এবার পাকিস্তানকে মারাত্মক বন্যার ঝুঁকিতে ফেললো ভারত (ভিডিও)
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি প্রাণঘাতী সংঘাতের পর শনিবার বিকেলে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশ। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গভীরে জমে থাকা সংকট এখনও কাটেনি। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ঠিকই, কিন্তু ভারত সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত রাখার বিষয়ে এখনও অনড়। উল্টো চেনাব নদীর পানি ছেড়ে দিয়ে পাকিস্তানকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে ভারত।
যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই গত সোমবার ভারত আকস্মিকভাবে চেনাব নদীর পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেয়। ফলে নদীটির পাকিস্তান অংশে পানিপ্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তবে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে টানা বৃষ্টির কারণে পানি বেড়ে গেলে গত ৮ই মে চেনাব নদীর বাগলিহার ও সালাল বাঁধের তিনটি পয়েণ্টের গেট খুলে দেয় ভারত সরকার।
সরকারিভাবে এখনো পর্যন্ত বাঁধের গেট খোলার প্রকৃত কারণ জানানো হয়নি। গেট খোলার ফলে পাকিস্তানে চেনাব নদীর শুকিয়ে যাওয়া এলাকাগুলোতে আবারও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীর নিচু অঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানি প্রশাসন ইতিমধ্যেই কিছু এলাকায় বন্যার সতর্কতা জারি করেছে। নদীর তীরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে বন্যা সতর্কতা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।
চেনাব নদী ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর হয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং সুতলজ নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে পান্জনদ গঠন করে। যা পরে সিন্ধু নদীতে গিয়ে মিশে যায়। সিন্ধু পানি চুক্তি অনুসারে নদীর প্রবাহে বড় ধরনের হস্তক্ষেপের আগে পাকিস্তানকে অবহিত করতে বাধ্য ছিল ভারত। তবে, চুক্তি স্থগিত হয়ে যাওয়ায় এ বিষয়ে পাকিস্তানকে কিছুই জানায় নি ভারত সরকার।
পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি হলেও ১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতসহ কূটনৈতিক পদক্ষেপগুলো নিয়ে ভারতের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হয়নি। চাষাবাদের প্রায় ৮০ শতাংশ পানির জন্য সিন্ধু পানিচুক্তির ওপর নির্ভরশীল পাকিস্তান। ফলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও পেহেলগাম হামলার জেরে দুই দেশের মধ্যে যে কূটনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছিল, তার সমাধান সহজে হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
যুদ্ধবিরতি স্বস্তি এনেছে, কিন্তু পানিচুক্তির মতো দীর্ঘস্থায়ী সংকটগুলোতে সমাধান না হলে, এই শান্তি বেশিদিন টিকবে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাই আসন্ন দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি পানিবণ্টন ইস্যুতেও ন্যায্য সমাধান খুঁজে পাওয়া এখন সময়ের দাবি।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: