ইরানের পর, ট্রাম্পকে হত্যার পক্ষে খোদ মার্কিনীরাও!

কেবল বহির্বিশ্বেই নয়, দেশের ভেতরেও প্রাণনাশের চরম হুমকিতে আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি সপ্তাহেই ইরানি চরমপন্থীদের মুখপত্র কেহান ইন্টারন্যাশনালে ট্রাম্পকে মাথায় গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এছাড়া দেশের ভেতরেও নানা সময় তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
এরই মাঝে ভয়াবহ বিস্ফোরক এক তথ্য সামনে এনেছে উগ্র মতাদর্শ ও মতাদর্শবাদী হুমকি এবং গুজব ও অপতথ্য নিয়ে কাজ করা মার্কিন গবেষণা সংস্থা ‘নেটওয়ার্ক কনটেইজেন রিসার্চ ইনস্টিটিউট’- এনসিআরআই। সাম্প্রতিক এক জরিপের ভিত্তিতে তারা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ ট্রাম্পকে হত্যা সমর্থন করে।
সোমবার প্রকাশিত ওই জরিপে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৮ দশমিক ৫ শতাংশ মার্কিন নাগরিক আংশিক বা পুরোপুরিভাবে ট্রাম্পকে গুপ্তহত্যার বিষয়টি সমর্থন করে। অন্যদিকে বাম মতাদর্শীদের মধ্যে ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ট্রাম্পকে হত্যার পক্ষে মত দেয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক উগ্রপন্থা ও সহিংসতা ভয়াবহ মাত্রায় বাড়ছে জরিপের এই ফল সেই চিত্রই তুলে ধরেছে। এটি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য ব্যাপক মাত্রায় উদ্বেগজনক। আগামীতে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সংঘাত আরো বাড়বে, এই আশঙ্কা অমূলক নয়, বলছেন গবেষকরা।
এনসিআরআই বলছে, গুপ্তহত্যার সংস্কৃতির পক্ষে সহমত পোষণকারীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ ধরনের কট্টরপন্থা ছড়ানোর ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রভাব বিস্তার করছে সামাজিক মাধ্যমগুলো। এসব মাধ্যমে প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় ব্যক্তিদের গুপ্তহত্যার সপক্ষে সম্মতি উৎপাদনকারী মিম ও পোস্টের সংখ্যাও বাড়ছে। সেগুলোতে গুপ্তহত্যাকে অতিরঞ্জিত করে এক ধরনের মাহাত্ম্য দেয়ারও চেষ্টা চলছে।
এদিকে জরিপের ফলে আরো দেখা যায়, ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ ট্রাম্প প্রশাসনে থাকা ধনকুবের ইলন মাস্কের গুপ্তহত্যার পক্ষে। বামপন্থী মতাদর্শীদের মধ্যে এই হার ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যদিকে কিছুদিন আগে মাস্কের গাড়ি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান টেসলার শো-রুমে হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতি সমর্থন জানায় প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ। বাম মতাদর্শীদের মধ্যে এই হার প্রায় ৫৭ শতাংশ।
এই জরিপের ফলাফলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাস্ক। দেশে কট্টরপন্থা বাড়ার জন্য বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে দোষ দিয়েছেন তিনি। তারাই বামপন্থীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। ওই দলটিকে সংঘাত সৃষ্টিকারী বলে অভিহিত করেন মাস্ক। এছাড়া মাস্ক বলেন, টেসলার শো-রুমে অগ্নিসংযোগের ঘটনা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
এদিকে কট্টরপন্থীদের প্রকোপ বেড়ে চলায় ট্রাম্পের নিরাপত্তা নিয়েও বাড়তি ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। গত বছর জুলাইতে পেনসিলভেনিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় তাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে এক আততায়ী। সে সময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি। এছাড়া মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে, গত বছর বেশ কয়েকবার ইরানের নিয়োগ দেয়া গুপ্তঘাতক দল ট্রাম্পকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়।
বিভি/এইচজে
মন্তব্য করুন: