রাশিয়ার কাছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ও সমরাস্ত্র চাইছে ইরান!

পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে ওয়াশিংটন ও তেহরানের চলমান আলোচনা ব্যর্থ হলে ইরানে ইসরাইলি হামলার আশঙ্কা বাড়বে। এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে না পেলেও ইরানের পরমাণু স্থাপনায় একাই হামলা চালাতে পারে ইসরাইল। সব মিলিয়ে তেহরান-তেল আবিব উত্তেজনা যখন চরমে, সেই মুহূর্তে প্রকাশ্যে রাশিয়ার কাছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ও সমরাস্ত্র চাইছে ইরানি আইনপ্রণেতাদের একাংশ।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সামরিক, প্রযুক্তি, অর্থনীতিসহ বিভিন্ন খাতে ঘনিষ্ঠ আদান-প্রদান নিশ্চিতে একটি কৌশলগত অংশীদারীত্ব চুক্তি করে রাশিয়া ও ইরান। ২১ মে ইরানের পার্লামেন্ট ওই চুক্তির অনুমোদন দেয়। এর আগে রুশ পার্লামেন্টেও অনুমোদন পায় এটি। চুক্তিটি অনুমোদন পাওয়ার পরপরই মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক ভারসাম্য রক্ষার লক্ষ্যে রাশিয়ার কাছে সবচেয়ে নতুন প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান ও অস্ত্রশস্ত্র চেয়েছেন ইরানের আইনপ্রণেতা হামিদ রেজাই।
হামিদ রেজাই বলেন, ভূরাজনীতি, নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও কূটনীতির প্রশ্নে রাশিয়া ও ইরানের জোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশেরই শত্রু ন্যাটো ও সন্ত্রাসীরা। রাশিয়া ইরানকে বিমান ও নৌ বাহিনীর জন্য উন্নত মানের সমরাস্ত্র সরবরাহ করতে পারে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া ও সামরিক প্রযুক্তি আদানপ্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন এ আইনপ্রণেতা।
এদিকে রেজাইর রুশ যুদ্ধবিমান ও অস্ত্রশস্ত্র চাওয়ার বিষয়টিকে মোটেই হালকা ভাবে নিচ্ছেন না রাজনৈতিক ও সামরিক বিশ্লেষকরা। অনেকের মতে, ইসরাইল হামলা চালালে পাল্টা হামলায় চরম জবাব দিতেই রুশ যুদ্ধবিমান চাইছে তেহরান। এ নিয়ে মস্কোর অবস্থান কী দাঁড়ায় এখন সেটিই দেখার বিষয়।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পঞ্চম দফার আলোচনায় বসার আগে ইরানের পার্লামেন্ট বলছে, পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে বিধান অনুসারে যেসব অধিকার প্রাপ্য, তাতে কোনো ছাড় দেবে না তারা, বিশেষ করে ইউরেনিয়াম পরিশোধনের ক্ষেত্রে। ইরান কোনো পর্যায়েই ইউরেনিয়াম পরিশোধন করতে পারবে না, সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছাতে মার্কিন সমঝোতাকারী স্টিভ উইটকফ ও স্টেইট সেক্রেটারি মার্কো রুবিওর এমন বক্তব্যের পরপরই ইরানের পার্লামেন্ট এই অবস্থান জানালো।
সার্বিক প্রেক্ষাপটে চলমান এই আলোচনা শেষমেশ সফল হবে নাকি ভেস্তে যাবে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন দোলাচল। এই আলোচনা ভেস্তে গেলে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে, ধারাবাহিকভাবে এমন হুমকি দিয়ে চলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ট্রাম্প একদিকে বলছেন শান্তির কথা, আরেকদিকে বলছেন যুদ্ধের কথা। কিন্তু তেহরান কখনোই কোনো চাপের কাছেই নতি স্বীকার করবে না।
বিভি/এইচজে
মন্তব্য করুন: