ভারতকে তুরস্কের সতর্কতা, পাকিস্তানে হামলা হবে ‘রেড লাইন অতিক্রম’!

দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে প্রভাব বাড়াতে বিশেষভাবে তৎপর হয়ে উঠেছে তুরস্ক। এ লক্ষ্যে পাকিস্তানের সাথে ক্রমশ সম্পর্ক গভীর করছে তারা। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মাঝে তাদের এই তৎপরতা বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি যুদ্ধপরিস্থিতির মাঝে পাকিস্তানকে সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করছে তুরস্ক। যদিও এমন দাবি নাকচ করেছে আঙ্কারা। এরই মাঝে প্রতিরক্ষা ও সামরিক খাতে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার লক্ষ্যে তুরস্কের উচ্চ পর্যায়ের একটি সামরিক-গোয়েন্দা প্রতিনিধি দলের ইসলামাবাদ সফর নতুন করে দৃষ্টি কেড়েছে। প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন তুরস্কের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানও। সব মিলিয়ে যুদ্ধপরিস্থিতিতে তুরস্ক পাকিস্তানকে কেবল অস্ত্র নয়, গোয়েন্দা সহযোগিতাও দেবে বলে ধারণা ভারতীয় বিশ্লেষকদের।
এদিকে এরই মাঝে পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে না জড়াতে ভারতকে কঠোর বার্তা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল ‘এ-কে পার্টি’র অন্যতম নেতা, পার্লামেন্ট মেম্বার আলি শাহীন। প্রতীকী অর্থে পাকিস্তানকে নিজ দেশের বৃহত্তর সীমান্ত চৌকি উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, তুরস্কের নিরাপত্তা বলয় শুরু হয় পাকিস্তান থেকে। ফলে পাকিস্তানে ভারতের হামলাকে রেড লাইন অতিক্রম হিসেবে বিবেচনা করা হবে। সীমা লঙ্ঘন করলে আঙ্কারা তা মেনে নেবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
সার্বিক প্রেক্ষাপটে যুদ্ধ বেঁধে গেলে তুরস্ক পাকিস্তানের হয়ে লড়াইয়ে অংশ নেবে কিনা, তা নিয়ে চলছে নানান জল্পনা। ভারতীয় বিশ্লেষকদের মতে, দিল্লির বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধে আঙ্কারা ইসলামাবাদকে সরাসরি সমর্থন দিচ্ছে, প্রতিনিধিত্বশীলদের বিভিন্ন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে তাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এতে করে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা আরো বাড়ছে বলে মনে করছেন তারা।
এর আগে ২৮ এপ্রিল এক প্রতিবেদনে প্রভাবশালী ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ায় দাবি করা হয়, ২৭ এপ্রিল তুরস্কের বিমান বাহিনীর একটি হারকিউলিস-ওয়ানহান্ড্রেড-থার্টি কার্গোবিমান করাচিতে অবতরণ করে। তাতে ছিল নানা রকম সামরিক সরঞ্জাম।
এছাড়া ইসলামাবাদের একটি সামরিক ঘাঁটিতে তুরস্কের আরো ছয়টি ওয়ানহান্ড্রেড-থার্টি কার্গোবিমান পৌঁছানোর কথা জানায় টাইমস অব ইন্ডিয়া। সেগুলোতেও সামরিক সরঞ্জাম ছিল বলে দাবি তাদের।
তবে আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতিতে এ ধরনের দাবিকে অমূলক বলে উল্লেখ করেছে তুরস্ক। নিছক জ্বালানি নেয়ার জন্য একটি হারকিউলিস-ওয়ানহান্ড্রেড-থার্টি বিমান পাকিস্তানে অবতরণ করেছিল বলে জানিয়েছে তারা।
এদিকে ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে চলমান উত্তেজনা নিয়ে মুখ খুলেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তুরস্ক বরাবরের মতোই পাকিস্তানি জনগণের প্রতি সহানুভূতিশীল। তার দেশ পাকিস্তানের সাথে প্রতিরক্ষা, সামরিকসহ বিভিন্ন খাতে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী। তবে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শান্তির প্রশ্নে কোথাও নতুন করে কোনো সংঘাত জন্ম নিক, আঙ্কারা তা চায় না বলে জানিয়েছেন তিনি। সে জায়গা থেকে ভারত ও পাকিস্তান চলমান উত্তেজনা কমিয়ে সংযত আচরণ করবে, এটিই প্রত্যাশা করেন তিনি। এ ব্যাপারে তুরস্ক ভূমিকা রাখতে আগ্রহী বলেও জানান এরদোয়ান।
বিভি/এইচজে
মন্তব্য করুন: