রস্ত পাইপ, দীর্ঘমেয়াদি ভূমিধস এবং খননকাজের কারণে এগুলো ঘটেছে বলেও জানিয়েছেন তারা। এর আগে জানুয়ারিতে, জাপানের ইয়াশিও শহরের একটি জংশনে সিঙ্কহোলে গাড়ি পড়ে যাওয়ার পর এক ট্রাক চালক নিখোঁজ হন। অপরদিকে গতবছর আগস্টে, কুয়ালালামপুর শহরের কেন্দ্রে একটি ফুটপাথের সিঙ্কহোলে এক মহিলা নিখোঁজ হন।
সিংকহোল তৈরির কারণগুলির মধ্যে একটি হল মাটির নিচে অবস্থিত চুনাপাথর বা খড়ির মত পাথর ভেঙে যাওয়া। এগুলো মাটির নিচে স্তরে স্তরে সজ্জিত থাকে। সিংকহোল তৈরির প্রক্রিয়াটি মাঝে মাঝে এতটাই ধীরে ঘটে যে সময়ের সাথে সাথে গর্তটিও অনেক বড় হয়ে যায়। তবে মানুষের কার্যকলাপও যে সিংকহোল গঠনকে ত্বরান্বিত করে তা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই বলে মতামত গবেষকদের।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: