ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে প্রাণভয়ে পালালেন বিদেশী কূটনীতিকরা (ভিডিও)
জেনিনের শরণার্থীশিবিরে সফরের সময় এবার কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে গুলি চালালো বর্বর ইসরাইলি সেনারা। প্রায় ৩০ জন কূটনীতিকের একটি দল জেনিনের মানবিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার জন্য একটি সরকারী মিশনে গিয়েছিলেন। আর সেখানেই অতর্কিত এই হামলার শিকার হলেন তারা।
সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ছে ইসরাইলি সেনারা। আর আতঙ্কিত কূটনীতিকরা দৌড়ে পালাচ্ছেন, প্রাণভয়ে যে যেদিকে পারেন আশ্রয় নিচ্ছেন।
ভিডিওতে দুজন ইসরাইলি সেনাকে একদম কাছাকাছি দাঁড়িয়ে কূটনীতিকদের দিকে রাইফেল তাক করে থাকতে দেখা গেছে। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা যখন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তাদের কাছাকাছি গুলির শব্দ শোনা যায়। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ২১ মে রাতে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এমন কান্ডে রীতিমত হতবাক হয়ে যান বিশ্বনেতারা। প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে কূটনীতিকও নিরাপদ নন, সেখানে সাধারণ মানুষ কতটা সুরক্ষিত? ঘটনাটিকে "অগ্রহণযোগ্য" বলে অভিহিত করেছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর। ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছে ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম ও পর্তুগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়া এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইতালি, স্পেন, কানাডা, মেক্সিকো, মিশর ও তুরস্কসহ আরও অনেক দেশ।
তবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, কূটনীতিকরা পূর্বনির্ধারিত রুট থেকে সরে গিয়ে একটি ‘নিষিদ্ধ এলাকায়’ প্রবেশ করেছিলেন, যার জেরেই তাদের সতর্ক করতে গুলি চালানো হয়। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি ‘সতর্কতামূলক গুলি’ ছিল এবং কেউ আহত হয়নি। পশ্চিম তীরের জন্য নিযুক্ত ইসরাইলি সামরিক প্রশাসনের প্রধান জানিয়েছেন, তারা ঘটনাটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত সম্পর্কে কূটনীতিকদের অবহিত করবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরাইলের কূটনৈতিক ব্যর্থতা স্পষ্ট। ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ ডানপন্থী নেতাদের সমর্থন কমে যাওয়ার পাশাপাশি, ইউরোপীয় দেশগুলোও কড়া প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে। দিন কয়েক আগেই ফ্রান্স, ব্রিটেন ও কানাডা এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এমনকি জার্মানি ও চেক প্রজাতন্ত্রও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ইসরাইল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে পতনের পথে রয়েছে বলে মনে করেছেন খোদ ইহুদি বিশ্লেষকরাই। তাদের মতে, নেতানিয়াহুর স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ইসরাইল আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে এবং পুরোনো মিত্রদের সমর্থনও হারাচ্ছে।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: