ইসরাইল এবার টের পাচ্ছে মৃত্যু আতঙ্ক কাকে বলে!

ছবি: ইসরাইলে দাবানল
গাজাবাসীর জন্য সাক্ষাৎ যমদূতের ভূমিকায় থাকা ইসরাইল এবার টের পাচ্ছে মৃত্যু আতঙ্ক কাকে বলে। দেশটিতে স্মরণকালের ভয়াবহ দাবানলে একদিনেই পুড়ে ছাই হয়েছে প্রায় তিন হাজার একর এলাকা। সহায় সম্বল ছেড়ে পালাচ্ছেন ইসরাইলিরা। তীব্র বাতাসে প্রায় নিয়ন্ত্রণহীন দাবানল জেরুজালেম থেকে ধেয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়ার চক্রান্তকারীদের ঘাঁটি তেল আবিবের দিকে।
আগুনের সর্বগ্রাসী লেলিহান শিখায় পুড়ে অঙ্গার হওয়া বা শ্বাস নিতে না পারার নিদারুণ যন্ত্রণায় করুণ মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে জীবন নিয়ে পালাচ্ছে ইসরাইলিরা। নিয়ন্ত্রণহীন দাবানল পবিত্র নগরী জেরুজালেম থেকে এগুচ্ছে ঝলমলে নগরী রাজধানী তেল আবিবের দিকে। আগুনের উৎপত্তি দখলদার সেনার গোলাবর্ষণ বা যুদ্ধবিমানের হামলায় নয়। যেমনটা খোদ ইসরাইল-ই করে আসছে ফিলিস্তিনের গাজায়; পশ্চিম তীরে আর লেবাননে, সিরিয়ায়। বলা হচ্ছে, ইসরাইলে স্মরণকালের ভয়াবহ দাবানল এটি। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে অব্যাহত গোলাবর্ষণে নারী-শিশুসহ নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের পুড়িয়ে মেরে নিজেদের অপ্রতিরোধ্য মনে করা ইসরাইলের এই দশা কেন?
নাজুক পরিস্থিতিতে বন্ধ করে দেওয়া হয় জেরুজালেম থেকে তেলআবিবগামী মহাসড়ক রুট ওয়ান ও রুট থ্রী। জিউস ন্যাশনাল ফান্ড জানিয়েছে, বুধবার (৩০ এপ্রিল) ২৪ ঘন্টায় পুড়েছে ২ হাজার ৮৯১ একর এলাকা। পুড়ছে পশ্চিম জেরুজালেম থেকে তেলআবিব পর্যন্ত বিস্তৃত ইশতাওল বনাঞ্চলে। খালি করা হয়েছে অন্তত ১০টি জনবসতিপূর্ণ এলাকা। ফায়ার সার্ভিসের ১৬০টির বেশি টিম আর বিমান ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করে দাবানল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। বেকায়দায় পড়ে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে ইসরাইল। আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহার করা বিমান চাওয়া হয়েছে গ্রিস, ইটালি ও ক্রোয়েশিয়ার কাছে। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় সাহায্যকরী দল, বিমান ও উদ্ধার সরঞ্জাম পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে ইউক্রেন, ফ্রান্স, রোমানিয়া, স্পেন, ক্রোয়েশিয়া আর ইতালি ।
দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনীকে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ্। পহেলা মে ইসরাইলের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকালে বাসার বাইরে আগুন জালানো, খাদ্যদ্রব্য গ্রিল করায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুলিশ। এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর ছেলে ইয়ার নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজা অভিযান বন্ধের দাবিতে ইসরাইলের ভেতরে বিক্ষোভকারীদের দায়ী করেছেন। তার ধারণা, আরবরা জড়িত। সহায়তা দিয়েছে সরকার বিরোধী বামপন্থিরা। সামাজিক মাধ্যমে তার এই মন্তব্য পোস্ট করার দিনই দাবানলের সূত্রপাতকারী সন্দেহে পূর্ব জেরুজালেমের উম তুবা থেকে ৫৫ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি অধিবাসীকে আটক করা হয়েছে। তার কাছ থেকে লাইটার, তুলা ও দাহ্য দ্রব্য জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুষ্ক আবহাওয়া আর বাতাসের তীব্রতার কারণে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হবে না বলে মনে করছে ইসরাইলের অগ্নি নিরাপত্তা বিভাগ। গত সপ্তাহে শ্যারোনসহ ইসরাইলের মধ্যাঞ্চলে দাবানলে পুড়ে ছাই হয় হাজার হাজার একর এলাকা। আয়রন ডোম, সর্বাধুনিক অস্ত্র আর নিরাপত্তা সরঞ্জামে সুসজ্জিত ইসরাইলের ভেতরে নিয়ন্ত্রণহীন এই দাবানলকে সৃষ্টিকর্তার গজব, পাপের ফসল আর ফিলিস্তিনিদের অভিশাপ বলছেন নেটিজেনরা। সূত্র: বিসিসি
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: