ওয়াশিংটন পোস্টের বিশ্লেষণ
বড় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে ভারত-পাকিস্তান! (ভিডিও)
ভারতের সাথে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই বুধবার পার্লামেন্টে মিলিত হন পাকিস্তানের আইপ্রণেতারা। ন্যাশনাল এসেম্বলির এই অধিবেশনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে প্রশংসায় ভাসান খোদ প্রধানমন্ত্রী। এক পর্যায়ে পাকিস্তান জিন্দাবাদ ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো পার্লামেন্ট।
ভারতের রাতের আঁধারে চালানো বিমান হামলার ‘উচিত জবাব’ দিয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, এমনটাই দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্যমতে, ভারত ৮০টি যুদ্ধবিমান পাঠালেও কেবল পাঁচটি বিমানই হামলায় অংশ নেয় এবং তাদের সবকটিই ভূপাতিত করেছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী।
শেহবাজ বলেন, ''গত কয়েকদিন ধরে, আমরা প্রতিদিনই খবর পেয়ে আসছি যে ভারতীয় বিমান এসে পাকিস্তানে আক্রমণ করবে। আমি আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষকে অভিনন্দন জানাতে চাই। আল্লাহর রহমতে, আমাদের বাহিনী ২৪ ঘন্টাই প্রস্তুত ছিল এবং অপেক্ষায় ছিলো কখন শত্রুপক্ষের বিমান উড়ে যাবে আর সাথে সাথেই আমরা তাদের সমুদ্রে নিক্ষেপ করবো। পাকিস্তান বিমান বাহিনী তাদের ভূপাতিত করা ৫টি বিমানের পরিবর্তে কমপক্ষে ১০টি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করতে পারত, কিন্তু তারা সংযম দেখিয়েছে।''
অন্যদিকে পিপিপি নেতা বিলাওয়াল ভুট্টো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সত্য ও ন্যায়ের ইতিহাস পাকিস্তানের পাশে। সাহস থাকলে ভারত খোলাখুলি যুদ্ধ ঘোষণা করে মাঠে নামতো। কিন্তু তারা কাপুরুষের মতো রাতে শিশুদের বুকে গুলি চালিয়েছে।
পাকিস্তানের এমন আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর সাম্প্রতিক উত্তেজনা ক্রমেই বড় যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। ফলে শুধু ভারত-পাকিস্তান নয়, পুরো দক্ষিণ-এশিয়া পড়তে যাচ্ছে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে। যার পরিণতি হবে কল্পনাতীত।
ভারত ও পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। ফলে কাশ্মীর নিয়ে তাদের বিরোধ যখনই তীব্র হয়, তখন এটি বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়িয়ে তোলে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, পাকিস্তান ও ভারতের প্রত্যেকের কাছে প্রায় ১৭০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। দুই দেশের কেউই জাতিসংঘের পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কূটনীতি ও সমর বিশ্লেষকরা বলছেন,পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশেরই যুদ্ধে ব্যাপক প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে পড়লে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য ও খাদ্যঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে দুই দেশের নেতারা এখনই সংযত না হলে চড়া মূল্য দিতে হবে পুরো দক্ষিণ এশিয়াকে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: